দেশের প্রতিটি স্তরে দুর্নীতি মুক্ত করতে পারলে জিডিপি দুই শতাংশ বাড়ানো সম্ভব হবে বলে মন্তব্য করেছেন বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরী কমিশনের (ইউজিসি) চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান।
গতকাল মঙ্গলবার পল্লী কর্ম-সহায়ক ফাউন্ডেশনে (পিকেএসএফ) এক আন্তর্জাতিক সম্মেলনে তিনি বলেন, স্বল্পোন্নত দেশের তালিকা থেকে উন্নয়নশীল দেশের কাতারে পৌঁছালেও টেকসই অর্থনীতির উন্নয়ন বাংলাদেশের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ।
সম্মেলনের উদ্বোধনী পর্বে আরও বক্তব্য দেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি মীজানুর রহমান, সম্মেলনের আহ্বায়ক অস্ট্রেলিয়ার গ্রিফিত বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মোয়াজ্জেম হোসেন।
‘টেকসই অর্থনীতির যাত্রাপথ: ভিশন ২০৪১, বাংলাদেশের করণীয়’ শীর্ষক দু’দিনের আন্তর্জাতিক সম্মেলনটি আয়োজন করেছে পিকেএসএফ, ঢাকা স্কুল অব ইকনোমিকস, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, গ্রিফিথ ইউনিভার্সিটি অব অস্ট্রেলিয়া, যুক্তরাজ্যের ইউনিভার্সিটি অব বাথ এবং জার্মানির ব্রেমেন ইউনিভার্সিটি।
দেশের রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা বজায় রাখা, সর্বস্তরে সরকারের অন্তর্ভুক্তি এবং দুর্নীতি নির্মূল করা গেলে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব।

দুর্নীতিকে দেশের উন্নয়নের ক্ষেত্রে অন্যতম বাধা বলে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এই দুর্নীতি প্রতিরোধ নয়, এটিকে যদি একেবারে নির্মূল করা যায়, তবে বর্তমান জিডিপি আরও ২ শতাংশ বৃদ্ধি করা সম্ভব হবে।
সম্মেলনে পিকেএসএফ সভাপতি ড. কাজী খলীকুজ্জমান আহমদ বলেন, সমাজে অসমতা থাকলে টেকসই উন্নয়ন সম্ভব না। অন্তর্ভুক্তিমূলক উন্নয়নের পথে আমরা এগিয়ে যাচ্ছি। আমরা যা অর্জন করেছি। এখন সময় এসেছে এ অর্জনকে সুসংহত করা, ত্বরান্বিত করা।
দেশের এই উন্নয়নকে ত্বরান্বিত ও সুসংহত করার ক্ষেত্রে জনবল, সন্ত্রাস, দুর্নীতি, রাজনৈতিক অস্থিতিশীলতা হচ্ছে মূল প্রতিবন্ধকতা। সেগুলোসহ অন্যান্য আরও সমস্যাগুলোকে যথাযথভাবে দূর করে আমরা এগিয়ে যাব। সেজন্য নীতি ও কর্মসূচির ধারাবাহিকতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। প্রতিবন্ধকতা দূর করার জন্য সবাইকে অন্তর্ভুক্ত করে এগিয়ে যেতে হবে। যেটা আমাদের টেকসই উন্নয়নের মূলমন্ত্র।
সম্মেলনে পিকেএসএফ এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক মো. আবদুল করিম দেশের অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধির তুলনামূলক চিত্র তুলে ধরে বলেন, ১৯৯০ সালের চার শতাংশ প্রবৃদ্ধি ২০১৮ সালে এসে পৌঁছেছে শতকরা ৭ দশমিক ৮৬ এ। এই অনুপাতে যেখানে যুক্তরাষ্ট্রে ১২ ভাগ মানুষ দারিদ্র্যসীমায় অবস্থান করছে, সেখানে বাংলাদেশের শতকরা ২২ ভাগ মানুষ দারিদ্রসীমায় অবস্থান করছে।
দেশের মানুষের প্রত্যাশা ও প্রাপ্তি বেড়েছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, টেকসই অর্থনীতি নিশ্চিত করার ক্ষেত্রে অঞ্চলভিত্তিক অসম উন্নয়ন এর ব্যবধান কমিয়ে আনতে হবে ও অর্থনৈতিক প্রতিষ্ঠানের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে।
দুইদিনব্যাপী এ সম্মেলনে শিল্পায়ন, কৃষি, খাদ্য নিরাপত্তা, গণস্বাস্থ্য, পুষ্টি, জলবায়ু পরিবর্তনসহ বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়ন সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে দেশি-বিদেশি বিশেষজ্ঞরা ১৫টি প্রবন্ধ উপস্থাপন করবেন।