তিনি বলেন, সেদিন সারাদেশে ৬ দফার পক্ষে সর্বাত্মক হরতাল পালন করা হয়। দেশের আপামর জনগণ রাজপথে নেমে এসেছিল। সেদিনের আন্দোলনে মনু মিয়াসহ ১১ জন শহিদ হয়েছিলেন তৎকালীন শাসকগোষ্ঠীর গুলিতে। সেদিন থেকেই বাঙালির স্বাধীনতা আন্দোলনের তীব্রতা বেড়ে যায়।
মঙ্গলবার সংসদে ঐতিহাসিক ৭ জুন ৬ দফা দিবসের আলোচনায় অংশ নিয়ে এসব কথা বলেন তোফায়েল আহমেদ।
সরকারি দলের সিনিয়র সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদ আলোচনার সূচনা করলে এতে অন্যদের মধ্যে অংশ নেন সরকারি দলের প্রবীণ সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু, শেখ ফজলুল করিম সেলিম এবং জাতীয় পার্টির কাজী ফিরোজ রশীদ।
আলোচনায় অংশ নিয়ে সরকারি দলের প্রবীণ সংসদ সদস্য আমির হোসেন আমু বলেন, ঐতিহাসিক ৬ দফা হলো- বাঙালি জাতির ম্যাগনা কার্টা বা মুক্তি সনদ। এর ভিত্তিতে পরবর্তীতে বাঙালি জাতির স্বাধিকার আন্দোলন পরিচালিত হয়। ছয় দফা বাস্তবায়নের দাবিতে গড়ে উঠা তীব্র আন্দোলন ও সংগ্রামের পথ বেয়ে বাঙালি জাতির পিতার নেতৃত্বে ৭০ সনে সাধারণ নির্বাচনে বিজয় এবং পরবর্তীতে মহান মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছে। ফলে ঐতিহাসিক ৭ জুন ছিল বাঙালির স্বাধিকার অর্জনের পথে এক বিশাল অধ্যায়।
আলোচনায় তোফায়েল আহমেদ বলেন, ৬ দফা দিবসে বাংলাদেশের স্বাধীনতার ভিত্তি রচিত হয়েছিল। বঙ্গবন্ধু ১৯৬৬ সালের ৫ ফেব্রুয়ারি ঐতিহাসিক ৬ দফা দিয়েছিলেন। ২৩ ফেব্রুয়ারি ধানমন্ডির ৩২ নম্বরে আওয়ামী লীগের সভায় ৬ দফাকে দলের কর্মসূচি হিসাবে গ্রহণ করা হয়। এরপর থেকে সারাদেশে ৬ দফার পক্ষে প্রচারণা ও আন্দোলনের অংশ হিসাবে সভা সমাবেশ শুরু করা হয়। সে সময় বঙ্গবন্ধু ৩৫ দিনে সারাদেশে ৩২টি জনসভা করেছিলেন। সে সময় বঙ্গবন্ধু ৮ বার গ্রেফতার হয়েছিলেন।
তিনি বলেন, আন্দোলনের ধারাবাহিকতার মধ্যে পাকিস্তানি শাসকগোষ্ঠী বঙ্গবন্ধুর বিরুদ্ধে আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলা দায়ের করে। গ্রেফতার করা হয় বঙ্গবন্ধুকে। দেশের ছাত্র সমাজসহ সর্বস্তরের জনগণের আন্দোলন সংগ্রামের তীব্রতার মধ্য দিয়ে ’৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে জাতির পিতাকে মুক্ত করে আনা হয়। এরপর ’৭০ এর নির্বাচন, ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ, ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধুর স্বাধীনতা ঘোষণা, আর রক্তক্ষয়ী সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে স্বাধীন বাংলাদেশ প্রতিষ্ঠিত হয়।