শক্তিশালি একটি সিন্ডিকেটের ছত্রছায়ায় দীর্ঘদিন ধরে সাগরকন্যাখ্যাত কুয়াকাটার সৈকতে এমন নৈরাজ্য অব্যাহত থাকলেও প্রশাসনের ভূমিকা যেন উদাসীন। শুধু এখানেই শেষ নয়, বেঞ্চিতে বসে সমুদ্রের মোহনীয় গর্জন উপভোগ করতে অতিরিক্ত অর্থ গুনতে হয় বলে উদয় অস্তের বেলা ভূমিকে নিয়ে তীর্যক মন্তব্য ভ্রমণ পিপাসুদের।
পর্যটকদের অভিযোগ, কুয়াকাটায় প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের কোনো কমতি না থাকলেও ফটোগ্রাফার এবং ছাতা ব্যবসায়ীদের লোভনীয় অর্থচাহিদা এবং ট্যুরিস্টদের প্রতি ভালেবাসা কমতি রয়েছে। যা একটি পর্যটন কেন্দ্রে আগন্তকদের কাম্য নয়।
সরেজমিনে দেখা যায়, হলুদ টি-শার্ট গায়ে ঘুরে বেড়ানো ফটোগ্রাফাররা সৈকতের জিরো পয়েন্ট ও চৌরাস্তা দিয়ে কোনো পর্যটকদের নামতে দেখলেই তাকে ঘিরে নানা কথা ছুড়ে দিচ্ছেন। এমনকি অতিথিদের একের পর এক ফটোগ্রাফাররা নানা প্রশ্ন করছেন। এতে অনেকে বিরক্ত বোধ করেন। আবার অনেকেই মিষ্টি কথায় সাড়া দিয়ে বিড়ম্বনায় পড়ছেন।
খুলনা থেকে ঘুরতে আসা সীমা ও কাওছার দম্পতির অভিযোগ, তাদের চাহিদানুযায়ী ছবি তোলার কথা বলে ক্যামেরায় একাধিক স্যুট করেন এক ফটোগ্রাফার। পরে অতিরিক্ত ছবি নিতে অনিচ্ছা প্রকাশ করলেও তাদের সঙ্গে অসদাচরণ করে। এমনকি বেশ কয়েকজন একত্র হয়ে অতিরিক্ত অর্থ আদায় করে নেয় ওই ফটোগ্রাফার।
ঢাকার খিলক্ষেত এলাকার কলেজ শিক্ষার্থী হামিম জানান, বেশ কয়েকজন বন্ধুকে নিয়ে সমুদ্র পারে বেঞ্চিতে বসে সময় কাটাচ্ছিলেন। কিন্তু হঠাৎই পৌনে ২ ঘণ্টায় ৮০ টাকা দাবি করে বসেন এক যুবক। তার অভিযোগ দেশের অন্যান্য ট্যুরিস্ট এলাকায় বেঞ্চিতে এত টাকা তাদের কখনো দিতে হয়নি।
কুয়াকাটা ফটোগ্রাফার মালিক সমিতির সভাপতি কাজী আল-আমিন বলেন, সংগঠনে অন্তত ২০০ সদস্য রয়েছে। নিয়মানুযায়ী জিরো পয়েন্টে নয় সৈকতের পাশে ফটোগ্রাফাররা দাঁড়িয়ে থাকবেন, পর্যটকরা যাতে পছন্দমতো ফটোগ্রাফারদের নিয়ে ছবি তুলতে পারেন। তবে অতিরিক্ত কোনো কিছু করলে সাংগঠনিক ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
কুয়াকাটা ট্যুরিস্ট পুলিশের সহকারী পুলিশ সুপার আবদুল খালেক জানান, ফটোগ্রাফারদের জন্য বেশ কিছু নিয়ম করে দেওয়া হয়েছে। এর বাইরে ফটোগ্রাফররা কিছু করলে বা পর্যটকদের কাছ থেকে কোনো অভিযোগ পেলে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। এছাড়া অন্যান্য পর্যটন কেন্দ্রে যে হারে বেঞ্চ ভাড়া দেওয়া হয় এখানেও সে হারে বেঞ্চ ভাড়া ঠিক করে দেওয়া হবে।