দর্পণ ডেস্ক : যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ নিশ্চিত করতে সিনেটের শুনানিতে গুরুত্বপূর্ণ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তর সরাসরি দেননি প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প কর্তৃক মনোনীত বিচারক অ্যামি কনে ব্যারেট। শুনানির দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার রক্ষণশীল এই বিচারক গর্ভপাত, স্বাস্থ্যসেবা ও সমকামীদের অধিকার নিয়ে নিজের মতপ্রকাশ করতে বারবার অস্বীকৃতি জানিয়েছেন।

তিনি উল্লেখ করেন, তার কোনও এজেন্ডা নেই এবং আইনের শাসনের প্রতি শ্রদ্ধাশীল থাকার অঙ্গীকার ব্যক্ত করেছেন। ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি এখবর জানিয়েছে।

ট্রাম্পের দল রিপাবলিকানরা চায় ৩ নভেম্বরের নির্বাচনের আগেই সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতির শূন্য আসন পূরণ করতে। বিচারপতি হিসেবে ব্যারেট নিয়োগ পেলে দেশটির সুপ্রিমকোর্টে ৬-৩ ব্যবধানে রক্ষণশীলরা সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাবে। এতে করে আগামী কয়েক দশকের জন্য দেশটির সর্বোচ্চ আদালতে আদর্শগত ভারসাম্য বিনষ্ট হতে পারে।

বিরোধীশিবির ডেমোক্র্যাটদের আশঙ্কা, ব্যারেটকে সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ দিতে পারলে আদালতের দ্বারস্থ হওয়া যে কোনও রাজনৈতিক বিষয়ে রিপাবলিকানরা সুবিধা পাবে।

গত ১৮ সেপ্টেম্বর যুক্তরাষ্ট্রের সুপ্রিমকোর্টের সবচেয়ে বয়স্ক বিচারপতি রুথ বেডার গিন্সবার্গের মৃত্যু হয়। উদারপন্থী এই বিচারকের মৃত্যুর এক সপ্তাহের মাথায় তার স্থলে কনি ব্যারেটকে মনোনয়ন দেন ট্রাম্প।

মঙ্গলবার ছিল গভীর বিভাজিত সিনেট জুডিশিয়ারি কমিটির পক্ষ থেকে ব্যারেটকে সরাসরি জিজ্ঞাসাবাদের দ্বিতীয় দিন। এর আগে প্রথম দিন সোমবার তিনি নিজের আইনি দর্শন ও এই পদের জন্য যোগ্যতা তুলে ধরেন।

ডেমোক্র্যাটিক সিনেটররা ব্যারেটের রক্ষণশীল চিন্তাধারা ও আপিল আদালতে বিচারক হিসেবে তার দেওয়া রায় খুঁটিয়ে পর্যালোচনা করছেন। এসব নথিতে প্রয়াত বিচারপতি গিন্সবার্গের বিরোধী দর্শন প্রতিফলিত হয়েছে।

কমিটির শীর্ষ ডেমোক্র্যাট ডিয়ানে ফেইনস্টেইন গর্ভপাত ও সমকামীদের অধিকার সম্পর্কে ব্যারেটের মত জানতে চান। জবাবে বিচারপতি জানান, দায়িত্বরত বিচারক হিসেবে কোনও বিধান নিয়ে মত প্রকাশ করাটা ভুল হতে পারে। তিনি বলেন, আইনের শাসনের প্রতি অঙ্গীকারবদ্ধ থাকাই আমার এজেন্ডা। অন্য সিদ্ধান্তকে পাল্টে দেওয়ার মতো কোনও এজেন্ডা আমার নেই।

নিবেদিত ক্যাথলিক এই বিচারক উল্লেখ করেন তিনি কখনও তার ব্যক্তিগত পছন্দ ব্যক্তি বা পেশাগত জীবনে অন্য কারও উপর চাপিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করেননি।

ডেমোক্র্যাটদের আশঙ্কা ব্যারেট বিচারপতি হিসেবে নিয়োগ পেলে সাবেক প্রেসিডেন্ট বারাক ওবামার আমলে প্রণীত ওবামা কেয়ার বা অ্যাফোর্ডেবল কেয়ার অ্যাক্ট বাতিলে পক্ষে অবস্থান নিতে পারেন। এই আইনের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এই বিষয়ে মতপ্রকাশে অস্বীকৃতি জানান। দাবি করেন, শিগগিরই বিষয়টি নিয়ে আদালতে শুনানি হবে। বিচারিক বিধি আমাকে এই বিষয়ে মতপ্রকাশ থেকে বিরত রাখে।

তিনি আরও বলেন, ওবামা কেয়ারের প্রতি তার কোনও শত্রুতা নেই। আপনাদের পাস করা কোনও আইনের প্রতিই আমার বিরোধিতা নেই। আমি আইন প্রয়োগ করি, আমি আইন মেনে চলি। আপনারা নীতি তৈরি করেন।