সাদা কাঞ্চন শুধু দেখতেই সুন্দর নয়, গাছটি গুণেও অনন্য। শরীরের কোনো স্থান কেটে গেলে বা ক্ষত তৈরি হলে সাদা কাঞ্চনের ফুল ও এর পাতা কাজে লাগানো যায়। প্রথমে এ গাছের পাতা নিয়ে থেঁতো করে নিতে হবে। এরপর ক্ষত স্থানে প্রলেপ দিলে দ্রুত ভালো হয়ে যায়। 

কুষ্ঠ রোগে প্রথমে সাদা কাঞ্চন গাছের পাতা নিয়ে পিষে একটি মণ্ড করে নিতে হবে। এরপর এই মণ্ড কুষ্ঠ রোগীর ঘায়ে লাগালে ঘা দ্রুত সেরে যাবে। সাপ বা পোকার কামড়ে বিষক্রিয়া হলে সাদা কাঞ্চনের শিকড় সিদ্ধ করে নিতে হবে। তারপর সেই পানি ছেঁকে সেবন করলে সর্পদংশন বা অন্যান্য বিষক্রিয়া কমে যায়। 

পেটের পীড়ায় সাদা কাঞ্চন গাছের পাতা ও ছাল সিদ্ধ করে সেই ক্বাথ মধুর সঙ্গে মিশিয়ে সেবন করলে উপকার পাওয়া যায়। হাঁপানি নিরাময়ে গাছের ছাল পানিতে সিদ্ধ করে নিতে হবে। সেই ক্বাথ সকাল-বিকেল সেবন করলে হাঁপানি রোগে উপকার পাওয়া যায়। 

এসব ছাড়াও কাঞ্চন গাছের বাকল থেকে ট্যানিং, রং ও দড়ি তৈরি করা যায়। কাঞ্চনের বীজতেল সস্তা জ্বালানি হিসেবে ব্যবহৃত হতো।

সাদা কাঞ্চন মূলত গুল্মশ্রেণির গাছ। তবে কখনও কখনও একটু বড়ও হতে পারে। এদের কাণ্ড নিচু, শাখা-প্রশাখা অনেক এবং কিছুটা ছড়ানো-ছিটানো ধরনের। কাঞ্চনের পাতা তার অনন্য বৈশিষ্ট্য। 

দুটি পাতা জোড়া দিলে দেখতে যেমন, পাতার শেষ প্রান্ত অবিকল সেরকম। কাঞ্চন গাছ শীতকালে সব পাতা ঝরিয়ে একেবারে মরার মতো দাঁড়িয়ে থাকে। এ অবস্থাতেই গাছজুড়ে দুধসাদা রঙের ফুলের মেলা বসে। ফুলগুলো পাতার কোলে গুচ্ছবদ্ধভাবে ফুটতে থাকে। পাপড়ির সংখ্যা ৫.৫ সেন্টিমিটার চওড়া এবং মুক্তভাবে ছড়ানো। 

গাছে ফুল অবশিষ্ট থাকতেই শিমের মতো চ্যাপ্টা ফল ধরে। ফলগুলো একসময় শুকিয়ে গিয়ে আপনাআপনি ফেটে যায়। তখন বীজগুলো ছড়িয়ে পড়ে। ভারতের শুস্ক অঞ্চলের অরণ্যভূমি এদের আদি আবাস। গাছের শিকড় বিষাক্ত এবং আদিবাসীরা সর্পদংশনের প্রতিষেধক হিসেবে এটি ব্যবহার করে।