বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে কারাগারে রেখে বাংলাদেশে মুজিববর্ষসহ কোনো বর্ষ পালনই সফল হবে না বলে মন্তব্য করেছেন দলটির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।
শনিবার বেলা ১১টার দিকে ঢাকা-১০ আসনের উপনির্বাচনে ধানের শীষের প্রার্থী শেখ রবিউল আলমসহ নেতাকর্মীদের নিয়ে রাজধানীর চন্দ্রিমা উদ্যানে বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের কবরে পুষ্পার্ঘ্য অর্পণের পর সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি এ মন্তব্য করেন।
খালেদা জিয়া যখন কারাগারে তখন মুজিব জন্মশতবর্ষ কতটুকু সফল হবে বলে মনে করেন- সাংবাদিকদের এই প্রশ্নের জবাবে বিএনপি মহাসচিব বলেন, ‘এটা তো শুধু সাফল্যেরই প্রশ্ন না। এটা একটা প্রহসন। কারণ খালেদা জিয়া গণতন্ত্রের জন্য সারাজীবন সংগ্রাম করেছেন, লড়াই করেছেন, ১৯৭১ সালেও স্বাধীনতার জন্যেই কারাগারে ছিলেন পাকিস্তান বাহিনীর হাতে। তাকে গণতন্ত্রের জন্য দীর্ঘ ৯ বছর সংগ্রাম করতে হয়েছে, লড়াই করতে হয়েছে। গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার জন্য তিনি এখনও কারাগারে আছেন। তাই খালেদা জিয়াকে কারাগারে আটক রেখে কোনো বর্ষই এখানে সফল হবে না।’
ভারতের দিল্লিতে সাম্প্রদায়িক সহিংসতার পরিপ্রেক্ষিতে মুজিব জন্মশতবর্ষ উপলক্ষে ১৭ মার্চ ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির ঢাকা সফরের প্রতিবাদে গত কয়েকদিন ধরে দেশের ইসলামী দলগুলো বিক্ষোভ করছে। এই বিক্ষোভকে কীভাবে দেখছেন- জানতে চাইলে মির্জা ফখরুল বলেন, ‘আমরা তো আমাদের বক্তব্য আগে বলেছি। খুব পরিষ্কার করে বলেছি যে, বর্তমান বাংলাদেশে যে অবস্থা, বিশেষ করে ভারতের এনআরসি-সিএএর পর এরই মধ্যে যে দাঙ্গা হয়ে গেল তার যে প্রভাব পড়েছে সেই প্রভাবে ওনার (নরেন্দ্র মোদি) এখানে আসাটা কতটুকু সমীচীন, শোভনীয় এটা তারাই বিচার করবেন।’
বিএনপি নির্বাচন নিয়ে সিরিয়াস নয়, নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতেই তারা উপনির্বাচনে অংশ নিচ্ছে- আওয়ামী লীগের এমন অভিযোগ প্রসঙ্গে জানতে চাইলে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আওয়ামী লীগ তো কত কথাই বলবে। জনগণের সমর্থন ছাড়া, ম্যান্ডেটবিহীন অবস্থায় শুধু অস্ত্র দিয়ে ক্ষমতা দখল করে বসে আছে। স্বাভাবিকভাবে তারা এই ধরনের কথা-বার্তাই বলবে, যাতে করে জনগণকে বিভ্রান্ত করার সুযোগ সৃষ্টি করতে পারে। কিন্তু সেটাতে তারা সক্ষম হয়নি। আমরা এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি- গণতান্ত্রিক যে রীতি রয়েছে নির্বাচনের মধ্য দিয়েই ক্ষমতার পরিবর্তনের, আমরা সেটাতে বিশ্বাস করি বলেই, আমরা একটা লিবারেল ডেমোক্রেটিক পার্টি বলেই এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি। আমরা আগেও বলেছি, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধার করতে এবং গণতন্ত্রের মাতা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়াকে মুক্ত করতে আন্দোলনের অংশ হিসেবেই আমরা এই নির্বাচনে অংশ নিচ্ছি।’
এ সময়ে দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু, যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল, প্রচার সম্পাদক শহিদউদ্দিন চৌধুরী এ্যানি, মহিলা দলের যুগ্ম সম্পাদক হেলেন জেরিন খান, ঢাকা দক্ষিণ মহানগর সাধারণ সম্পাদক কাজী আবুল বাশার, সহ-সভাপতি নবী উল্লাহ নবী প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।