গোফরান পলাশ, পটুয়াখালী: পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় পুত্রবধূ হত্যার দায়ে শ্বশুর বাবুল কর্মকার (৫২) কে আটক করেছে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সকাল ১০ টার দিকে পৌরশহরের নতুন বাজার এলাকা থেকে তাকে আটক করা হয়। সে কলাপাড়ার আলোচিত দোলা রানী হত্যা কান্ডের আসামী।
পরে তাকে আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন কলাপাড়া থানার ওসি (তদন্ত) মো. আসাদ।
জানা গেছে, গত ২৪ মে দোলা কর্মকার বালিশ চাপা দিয়ে হত্যার পর মৃতদেহ ঝুলিয়ে রেখে আত্মহত্যার প্রচার চালায় এমন অভিযোগে দোলার মা কল্পনা রানী বাদী হয়ে পটুয়াখালী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনালে একটি মামলা দায়ের করেন। গত ৩০ মে দায়েরকৃত সেই মামলায় দোলার স্বামী সম্রাট কর্মকার, শাশুড়ি সাধনা কর্মকার, শ্বশুর বাবুল কর্মকার, ভাসুর গবিন্দ কর্মকার, মামা শ্বশুর গৌতম কর্মকার ও মামাতো ভাই নিত্য কর্মকারকে আসামি করা হয়েছে।
গত ২৪ মে পৌরশহরের চিংগড়িয়া এলাকার অধিবাসী বাবুল কর্মকারের ছেলে সম্রাট কর্মকার পারিবারিক কলহ সহ যৌতুকের দাবীতে তার ৭ মাসের অন্ত:সত্তা স্ত্রী দোলা রানীর মুখে বালিস চাপা দিয়ে শ্বাসরোধ করে তাকে হত্যা করে। এ ঘটনায় দোলা রানী’র মা কল্পনা রানী বাদী হয়ে ৩০ মে জামাতা সম্রাট কর্মকার সহ ৬ জনকে আসামী করে মামলা দায়ের করেন। এরপর থেকেই দোলা রানী হত্যার প্রধান আসামী সম্রাট কর্মকার সহ আসামীরা গা ঢাকা দেয়।
উল্লেখ্য, পটুয়াখালীর কলাপাড়া পৌর শহরের চিংগড়িয়া এলাকার বাবুল কর্মকারের ছেলে সম্রাট কর্মকারের সঙ্গে দুই বছর আগে ভালোবেসে বিয়ে হয় পৌর শহরের রহমতপুর এলাকার শ্যামল কর্মকারের মেয়ে দোলার সঙ্গে। প্রথমে পরিবার বিয়েতে রাজি না থাকলেও ভালোবাসার কাছে হার মেনে দোলার বাবা-মা বিয়েতে রাজি হয়। গত ২৪ মে নিজ ঘরের দোতলা থেকে সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা দোলার ঝুলন্ত মৃতদেহ উদ্ধার করে দোলার স্বামী। তাদের দাবি দোলা গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেছে। তবে পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে দোলার মৃতদেহ শোয়ানো অবস্থায় দেখতে পায়।কলাপাড়া প্রেসক্লাবে সংবাদ সম্মেলনে দোলার কাকা শিক্ষক অমল কর্মকার অভিযোগ করেন, দোলা ছিলেন সাত মাসের অন্তঃসত্ত্বা। দোলার স্বামী সম্রাট দোলাকে তলপেটে লাথি মারেন। এতে দোলা চিৎকার ও আর্তনাদ করলে স্বামী ও তার শাশুড়ি সাধনা রানী বালিশচাপা দিয়ে হত্যা করে দোলাকে। এরপর গলায় ওড়না পেঁচিয়ে দোলাকে ঘরের আড়ার সঙ্গে ঝুলিয়ে রাখেন।