দর্পণ ডেস্ক : ইরানের শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানী মহসেন ফখরিজাদেহকে নির্মমভাব হত্যা করা হয়েছে। এ হত্যার কঠোর প্রতিশোধ নেয়া হবে বলে হুমকি দিয়েছে মধ্যপ্রাচ্যর দেশটি।হামলায় মহসেনের দেহরক্ষী এবং পরিবারের সদস্যরাও গুরুতর আহত হয়েছেন।
শুক্রবার তার মৃত্যুর পর এ ঘোষণা দিয়েছেন ইরানের সুপ্রিম নেতা আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির এক উপদেষ্টা।
মধ্যপ্রাচ্যভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরার তথ্যমতে, শুক্রবার তেহরান থেকে ৭০ কিলোমিটার পূর্বে আবসার্দ নামে একটি শহরে হামলার শিকার হন মহসেন। এসময় তার গাড়িতে প্রথমে বোমা হামলা, এরপর মেশিনগান দিয়ে গুলি করা হয়।
শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানীর মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে ইরানের প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছে, নিরাপত্তা দল ও সন্ত্রাসীদের মধ্যে সংঘর্ষের সময় মহসেন ফখরিজাদেহ গুরুতর আহত হন এবং তাকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। কিন্তু দুর্ভাগ্যবশত মেডিক্যাল টিম তাকে বাঁচাতে পারেনি।
প্রখ্যাত এ ইরানি বিজ্ঞানীকে হত্যার দায় এখনও কেউ স্বীকার করেনি। তবে দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী জাভাদ জারিফ এ হত্যাকাণ্ডের জন্য ইসরায়েলকে দায়ী করেছেন।
এক টুইটে তিনি বলেছেন, সন্ত্রাসীরা আজ এক বিশিষ্ট ইরানি বিজ্ঞানীকে হত্যা করেছে। এই কাপুরুষতার সঙ্গে ইসরায়েলি ভূমিকার জোর সম্ভাবনা রয়েছে।
এ ঘটনার নিন্দা জানিয়ে ইরানি পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইরান আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়, বিশেষ করে ইউরোপীয় ইউনিয়নকে তাদের লজ্জাজনক দ্বিচারিতার অবসান ঘটানো এবং এই রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাসের নিন্দা জানানোর আহ্বান জানাচ্ছে।
এদিকে, মহসেন হত্যার প্রতিশোধ নেয়ার ঘোষণা দিয়ে আয়াতুল্লাহ আলি খামেনির অন্যতম উপদেষ্টা হোসেইন দেহগান এক টুইটে বলেছেন, আমরা এই শহীদকে হত্যাকারীদের বজ্রপাতের মতো আঘাত করব এবং তাদের কাজের জন্য আফসোস করতে বাধ্য করব।
পশ্চিমাদের নজরে মহসেন ফখরিজাদেহ ছিলেন ইরানের গোপন পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচির মূল পরিকল্পনাকারী। তাকে ‘ইরানের বোমার জনক’ হিসেবেও আখ্যা দিয়েছেন অনেকে।
মহসেন হত্যাকাণ্ড নিয়ে এখনও কোনও মন্তব্য করেনি ইসরায়েল। তবে দেশটির প্রধানমন্ত্রী বেঞ্জামিন নেতানিয়াহু ২০১৮ সালে এক সংবাদ সম্মেলনে ইরান পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচি চালিয়ে যাচ্ছে দাবি করে বলেছিলেন, ‘তার (মহসিন) নামটি মনে রাখবেন।’
এক দশক ধরে ইরানের শীর্ষস্থানীয় পরমাণু বিজ্ঞানীদের ‘টার্গেট কিলিং’-এর জন্য অভিযুক্ত ইসরায়েল। নিজেরা গোপনে পারমাণবিক অস্ত্রের মজুত করলেও ইরানের সেই সক্ষমতা অর্জনকে হুমকি হিসেবে দেখে দেশটি।
২০১০ থেকে ২০১২ এই দুই বছরে ইরানের চার শীর্ষ পরমাণু বিজ্ঞানীকে হত্যা করা হয়েছে। ইরানের অভিযোগ, পশ্চিমাদের মদদে ইসরায়েলের গোপন ঘাতক বাহিনীই তাদের হত্যা করেছে।