দিবাকর সরকার, কলাপাড়া প্রতিনিধি : কলাপাড়ার উপকূলের নদ-নদী ও পরিবেশ শীর্ষক এক মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে। শনিবার সকালে কলাপাড়া প্রেসক্লাবে এ সভা অনুষ্ঠিত হয়। বিষয়ের ওপর ধারণাপত্র উপস্থাপন করেন প্রেসক্লাবের সভাপতি মেজবাহ উদ্দিন মাননু।

উপকূলীয় জনকল্যান সংঘের সহযোগিতায় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) এ সভার আয়োজন করে। উপকূলীয় জনকল্যান সংঘের সভাপতি মো. জয়নাল আবেদীনের সভাপতিত্বে সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্য রাখেন উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মোতালেব তালুকদার। বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন কলাপাড়া পৌরসভার মেয়র বিপুল চন্দ্র হাওলাদার, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) সাধারণ সম্পাদক আবদুল মতিন, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক শরীফ জামিল, ঢাকার অগ্রনী স্কুল এন্ড কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ শহীদুল ইসলাম বিশ্বাস, বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলনের (বাপা) যুগ্ম সম্পাদক মো. সিরাজুল ইসলাম মোল্লা।

উপস্থাপিত ধারণাপত্রে বলা হয়, সরকারের ল্যান্ডজোনিং রিপোর্ট অনুসারে সবচেয়ে বেশি কৃষিজমি রয়েছে উপজেলার ধানখালী-চম্পাপুর ইউনিয়নে। এখানকার কৃষি জমিতে শুধু ধান চাষ নয়, গত কয়েক বছর ধরে তরমুজ-বাঙ্গির চাষ হয়েছে ব্যাপকভাবে। এখানকার কৃষকরা তরমুজ-বাঙ্গি চাষ করে বছরে শত কোটি টাকা আয় করতো। এর বাইরে ধানের উৎপাদন ছিল ব্যাপকহারে। ধানখালী-চম্পাপুর ইউনিয়নের সে কৃষি জমিতে অন্তত পাঁচটি বিদ্যুৎ প্লান্ট গড়ে তোলার পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। প্রকৃতি, নদ-নদী বেষ্টিত এ উপকূলের নির্মল পরিবেশ ভবিষ্যতের জন্য বজায় থাকবে কীনা- এখন সে প্রশ্ন উঠেছে।

এ ছাড়া অন্যদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন কলাপাড়া মুক্তিযোদ্ধা সংসদের সাবেক ডেপুটি কমান্ডার হাবিবুল্লাহ রানা, উপজেলা কমিউনিষ্ট পার্টির সাধারণ সম্পাদক নাসির তালুকদার, ঘূর্ণিঝড় প্রস্ততি কর্মসূচির (সিপিপি) উপজেলা দলনেতা আবদুল মোতালেব হাওলাদার, কলাপাড়া পৌরসভার কাউন্সিলর বেগম মনোয়ারা বেগম, মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল ডিগ্রি কলেজের প্রভাষক চঞ্চল সাহা, বেসরকারি সংস্থা কোডেকের উপজেলা সমন্বয়কারী মো. রফিকুল ইসলাম, আমিরাবাদ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শাহ সুজা উদ্দিন, নারী সংগঠক জুলিয়েট বাড়ৈ, ঘূর্ণিঝড় প্রস্ততি কর্মসূচির (সিপিপি) লতাচাপলী ইউনিয়নের দলনেতা মো. শফিকুল আলম, ধানখালী ইউনিয়নের নিশানবাড়িয়া গ্রামের বাসিন্দা মিলন তালুকদার প্রমুখ বক্তব্য রাখেন।

বক্তারা সকলেই বলেন, ‘কয়লা ভিত্তিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র গড়ে তোলার কাজ শুরু হয়েছে। পরিবেশ-প্রতিবেশের কথা মাথায় রেখে এসব প্রকল্প হাতে নেওয়া উচিত ছিল। কুয়াকাটাকে রক্ষা করতে হলে এ এলাকার জন্য উপযোগী উন্নয়ন করতে হবে। নানা কারণে কুয়াকাটার পরিবেশও হুমকির মুখে পড়েছে। সেসব নিয়ে ভাবতে হবে। নদী দখল-দূষন বন্ধ না করলে নদী বাঁচবেনা। আর নদী না বাঁচলে মানুষও বাঁচবেনা। হুমকির মুখে পড়বে মানব বসতি। তা ছাড়া পটুয়াখালী এবং কলাপাড়া উপকূলে কী পরিমান শিল্প-কারখানা স্থাপন করা নিরাপদ তার কৌশলগত পরিবেশ সমীক্ষা (এসইএ) সবার আগে প্রয়োজন। সভায় অংশগ্রহনকারীগণ পরিবেশ-প্রতিবেশ এবং খাল-নদী রক্ষায় একসঙ্গে কাজ করার দৃঢ় অঙ্গীকার করেন।