অনলাইন ডেস্ক : আকাশসীমায় গুপ্তচরবৃত্তি চালানো, নিজ দেশের আকাশসীমা পাহারা দেয়া, আবহাওয়া পর্যবেক্ষণ, শত্রুদের বেতার ও রাডার সিস্টেমে ব্যাঘাত ঘটানো, জঙ্গিবাদ দমনের মতো অনেক কাজে ব্যবহৃত হয় ড্রোন। ড্রোনের সবচেয়ে বড় সুবিধা হলো এই বিমানে কোন চালকের প্রয়োজন নেই। এ কারণে যে কোনো পরিস্থিতিতে খুবই কার্যকরী ড্রোন। বহুদিন ধরে বেশ কিছু বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান বাণিজ্যিক ব্যবহারের অনুমোদন চাইছিল। এবার মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ফেডারেল এভিয়েশন অ্যাডমিনিস্ট্রেশন (এফএএ) বাণিজ্যিকভাবে ড্রোন ব্যবহারের অনুমতি দিয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে ড্রোন ব্যবহারের অনুমোদনের জন্য ১৪৯টি প্রস্তাবনা জমা পড়লেও মাত্র ১০টি প্রস্তাব অনুমোদন দিয়েছে এফএএ।
তবে অনুমোদন দেওয়া প্রস্তাবনাগুলো সম্পর্কে বিস্তারিত জানায়নি এফএএ। অনুমোদন পাওয়া প্রতিষ্ঠানগুলো অবশ্য এখনই বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করতে পারবে না। এর জন্য তাদের অপেক্ষা করতে হবে আরো দুই থেকে আড়াই বছর। এই সময়ের মধ্যে নিজেদের সক্ষমতার বিষয়ে এফএএ’র আস্থা অর্জন করতে হবে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোকে। বাণিজ্যিকভাবে ব্যবহৃত ড্রোন ব্যবস্থাপনা নিরাপদ রাখতে ইতোমধ্যে এসব প্রতিষ্ঠানের সাথে যৌথভাবে কাজ করছে এফএএ। কয়েক লাখ ড্রোন এবং ৯০ হাজার পাইলট এফএএ’র সাথে রেজিস্ট্রেশন করেছে।
এফএএ’র সবুজ সংকেত পাওয়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে মোবাইল ফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘অ্যাপল’। মাইক্রোসফট, উবার এবং ইন্টেলেরও যুক্ত হওয়ার কথা রয়েছে এই প্রজেক্টে। ফ্লোরিডার একটি সরকারি সংস্থা মশার প্রজনন রোধে ড্রোন ব্যবহারের অনুমোদন পেয়েছে। সিএনএনের সাথে যৌথভাবে বাণিজ্যিকভাবে ড্রোন ব্যবহার করার অনুমোদন পেয়েছে ওকলোহমার ‘দি চকটাও ন্যাশন’। খাবার সরবরাহের অনুমোদন পেয়েছে ফ্লাইটরেক্স। নিরাপত্তা এবং অবকাঠামো খাতের কাজ করতে মেমফিস কাউন্টি এয়ারপোর্ট অথরিটির সাথে যৌথভাবে কাজ করবে ফেডেক্স। চিকিৎসা সরঞ্জামাদি সরবরাহে অনুমোদন পেয়েছে ফ্লিরটে। অনুমোদন পাওয়া প্রতিষ্ঠানের মধ্যে রয়েছে রুয়ান্ডাতে বাণিজ্যিকভাবে কার্যক্রম পরিচালনাকারী প্রতিষ্ঠান ‘জিপলাইন’। গুগল, স্পেসএক্স এবং অন্যান্য প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সাবেক কর্মীদের নিয়ে তৈরি হয়েছে জিপলাইন। পশ্চিম রুয়ান্ডার পল্লী এলাকায় হাসপাতালগুলোতে রক্ত, প্লাজমা এবং অন্যান্য অতি প্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহ করে থাকে জিপলাইন।
সবথেকে আশ্চর্যের বিষয় অনেক আগে থেকে বহুজাতিক প্রতিষ্ঠান ‘অ্যামাজন’ বাণিজ্যিকভাবে ড্রোন ব্যবহারের অনুমোদন চাইলেও তাদের নিরাশ করেছে এফএএ। নিউইয়র্কের বাসিন্দাদের ড্রোনের মাধ্যমে পণ্য সরবরাহের অনুমোদন চেয়ে আবেদন করেছিল অ্যামাজন। কিন্তু অ্যামাজনের প্রস্তাব আটকে দিয়েছে এফএএ। বিশ্বের সবচেয়ে বড় বেসামরিক ড্রোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ‘ডিজেআই’ এক ডজন আবেদন করলেও সেগুলো অনুমোদন দেয়নি এফএএ।