মুসলিম নারীরা পর্দা করার জন্য সাধারণত বোরকা ব্যবহার করে থাকেন। তবে কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে বেড়েছে জঙ্গি তৎপরতা। এই জঙ্গি সমস্যা সমাধানের জন্য কাজ করছে বাংলাদেশসহ বিশ্বের অনেক দেশ। তবে ইতিমধ্যে বাংলাদেশের জঙ্গি তৎপরতা অনেকাংশে কমে এসেছে।

ইসলামের ভুল ব্যাখ্যায় জঙ্গি দলগুলোর সঙ্গে জড়িয়ে যাচ্ছে অনেক নারী। এসব নারী বোরকা ব্যবহার করেন।

ইউরোপের দেশগুলো ধীরে ধীরে মুসলমানদের নেকাবের ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপ করছে। বিশ্বের কোনো দেশ জঙ্গি তৎপরতা সমর্থন করে না। কারণ এটি ক্ষমার অযোগ্য অপরাধ।

বোরকা নিষিদ্ধ হওয়ার তালিকায় আসছে এবার অস্ট্রিয়াও। দেশটির ক্ষমতাসীন জোট সরকার প্রকাশ্য স্থানে পুরো মুখ ঢেকে রাখার নেকাব নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে একমত হয়েছে।

কিছু কিছু দেশে আবার পুরো মুখ ঢাকা বোরকা নিষিদ্ধ করা নিয়ে চলছে আলাপ-আলোচনা। প্রশ্ন উঠেছে- ধর্মীয় স্বাধীনতা না থাকায় এসব অঞ্চলে কি জঙ্গি তৎপরতা বাড়ছে?

আসুন জেনে নিই বোরকা নিষিদ্ধ যেসব দেশে-

ফ্রান্স
ফ্রান্স ইউরোপের প্রথম দেশ; যেখানে বোরকা আইন করে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। ফ্রান্সে ৫০ লাখ মুসলমানের বাস। ২০১১ সালের ১১ এপ্রিল এই আইন কার্যকর হয়৷ বোরকা বা নেকাব পরলে জরিমানার বিধান রাখা হয়েছে আইনে।

বেলজিয়াম
২০১১ সালের জুলাইয়ে বেলজিয়ামেও নেকাব নিষিদ্ধ হয়৷ অর্থাৎ কোনো নারী তার পুরো মুখ কাপড়ে ঢেকে রাখতে পারবে না৷

নেদারল্যান্ডস
নেদারল্যান্ডসে ২০১৫ সালে আইন করে বোরকা নিষিদ্ধ করা হয়৷ বিশেষ করে জনসমক্ষে, অর্থাৎ স্কুল, হাসপাতাল ইত্যাদির মতো জায়গায বোরকা ব্যবহারের ওপর নিষেধাজ্ঞা রয়েছে৷

স্পেন
পুরো স্পেনে নয়, বার্সেলোনা শহর কর্তৃপক্ষ সেখানে বোরকা নিষিদ্ধ করেছে৷

ব্রিটেন
ব্রিটেনে প্রচুর মুসলিমের বাস। তাই সেখানে কোনো ইসলামী পোশাকের ওপর নিষেধাজ্ঞা নেই৷ তবে স্কুলগুলোতে নির্দিষ্ট পোশাক পরতে হয়। ২০০৭ সালে বেশ কয়েকটি মামলার পর স্কুল কর্তৃপক্ষ ঠিক করে, স্কুলে কেউ বোরকা বা নেকাব পরতে পারবে না।

সুইজারল্যান্ড
২০১৩ সালে সুইজারল্যান্ডের ইতালীয় ভাষাভাষীদের এলাকা টিসিনোতে বোরকা নিষিদ্ধের ওপর ভোট হয়। নিষিদ্ধ করার পক্ষে পড়ে ৬৫ শতাংশ ভোট। এর পর ২৬টি শহরে বোরকা নিষিদ্ধ হয়। চলতি বছরের ১ জুলাই থেকে লুগানো, লোকারনো, মাগাদিনোসহ বেশ কয়েকটি এলাকায় বোরকা নিষিদ্ধ হয়। কেউ জনসমক্ষে বোরকা পরলে ৯ হাজার ২০০ ইউরো পর্যন্ত জরিমানা হতে পারে তার।

ইতালি
ইতালির বেশ কয়েকটি শহরে নেকাব নিষিদ্ধ। উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর নোভারা কর্তৃপক্ষ সেখানে আইন করে বোরকা নিষিদ্ধ করেছে। ‘৭০-এর দশকেই মুখ ঢেকে রাখা সব ধরনের ইসলামিক পোশাকের ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করে ইতালি।

অস্ট্রিয়া
দেশটির ক্ষমতাসীন জোট সরকার প্রকাশ্য স্থানে পুরো মুখ ঢাকা নেকাব নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে একমত হয়েছে। স্কুল-কলেজ, অফিস-আদালতে নেকাব পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা জারি করতে একমত হয়েছে সরকারের শরিক দলগুলোও। এ ছাড়া যারা সরকারি চাকরি করেন, তাদের মাথায় স্কার্ফ, হিজাব কিংবা অন্যান্য ধর্মীয় প্রতীক পরার ওপর নিষেধাজ্ঞা আরোপের কথাও বিবেচনা করছে সরকার৷

জার্মানি
জার্মানির রক্ষণশীল রাজনীতিকদের মধ্যে বোরকা নিষিদ্ধ করার দাবি উঠেছে। সিডিইউ দলের একাধিক রাজনীতিক স্কুল, সরকারি অফিস, আদালতকক্ষ, গাড়ি চালানোর সময় বোরকা ও গোটা মুখ ঢাকা বা নেকাব পরা নিষিদ্ধ করতে চান।

সাম্প্রতিক এক জরিপে দেখা গেছে, প্রায় তিন-চতুর্থাংশ জার্মানও প্রকাশ্যে বোরকাধারী মহিলাদের দেখতে নারাজ। এমনকি সম্প্রতি চ্যান্সেলর অ্যাঙ্গেলা মেরকেলও নেকাব নিষিদ্ধ করার পক্ষে সায় দিয়েছেন৷