এসকে আব্দুল্লা, গুরুদাসপুর (নাটোর) প্রতিনিধি :
নাটোরের গুরুদাসপুরের মশিন্দা ইউনিয়নের বামনকোলা গ্রামে বসবাসকারী অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত মোঃ ওসমান ফকির। তার বয়স ৫২ বছর। অর্থের অভাবে চিকিৎসা করাতে পারছে না। সংসার চলে না চিকিৎসা করাবে কী করে। চারজনের সংসারের বোঝাই চালানো দায়। ভিক্ষাবৃত্তি করে কোনমতে জীবন চলে তাদের। স্ত্রী ও দুই ছেলে স্বপন ও সোহেলকে নিয়ে মানবেতর জীবনযাবন করছেন তিনি। বড় ছেলেও প্রতিবন্ধী। সেও ভিক্ষা করতে শুরু করেছে। সম্প্রতি স্বপন রাস্তায় দাঁড়িয়ে থাকলে দ্রুতগামী একটি লছিমন এসে ধাক্কা দেয় তাকে। এতে তার মেরুদ্বন্ডের হাঁড় ভেঙ্গে পঙ্গুত্ব জীবন নিয়ে বেঁচে আসে। স্বপনও ওই বাবার মত অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। তবে তার কেবল শুরু। ওসমান ফকির অজ্ঞাত রোগে আক্রান্তের পাশাপাশি সে প্রায় বিশ বছর থেকে প্রতিবন্ধী হয়ে পড়েছে। চার সদস্যের পরিবার নিয়ে দুঃখে-কষ্টে দিন পার করছেন তিনি।
ওসমান ফকিরের সাথে কথা বলে জানা যায়, ৪-৫ বছর বয়সে সে এই এলাকায় এসেছে। তবে কার সাথে কিভাবে এই এলাকায় এসেছে তা তিনি বলতে পারেননা। এমনকি তার বাবার নামও তিনি জানেন না। ওই সময় থেকে অন্যের বাড়ীতে খেয়ে না খেয়ে দিনাতিপাত করেন তিনি। ১৪-১৫ বছর বয়সে হঠাৎ শরীরে এধরনের কিছু একটা বেড় হয়। এরপর তিনি স্থানীয় কবিরাজ দিয়ে চিকিৎসাও করিয়েছেন। তাতে কোন লাভ হয়নি। আস্তে আস্তে বাড়তেই থাকে। বর্তমান তার অবস্থা আশংকাজনক। তারপরও জীবিকার তাগিয়ে রাস্তায় বসে ভিক্ষা করতে হচ্ছে তাকে।
স্ত্রী জয়গুন বেগম জানান, খেয়ে না খেয়ে কোনমতে বেঁচে আছি। তাকেও মাঠে-ঘাটে কাজ করতে হয়। দুমুঠো খাবার যোগার করতেই পারেন না, চিকিৎসা করাবেন কিভাবে। ছেলে স্বপনের মেরুদন্ড হাড়ে আগাত পেয়ে সেও পঙ্গু হয়ে পড়েছে। অসহায় পঙ্গুত্বের সংসার নিয়ে অতি কষ্টে রয়েছেন জয়গুন বেগম। সরকারী তেমন কোন সাহায্য সহযোগিতা পাচ্ছেন না বলে তিনি জানান।
মশিন্দা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মোঃ মোস্তাফিজুর রহমান জানান, তার সম্পর্কে আমার তেমন কিছু জানা নেই। যোগাযোগ করলে তাকে পরিষদ থেকে সাধ্যমতো সহযোগিতা করা হবে।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডাক্তার মুজাহিদুল ইসলাম জানান, তাকে না দেখে ও পরীক্ষা-নিরীক্ষা না করে কিছুই বলা যাবে না। তবে সঠিক সময়ে চিকিৎসা করানো হলে হয়তঃ এমন হতো না। তিনি হাসপাতালে আসলে তার সুচিকিৎসার ব্যবস্থা করা হবে।