অনলাইন ডেস্ক :বীরাঙ্গনা রমা চৌধুরীর শারীরিক অবস্থা আরও অবনতি হয়েছে। এখন তিনি জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতালে ইনটেনসিভ কেয়ার ইউনিটে (আইসিইউ) রয়েছেন নিবিড় পরিচর্যায় রাখা হয়েছে তাকে।

২০১৭ সালের ২৪ ডিসেম্বর পড়ে গেলে কোমরের হাড়ে ফ্রাকচার হয় তার। সেইদিনই তাকে বেসরকারি হাসপাতাল মেডিকেল সেন্টারে ভর্তি করা হয়। সেই থেকে একটানা অসুস্থ ছিলেন তিনি।
ইতিমধ্যে শারীরিক অবস্থার কিছুটা উন্নতি হলে চিকিৎসকরা তাকে ছেড়ে দেন।

রবিবার সকাল সাড়ে ৮টায় চমেক হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসকরা নিবিড় পরিচর্যায় রেখেছেন তাকে। তার চিকিৎসকরা জানান, রমা চৌধুরীর রক্তচাপ উঠানামা করছে।

রমা চৌধুরীর বইয়ের প্রকাশক ও তার একান্ত সহকারি আলাউদ্দিন খোকন বলেন, চিকিৎসকরা তার বিভিন্ন পরীক্ষা-নিরীক্ষা দিয়েছেন। সেগুলোর রিপোর্ট পেলে কালকের মধ্যে তার শারীরিক অবস্থা জানা যাবে। আইসিইউতে নেওয়ার আগেও রমা চৌধুরী কথা বলেছেন। তখন তিনি বাসায় ফিরে যাওয়ার ইচ্ছে পোষণ করেন।

ষাটের দশকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগ থেকে স্নাতকোত্তর ডিগ্রিধারী রমা চৌধুরী ১৯৪১ সালে বোয়ালখালীর পোপাদিয়া গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। একাত্তরের ১৩ মে ভোরে নিজবাড়িতে পাকিস্তানি সেনাবাহিনীর দোসরদের হাতে নির্যাতনের শিকার হয়েছিলেন রমা চৌধুরী। সমভ্রম হারানো রমা চৌধুরী সংগ্রাম করে জীবন কাটিয়েছেন। স্বাধীনতাত্তোর বাংলাদেশে হারিয়েছেন তিন ছেলেকে। জীবনের ১৬টি বছর তিনি বিভিন্ন উচ্চ বিদ্যালয়ে প্রধান শিক্ষিকার দায়িত্ব পালন শেষে লেখালেখিকে পেশা হিসেবে বেছে নেন।

প্রবন্ধ, উপন্যাস ও কবিতা মিলিয়ে এ পর্যন্ত তার ১৯টি গ্রন্থ প্রকাশ হয়েছে। খালি পায়ে হেঁটে হেঁটে তিনি নিজের লেখা বই ফেরী করতে চেনা জানা লোকদের বাসায়-অফিসে গিয়ে। এতেই তিনি স্বচ্ছন্দ্য বোধ করেন। তার সংগ্রামী জীবন সম্পর্কে জেনে বছর দুয়েক আগে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাছিনা তাকে গণভবনে আমন্ত্রণ জানিয়েছিলেন।

চলতি বছরের ১৪ জানুয়ারি রমা চৌধুরীকে হাসপাতালে দেখতে গিয়েছিলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। তিনি দেখা করে রমা চৌধুরীর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সবকিছু করতে বলেন। পরে চিকিৎসকরা বোর্ড গঠন করে তার চিকিৎসা চালান।