অনলাইন ডেস্ক : অনিয়ম-দুর্নীতিতে ডুবতে বসা ফারমার্স ব্যাংকের শেয়ার কিনতে রাষ্ট্রায়ত্ত চার ব্যাংকের আইনি বাধা অপসারণ করে দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ফজলে কবির তার ক্ষমতাবলে মঙ্গলবার দেওয়া এক আদেশে ব্যাংক কোম্পানি আইনের এই তিনটি ধারা পরিপালন থেকে ব্যাংক চারটিকে অব্যাহতি দিয়েছেন।

বেসরকারি এই ব্যাংকটিকে বাঁচাতে ৭১৫ কোটি টাকার শেয়ার কিনবে রাষ্ট্রায়ত্ত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো।

সংশ্লিষ্টরা জানান, সোনালী, জনতা, অগ্রণী এবং রূপালী ব্যাংকের প্রত্যেকে ১৬৫ কোটি টাকা করে ৬৬০ কোটি টাকার শেয়ার কিনবে।

বাকি ৫৫ কোটি টাকার শেয়ার কিনবে রাষ্ট্রায়ত্ত আর্থিক সংস্থা ইনভেস্টমেন্ট কর্পোরেশন অব বাংলাদেশ (আইসিবি)।

সরকারি উদ্যোগের অংশ হিসেবে রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো ফারমার্স ব্যাংকের শেয়ার কিনছে, যার বিরোধিতাও রয়েছে। সংসদে আলোচনায়ও জনগণের অর্থ বেসরকারি ব্যাংকটিতে ঢালার বিরোধিতা এসেছে; তবে অর্থমন্ত্রী যুক্তি দেখাচ্ছেন, ফারমার্স ব্যাংক ডুবলে তার যে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে অর্থনীতিতে, তা এড়ানো দরকার।

রাষ্ট্রায়ত্ত ৫ সংস্থার কাছ থেকে পাওয়া ৭১৫ কোটি টাকা দিয়ে আমানতকারীদের চাহিদার আলোকে কিছু অর্থ ফেরত দেওয়া হবে।

ফারমার্স ব্যাংকের অনুমোদিত মূলধন ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকা। তবে বর্তমানে পরিশোধিত মূলধন রয়েছে ৪০১ কোটি টাকা। এখন পরিশোধিত মূলধন বাড়িয়ে ১ হাজার ৫০০ কোটি টাকায় উন্নীত করার চেষ্টা চলছে।

পরিশোধিত মূলধন বৃদ্ধির ফলে বর্তমান পরিচালকদের অনেকে পরিচালক থাকার যোগ্যতা হারাবেন। কেননা পরিচালক হতে হলে মূলধনের ২ শতাংশ শেয়ার ধারণের বাধ্যবাধকতা রয়েছে।

গভর্নরের আদেশে ফারমার্স ব্যাংকের শেয়ার কেনায় ব্যাংক কোম্পানি আইনের ১৪ (ক) ধারা এবং ২৬ (ক) ধারার বিধান পরিপালনে সোনালী, অগ্রণী, জনতা ও রূপালী ব্যাংককে সাধারণভাবে অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

এছাড়া সোনালী, জনতা, অগ্রণী, রূপালী ব্যাংক এবং আইসিবির পক্ষে তাদের সিইও/ব্যবস্থাপনা পরিচালকদের ফারমার্স ব্যাংকের পরিচালনা পর্ষদে প্রতিনিধি পরিচালক নিযুক্তির ক্ষেত্রে আইনের ২৩ (১) (ক) ধারার বিধান পরিপালন হতেও অব্যাহতি দেওয়া হয়েছে।

>> আইনের ১৪ ধারায় বলা হয়েছে, কোনো ব্যাংক কোম্পানি অন্য কোনো কোম্পানির ১০ শতাংশের বেশি শেয়ার রাখতে পারবে না।

>> ২৬ (ক) ধারা অনুযায়ী, কোনো ব্যাংক কোম্পানি অন্য কোনো কোম্পানির শেয়ার ধারণের ক্ষেত্রে ধারণকৃত শেয়ার বাজারমূল্যে ওই ব্যাংক কোম্পানির আদায়কৃত মূলধন, শেয়ার প্রিমিয়াম, সংবিধিবদ্ধ সঞ্চিতি ও রিটেইন্ড আর্নিংসের মোট পরিমাণের পাঁচ শতাংশের বেশি হবে না।