অনলাইন ডেস্ক : ‘সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে’- এমন কথা শুনে আসছি জন্মের পর থেকেই। নতুন করে যোগ হয়েছেÑ সংসারে সুখ আনতে পুরুষের ভূমিকাও আছে অনেক। স্ত্রী ভালো হলো, স্বামী ভালো না- তা হলে সেই সংসারে সুখ বলে কিছু থাকবে না। এ তো সব মানুষের ক্ষেত্রেই প্রযোজ্য। ইদানীং শোবিজ অঙ্গনে সংসার ভাঙার হিড়িক পড়েছে। যেন ভাঙাগড়ার খেলায় মেতেছেন কেউ কেউ। সম্প্রতি বেশকিছু ঘটনার কারণে তারকাদের জীবনও যেন একেকটা সিনেমা-নাটকে পরিণত হয়েছে।
গত বছর শাকিব খান-অপু বিশ্বাসের বিয়ের খবর জানার পরই ভেঙে যায়। বিয়ের ৯ বছর পর তারা সেই খবর প্রকাশ করেন। তার পর অপু বিশ্বাস অনেকটা বাধ্য হয়েই মিডিয়ায় গোপন খবর ফাঁস করে দেন। বিয়ে করে একটি ছেলের বাবা হওয়ার পরও শাকিব খান গোপন করে গেছেন।
তারকাখ্যাতিতে শাকিবের অবস্থান নিয়ে কারো বিতর্ক নেই। কিন্তু এ কেমন তারকা? যিনি নিজের জীবন নিয়ে ছেলেখেলা খেলেছেন। আবার একটি অবুঝ শিশুর জীবন নিয়েও খেলছেন। এখন আর শাকিব-অপুর সংসার নেই। কিন্তু তাদের দুজনের সন্তান আব্রাম খান জয় আছে। একদিন সে সবকিছু বুঝবে। তাকে নিয়ে বাবা-মার এমন কাদা ছোড়াছুড়ির কথা শুনবে। তখন কেমন হবে আব্রামের মানসিকতা। এসব কি ভেবেছেন শাকিব খান? হয়তো ভাবেন। নিজের ক্যারিয়ারের জন্য সংসারটাই ভেঙে দিলেন। সবকিছু গোপন করে দীর্ঘ এত বছর সংসার করার মানেই হচ্ছে এর আড়ালে ছিল শুধুই ভালোবাসা। যে ভালোবাসার জন্য একটি মায়ার বাঁধনে জড়িয়েছিলেন তারা। কিন্তু কিসের স্বার্থে সেই বাঁধন ছিঁড়ে গেল? এমন প্রশ্নের উত্তর কেউ দিতে পারলেও অনেকে দেন না।
অন্যদিকে কয়েকদিন ধরে খুবই আলোচিত হচ্ছে শ্রাবন্তীর ঘর ভাঙার খবরটি। যাকে ভালোবেসে নিজের ক্যারিয়ারকে জলাঞ্জলি দিয়ে ঘর বেঁধেছিলেন। ভালোবাসার সেই ঘর আলোকিত করে আসে দুটি কন্যাসন্তান। মায়ার বাঁধনে জড়িয়ে সুদূর আমেরিকায় চলে যান তারা। তার পরও সেই বাঁধন টিকতে পারছে না। ইতোমধ্যে তালাকের নোটিশ পাঠানো হয়েছে শ্রাবন্তীকে। আর মেয়েদের জন্য নিজের সংসারটাকে টিকিয়ে রাখার আপ্রাণ চেষ্টা করে যাচ্ছেন। স্বামী খোরশেদ আলম হাজারো অভিযোগ তুলেছেন শ্রাবন্তীর বিরুদ্ধে। থাক না হাজার অভিযোগ, দুটি মেয়ের নিষ্পাপ মুখও কি পারছে না সেই ঘরকে টিকিয়ে রাখতে? হয়তো পারবে। আবার নাও টিকতে পারে।
কিছুদিন আগে অভিনেত্রী চাঁদনী ও সংগীতশিল্পী বাপ্পা মজুমদারের সংসারও ভেঙে গেল। নিজেরা প্রেম করে বিয়ে করেন। সুখেই কাটছিল সংসার। সেখানেও হাজির ভাঙার সুর। কারণ বাপ্পা এবার প্রেমে পড়েছেন মডেল ও অভিনেত্রী তানিয়া হুসাইনের। এক প্রেম নিয়ে গেল আরেক প্রেম থেকে অনেক দূরে। অবশেষে চাঁদনীকে কাঁদিয়ে বিদায় দিলেন বাপ্পা। নতুন করে ঘরে আনলেন তানিয়াকে। কিসের মায়ায় সাঙ্গ হলো চাঁদনীর ভালোবাসা? এর উত্তর হয়তো বাপ্পা দিতে পারতেন। কিন্তু উত্তর না দিয়ে দুজনেই মেনে নিয়েছেন দুজনার নতুন পথকে।
লাক্সতারকা বাঁধন নিজের সুখ খুঁজে নিতে বিয়ে করেছিলেন তার চেয়ে ২০ বছরের বেশি বয়সী মাশরুর সিদ্দীকি সনেটকে। ভালোবেসে ঘর বেঁধেছিলেন। কিন্তু সেই ঘরও টেকেনি। একটি ফুটফুটে মেয়ে আছে। আবার এই মেয়েকে নিজের কাছে রাখার জন্য আইনি লড়াই করেছেন বাঁধন। সেই লড়াইয়ে জিতেও গেছেন। এখন মেয়ে তার কাছেই থাকে। কিন্তু তার মায়ার বাঁধন ছিন্ন করে চলে গেছেন সনেট। কন্যাসন্তানের মিষ্টি মুখখানিও টলাতে পারেনি সনেটকে। বাঁধন এখন মেয়েকে নিয়েই সুখ খুঁজে বেড়াচ্ছেন। এ তো গেল কয়েকটি ঘটনা। আরও কতই না শুনতে হবে এমন ভাঙাগড়ার গল্প। যেসব সিনেমা-নাটকে অভিনয় করে মানুষকে সচেতন করতে চান তারা। সেই মানুষগুলোই বাস্তবেও ভাঙাগড়ায় ব্যস্ত। এসব তারকার ভক্তরা কষ্ট পান। নিজেদের আইডল ভাবেন যাদের, তারাই যদি জীবন নিয়ে এমন খেলা খেলেন, তা হলে মানুষ তারকাদের জীবন নিয়ে কী ভাববেন? এত মায়ার বাঁধনে জড়িয়েও একটু ঝড়ো হাওয়ায় ছিঁড়ে যাওয়ার সম্ভাবনাকে পাশ কাটিয়ে চলতে পারেন না তারকারা? কেন পারেন না? কেন তাদের হৃদয় এত পাষাণ?