দর্পণ ডেস্ক : রাশিয়ার মধ্যস্থতায় আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া যুদ্ধবিরতিতে একমত হওয়ার পর এটিই আর্মেনীয় প্রধানমন্ত্রীর প্রথম কোনও সাক্ষাৎকার। তবে আঙ্কারা তার অবস্থান পরিবর্তন করবে; এমন কোনও ইঙ্গিত অবশ্য রয়টার্সকে দিতে পারেননি নিকোল পাশিনিয়ান।
তিনি বলেন, যতক্ষণ পর্যন্ত তুরস্কের অবস্থান পরিবর্তন না হয়, ততক্ষণ পর্যন্ত আজারবাইজান থামবে না। তারা সংঘাত থামাবে না।
নিকোল পাশিনিয়ান বলেন, যুদ্ধবিরতির আলোচনার আগেই তুরস্ক প্রকাশ্যে আজারবাইজানকে সমর্থন দিয়েছে। এর মানে দাঁড়ায়, তারা আজারবাইজানকে লড়াই চালিয়ে যেতে বলছে। চুক্তির পরও তুর্কি পররাষ্ট্রমন্ত্রী আজেরি পররাষ্ট্রমন্ত্রীকে ফোন করেছেন।
এদিকে তুরস্ক হুঁশিয়ারি জানিয়ে বলেছে, প্রতিবেশী আজারবাইজানের বেসামরিক নাগরিকদের ওপর হামলার মূল্য দিতে হবে আর্মেনিয়াকে। সোমবার তুর্কি প্রতিরক্ষামন্ত্রীর এমন মন্তব্যের একদিন পরই মঙ্গলবার এ সংঘাতের জন্য আঙ্কারাকে দায়ী করেন আর্মেনীয় প্রধানমন্ত্রী।
নাগরনো-কারাবাখ অঞ্চল নিয়ে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের পুরনো সংঘাত গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে নতুন করে আবার শুরু হয়। গত কয়েক দিনের সংঘাতে ৩ শতাধিক মানুষের প্রাণহানি হয়েছে। রুশ প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে দুই পক্ষ মস্কোতে অস্ত্রবিরতির আলোচনায় সম্মত হয়। তবে যুদ্ধবিরতি কার্যকরের পরপরই উভয় দেশ একে অপরের বিরুদ্ধে তা লঙ্ঘনের অভিযোগ তুলেছে।
সোমবার তুরস্কের ন্যাশনাল ডিফেন্স ইউনিভার্সিটির নতুন শিক্ষাবর্ষ উদ্বোধনের সময় এ নিয়ে কথা বলেন তুর্কি প্রতরিক্ষামন্ত্রী হুলুসি আকার। তিনি বলেন, তুরস্কের মিত্র আজারবাইজানের বিভিন্ন আবাসিক এলাকায় হামলা চালিয়েছে আর্মেনিয়া। এটি যুদ্ধবিরতি চুক্তির স্পষ্ট লঙ্ঘন।
তুর্কি প্রতিরক্ষামন্ত্রী আরও বলেন, আর্মেনিয়া হামলা অব্যাহত রেখেছে। এসবের জন্য একদিন তাদের ইতিহাস ও আন্তর্জাতিক আইনের মুখোমুখি হতে হবে।
আজারবাইজানের প্রেসিডেন্ট ইলহাম আলিয়েভ বলেছেন, নাগারনো-কারাবাখ নিয়ে শান্তি আলোচনার উদ্যোগে তুরস্ককে অন্তর্ভুক্ত করতে হবে। তিনি বলেন, সংঘাতে মধ্যস্থতার জন্য ফ্রান্স, রাশিয়া ও যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে গঠিত মিনস্ক গোষ্ঠী নিরপেক্ষ নয়। সিরিয়া, লিবিয়া ও আন্তর্জাতিক সংঘাতে জড়িত বৈশ্বিক শক্তি তুরস্ককে এই সমাধান প্রক্রিয়ায় অন্তর্ভুক্ত করতে হবে।
উল্লেখ্য, সাবেক সোভিয়েত দেশগুলোর সামরিক জোটের সদস্য আর্মেনিয়া, যার নেতৃত্বে রয়েছে রাশিয়া। আবার আজারবাইজানের ঘনিষ্ঠ মিত্র তুরস্ক। তুর্কি ও আজেরি রাজনীতিকরা দুই দেশের সম্পর্ককে ব্যাখ্যা করতে একটি বাক্য ব্যবহার করে থাকেন। এটি হচ্ছে, ‘এক জাতি, দুই দেশ।’ দুই দেশের মানুষের ভাষা, সংস্কৃতি ও ধর্মের মিল রয়েছে।