বেগম রোকেয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্যাম্পাসে টাঙানো উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর ‘হাজিরা খাতা’ চুরি এবং তার রুমের সামনে টাঙানো স্মারকলিপি খুলে ফেলা হয়েছে। এর প্রতিবাদে ও চোরদের ধরার জন্য রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত অভিযোগ এবং তাজহাট থানায় সাধারণ ডায়রি করা হয়েছে। এছাড়া বৃহস্পতিবার মানববন্ধন করবে শিক্ষকদের সংগঠন ‘অধিকার সুরক্ষা পরিষদ’।

গত ২০ ফেব্রয়ারি বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসের রাসেল চত্বরে ‘অধিকার সুরক্ষা পরিষদ’ উপাচার্য ড. নাজমুল আহসান কলিমউল্লাহর ‘হাজিরা খাতা’ শিরোনামে সাদা বোর্ড টাঙিয়েছিল। সেখানে উপাচার্যের দৈনিক উপস্থিতি অনুপস্থিতির হালনাগাদ পাওয়া যাচ্ছিল। ওই বোর্ডের তথ্যানুযায়ী, বিশ্ববিদ্যালয়ে যোগদানের পর থেকে সোমবার পর্যন্ত ৯৯১ দিনের মধ্যে উপাচার্য ক্যাম্পাসে উপস্থিত ছিলেন মাত্র ২২৭ দিন। 

গত ৫ ফেব্রয়ারি সংবাদ সম্মেলন করে উপাচার্যের বিরুদ্ধে অনিয়ম-দুর্নীতি এবং স্বেচ্ছচারিতার প্রায় অর্ধশত খতিয়ান প্রকাশ করে অধিকার সুরক্ষা পরিষদ। সেদিনই সংগঠনের নেতারা জানান, উপাচার্য ক্যাম্পাসে এলেই তাকে স্মারকলিপি দেওয়া হবে। কিন্তু তাকে না পেয়ে শিক্ষকরা ক্যাম্পাসে তার হাজিরা খাতা টাঙিয়ে দেন।

এর আগে ১১ ফেব্রুয়ারি উপাচার্যকে না পেয়ে অধিকার সুরক্ষা পরিষদের পক্ষে একটি ব্যানারে স্মারকলিপি লিখে উপাচার্যের কক্ষের সামনে সেঁটে দেওয়া হয়েছিল। সেই স্মারকলিপি প্রক্টর অফিস থেকে সরিয়ে ফেলা হয়। এর নিন্দা জানিয়ে রেজিস্ট্রার বরবার লিখিত অভিযোগ দিয়েছিল অধিকার সুরক্ষা পরিষদ। সেই ব্যানারটি উদ্ধার করে আবারও উপাচার্যের কার্যালয়ের বন্ধ দরজায় টাঙিয়ে দেন আন্দোলনকারী শিক্ষকরা।

সম্প্রতি অধিকার সুরক্ষা পরিষদ উপাচার্যের ক্যাম্পাসে উপস্থিতি এবং সাক্ষাতের দাবিতে তার কার্যালয়ের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করে। মঙ্গলবার ক্যাম্পাসে এসে দেখা যায়, উপাচার্যের দরজার সামনের স্মারকলিপি ও রাসেল চত্বরের ‘হাজিরা খাতা’ নেই।

এ বিষয়ে অধিকার সুরক্ষা পরিষদ রেজিস্ট্রার বরাবর লিখিত দিয়েছে। পরিষদের আহ্বায়ক ম্যানেজমেন্ট স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ড. মতিউর রহমান বলেন, এর আগেও প্রশাসন আমাদের টাঙানো স্মারকলিপি খুলে ফেলেছিল। আমার মনে করি এবারো প্রশাসনের পক্ষ থেকেই এ কাজ করা হয়েছে। আমরা এ তীব্র নিন্দা ও জড়িতদের শাস্তি দাবি করছি।

শিক্ষক সমিতির সাবেক সভাপতি বাংলা বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. তুহিন ওয়াদুদ বলেন, শান্তিপূর্ণআন্দোলনের বিরুদ্ধে অবস্থান নিয়ে যারা এসব কাজ করছেন তাদের প্রতি অনুরোধ খুলে ফেলা বোর্ড ও ব্যানার আবারও টাঙানোর ব্যবস্থা করুন। এর প্রতিবাদে বৃহস্পতিবার মানববন্ধন এবং নতুন করে হাজিরা খাতা স্থাপন করা হবে বলেও তিনি জানান। সংবাদ বিজ্ঞপ্তি।