আওয়ামী সিন্ডিকেটের মুনাফার জন্য সরকার বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে বলে অভিয়োগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, করোনাভাইরাসের প্রাদুর্ভাবে বাণিজ্যের মন্দা এবং বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দর পতনের মধ্যেই দেশে সব পর্যায়ে বিদ্যুতের পাইকারি ও খুচরা মূল্য বাড়ানোর একমাত্র কারণ হলো লুটপাট। এই দাম বৃদ্ধির মাধ্যমে গ্রাহকদের পকেট থেকে বছরে ২ হাজার কোটি টাকা লুটে নেবে আওয়ামী সিন্ডিকেট।
শুক্রবার রাজধানীর নয়াপল্টন বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে তিনি এই অভিযোগ করেন।
রিজভী বলেন, গণমানুষ, ভোক্তা অধিকার কিংবা ব্যবসায়ী সংগঠনগুলোর যুক্তি-অনুরোধ কোনো কিছুরই তোয়াক্কা না করে সরকার যখন মন চাচ্ছে বিদ্যুত-গ্যাস-পানির দাম বাড়িয়ে জনগণের পকেট কাটছে। আওয়ামী সিন্ডিকেটের মুনাফার জন্যেই তারা বিদ্যুতের দাম বাড়িয়েছে।
বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে জনগণের দুর্ভোগ বাড়বে উল্লেখ করে রিজভী বলেন, বারবার বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির ফলে সাধারণ মানুষের পিঠ দেয়ালে ঠেকে গেছে। শিল্প মালিকদেরও ‘ছেড়ে দে মা, কেঁদে বাঁচি’ দশা। দেশীয় শিল্পকারখানা ধবংস করে লাখ মানুষের কর্মসংস্থান বন্ধের মাধ্যমে দেশকে বড় ধরনের বিপর্যয়ের দিকে ঠেলে দেওয়ার চক্রান্ত চলছে। বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধির কারণে উৎপাদন খরচ বেড়ে যাওয়ার প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার সক্ষমতা হারাচ্ছে শতশত প্রতিষ্ঠান।
তিনি বলেন, বিদ্যুতের মূল্য বৃদ্ধি দেশের শিল্পের শক্তি ধবংস করে দেবে, ক্ষুদ্র শিল্পোদ্যক্তা ও ব্যবসায়ীদের জন্য অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখা কঠিন হবে। সেচ বিদ্যুতের দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কৃষিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়বে, নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যমূল্যসহ মানুষের জীবনযাত্রার সকল খরচ বেড়ে যাবে। আমরা এই গণবিরোধী সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করার আহবান জানাচ্ছি। অন্যথায় বিদ্যুত, গ্যাস, পানির দাম বৃদ্ধির বিরুদ্ধে গণপ্রতিরোধ গড়ে তোলা হবে।
রিজভী অভিযোগ করে বলেন, এদেশের তিনবারের প্রধানমন্ত্রী খালেদা জিয়া সুচিকিৎসার অভাবে এখন প্রায় পঙ্গু হয়ে গেছেন। কেবল উন্নত চিকিৎসার জন্যই নয়, তিনি একজন মহিয়সী নারী, তার বয়স, অসুস্থতাসহ সকল বিবেচনায় তিনি জামিনের যোগ্য হলেও গণভবনের সরাসরি হস্তক্ষেপে জামিন পেলেন না। আবারো তাকে তার মানবাধিকার, মৌলিক, সাংবিধানিক ও আইনগত অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হলো।
রিজভী বলেন, নিম্ন থেকে সর্বোচ্চ আদালত আজ অবরুদ্ধ মিডনাইট ভোট ডাকাতদের করতলে। দেশের জনগণ বিশ্বাস করে আদালতে নূন্যতম স্বাধীনতা থাকলে খালেদা জিয়া জামিন পেতেন। আমরা স্পষ্টভাষায় বলে দিতে চাই, খালেদা জিয়া যেভাবে সরকারের তত্ত্বাবধায়নে আদালতের অবিচারের শিকার হচ্ছেন, এমন পরিস্থিতিতে তার যদি আরো বড় কোনো ক্ষতি হয়ে যায় তাহলে জনগণ কাউকেই ক্ষমা করবে না।
সংবাদ সম্মেলনে দলের চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য অধ্যাপক শাহিদা রফিক, কেন্দ্রীয় নেতা হাবিবুল ইসলাম হাবিব, আবদুস সালাম, আজাদ প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।