পেশাগত পরিচয়ে আহসান ইমাম শিক্ষক। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক হিসেবে কর্মরত রয়েছেন। করেন লেখালেখি এবং গবেষণা। বিভিন্ন পত্রিকায় কলাম বিভাগে রয়েছে তার নিয়মিত অংশগ্রহণ

১৯৭১-র ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে ৩১৩ আসনের মধ্যে পূর্ব পাকিস্তানের সদস্য সংখ্যা ছিলো ১৬৯ এবং আওয়ামী লীগ ১৬৭ আসন লাভ করেছিলো। ফলে কেন্দ্রীয় সরকার গঠন করার কথা আওয়ামী লীগের। কিন্তু পাকিস্তান সরকার ক্ষমতা হস্তান্তরে টালবাহানা শুরু করে। ১৯৭১-র ১ মার্চ ইয়াহিয়া খান জাতীয় পরিষদ স্থগিত ঘোষণা করলে রুখে দাঁড়ায় বাংলাদেশ। এরই ধারাবাহিকতায় আসে ঐতিহাসিক ৭ মার্চ। রমনা-রেসকোর্সে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিশাল জনসমুদ্রে আবেগ, যুক্তি এবং ভবিষ্যৎ দিক-নির্দেশনামূলক ভাষণ দেন। তিনি বজ্রকণ্ঠে ঘোষণা করেন-

         “এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম
               এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম”

স্বাধীনতা শব্দটি হয়ে যায় দেশবাসীর। ২৫মার্চ মধ্যরাত থেকেই নিরস্ত্র নিরপরাধ মানুষের ওপর চলে জঘন্যতম হত্যাকাণ্ড। চলতে থাকে ডিসেম্বর মাস পর্যন্ত। এই সময়েই জনসাধারণের মধ্যে বিশেষ শ্লোগান সৃষ্টি হয়েছিলো। যা মুক্তযুদ্ধকালীন প্রেরণা যুগিয়েছিলো দেশবাসীকে। বিশেষভাবে মুক্তিযোদ্ধাদের অনুপ্রাণিত করেছিলো; যা আজও মানুষের মধ্যে প্রবহমান।

সেইসব স্লোগানের কয়েকটা তুলে দেয়া হলো-
(১) খোকা যাবে যুদ্ধে
     তাকে দুধের ভাত দে

(২)বীর বাঙালি অস্ত্র ধর
   বাংলাদেশ স্বাধীন কর

(৩)নদী মাঠে জঙ্গলে
   আমরা মারবো কৌশলে

(৪)বাংলার মাটি
    সোনার চেয়ে খাঁটি

(৫)চান্দে বসে পিঠা খায়
   মুক্তিসেনা আয়রে আয়

(৬)তোমার আমার ঠিকানা
    পদ্মা মেঘনা যমুনা

(৭)ধর ধর পাকসেনা ধর
    ধইরা ধইরা জবাই কর

(৮)পাকসেনাদের ঘরে
  আজরাইল বাস করে

(৯)শাহের বানু সাবধান
    ঐ দেখা যায় টিক্কা খান

(১০)ঐ যে মুক্তি সেনা
     গ্রামবাসী ভয় করে না

(১১)রাজাকার আর আলবদর
     পাকসেনাদের গুপ্তচর

(১২)শহিদের রক্ত
      বৃথা যেতে দেব না

(১৩)জয় বাংলা
      বাংলার জয়

(১৪)আমার সোনার বাংলা
    আমি তোমায় ভালবাসি।

(১৫) হই হই রই রই
     পাকবাহিনী গেল কই