নিজ ক্যাম্পাসে ভাইসহ সাবেক ঢাবি শিক্ষার্থীকে নির্যাতন, মার খেলো প্রক্টরিয়াল টিমও

নিজ ক্যাম্পাসে এসে মারধরের শিকার হয়েছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক দুই শিক্ষার্থী। শুক্রবার দিবাগত বিশ্ববিদ্যালয়ের ফুলার রোড এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। একই ঘটনায় ঢাবি প্রক্টরিয়াল টিমেরও চার সদস্য আহত হয়েছেন বলে জানা গেছে। 

ভুক্তভোগীদের অভিযোগ, সলিমুল্লাহ মুসলিম (এসএম) হল সংসদের ভিপি এমএম কামাল উদ্দিনের নেতৃত্বে তাদের মারধর করেছে হলটির বেশকিছু শিক্ষার্থী। 

জানা যায়, ছোট ভাই বাপ্পির পড়াশুনার বিষয়ে কথা বলতে ঢাবির প্রাক্তন শিক্ষার্থী রানা নাসির আরেক প্রাক্তন শিক্ষার্থী নুসরাত ফারহানার কাছে এসেছিলেন। ফুলার রোড়ে ফারহানা ও বাপ্পি বসে কথা বলছিলেন। এ সময় রানা নাসির ব্যক্তিগত কাজে একটু দূরে ছিলেন। এমন সময় এসএম হলের কিছু শিক্ষার্থী এসে ফারহানা ও বাপ্পিকে তাদের পরিচয় জিজ্ঞাসা করে। কিন্তু ‘ঠিকঠাক পরিচয় দিতে না পারায়’ বাপ্পিকে মারধর করে ওই শিক্ষার্থীরা। রানা নাসের তার ভাইকে মারধর করতে দেখে দৌড়ে আসলে শিক্ষার্থীরা হলের ভিতরে পালিয়ে যায়। পালানোর সময় এক শিক্ষার্থীর মোবাইল ঘটনাস্থলে পড়ে যায়। পরে ওই শিক্ষার্থী তার মোবাইল ফোন নিতে আসলে রানা নাসের তাকে ধরে ফেলে। এ ঘটনা ভিডিও করতে থাকে ফারহানা। এ সময় ক্ষোভবশত আশেপাশের কিছু মানুষ তাকে মারধর করে বলে জানা গেছে। 

নুসরাত ফারহানার অভিযোগ, ওই শিক্ষার্থীদের হলে সোপর্দ করার জন্য তিনি এসএম হলে নিয়ে যান। সেখানে হল সংসদের ভিপি কামালের নেতৃত্বে রানা নাসের ও তার ভাইকে ফের মারধর করা হয় এবং তার ফোন কেড়ে নেওয়ার চেষ্টা করা হয়। ঘটনাস্থলে উপস্থিত প্রক্টরিয়াল টিমের সদস্যরাও এ সময় মারধরের শিকার হন। পরে প্রক্টরিয়াল টিম ভুক্তভোগীদের প্রক্টর অফিসের দিকে নিয়ে আসে।

তবে, মারধরের অভিযোগ অস্বীকার করে ভিপি কামাল উদ্দিন ‘শিক্ষার্থীদের বরাতে’ দাবি করেন, রানা নাসিরই বহিরাগতদের নিয়ে ওই শিক্ষার্থীকে মারধর করেছেন। তিনি সেখানে কী করতে গিয়েছিলেন-এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, আমি ঘটনা নিয়ন্ত্রণ করতে গিয়েছিলাম। 

ঘটনাস্থলে উপস্থিত এসএম হলের জিএস জুলিয়াস সিজার বলেন, ওই শিক্ষার্থীকে রানা নাসির বহিরাগতদের সহযোগিতায় গণধোলাই দিয়েছিলেন। এ সময় ভিপি কামাল ভাই গিয়ে তাকে উদ্ধার করেন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী হিসেবে প্রত্যেকেরই ক্যাম্পাসের পরিবেশ বিনষ্টকারী বহিরাগতমুক্ত রাখার নৈতিক জায়গা আছে।  

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. গোলাম রাব্বানী বলেন, কিছু শিক্ষার্থী বহিরাগত ও সিনিয়র শিক্ষার্থীদের এক ধরনের শাসন করার একটা চেষ্টা করে। এ রকমই একটি খবর পেয়ে প্রক্টরিয়াল টিম তাদের উদ্ধার করতে গেলে মারধরের শিকার হয়েছে। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও জানিয়েছেন তিনি। 

তিনি বলেন, ক্যাম্পাসে কেউ অপরাধ করলে তা দেখার দায়িত্ব প্রক্টরিয়াল টিমের বা পুলিশের। কিন্তু কেউ কাউকে মারধর করতে পারে না। 

বিডি-প্রতিদিন/মাহবুব