অভিযুক্ত হাফিজুর রহমান

অবশেষ ছাত্রীর অভিযোগ ও শিক্ষার্থীদের আন্দোলনে বদলি হলেন ওই শিক্ষক। বগুড়ার পলিটেকনিক ইনস্টিটিউট থেকে তার গন্তব্য এখন পটুয়াখালী পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে। তাও আগামী ৫ জুন বিকেলের মধ্যেই তাকে করতে হবে যোগদান।

অভিযুক্ত শিক্ষকের নাম হাফিজুর রহমান। তিনি বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের পাওয়ার বিভাগের চিফ ইনস্ট্রাক্টর। সম্প্রতি তার বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ তোলেন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির পাওয়ার বিভাগের এক ছাত্রী।

অভিযোগের ভিত্তিতে বৃহস্পতিবার কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড থেকে হাফিজুরকে বদলির আদেশ দেওয়া হয়। তাকে বদলির বিষয়টি নিশ্চিত করেন বগুড়া পলিটেকনিক ইনস্টিটিউটের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আবু সাইম জাহান।

ভুক্তভোগী ছাত্রীর অভিযোগ, তৃতীয় সেমিস্টার পরীক্ষায় একটি বিষয়ে তাকে রেফার্ড করেন হাফিজুর রহমান। রেফার্ড বিষয়ের জন্য তিনি ১৫০০ টাকা নেন। তখন থেকেই হাফিজুর তাকে বিভিন্নভাবে যৌন হয়রানি করে আসছেন। পরবর্তীতে চতুর্থ সেমিস্টারে ফেল করিয়ে দেওয়ার হুমকি দেন হাফিজুর। এরপরই তাকে আধা ঘণ্টার জন্য নিজ বাসায় আসতে বলেন শিক্ষক হাফিজুর। এছাড়া হাফিজুর ক্লাসে এসে হিজাব খুলে মুখ দেখাতে বাধ্য করেন তাকে। আর মাঝেমধ্যেই পর্ন ভিডিও দেখার কথাও বলেন। শুধু তাই নয়, ক্লাসে এসে অশ্লীল ভিডিও নিয়ে আলোচনা করেন শিক্ষক হাফিজুর।

বৃহস্পতিবার সকালে শিক্ষক হাফিজুর রহমানের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে ওই প্রতিষ্ঠানে বিক্ষাভ সমাবেশ করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের সঙ্গে প্রতিষ্ঠানটির কয়েকজন শিক্ষকও যোগ দেন। শিক্ষার্থীরা ক্লাস বর্জন করে প্রতিষ্ঠান প্রাঙ্গনেই এ আন্দোলন করেন।

অভিযুক্ত শিক্ষক হাফিজুর জানান, তার বিরুদ্ধে কী কারণে অভিযোগ উঠেছে বিষয়টি জানেন না। তারা শিক্ষক, এখন কে কী করল, কোথায় কী করল এ বিষয়ে তার কিছু জানা নেই। শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেন, এভাবেই তার জীবন চলছে। তবে তার বদলির বিষয়টি স্বীকার করেন তিনি।

জানতে চাইলে অধ্যক্ষ মো. আবু সাইম জাহান বলেন, সম্প্রতি পাওয়ার বিভাগের এক ছাত্রী হাফিজুরের বিরুদ্ধে যৌন হয়রানির অভিযোগ করেন। তার অভিযোগ তদন্ত করে প্রাথমিকভাবে সত্যতা পাওয়া যায়। পরবর্তীতে সেই প্রতিবেদন কারিগরি ও মাদরাসা শিক্ষা বোর্ডে পাঠানো হয়। প্রতিবেদন পাওয়ার পর বৃহস্পতিবার হাফিজুরকে বদলির নির্দেশ দেওয়া হয়। তাকে আগামী ৫ জুন বিকেলের মধ্যে পটুয়াখালী পলিটেকনিক্যাল ইনস্টিটিউটে যোগদান করতে হবে। তিনি নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে যোগদানে ব্যর্থ হলে তাকে বগুড়ার শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান থেকে তাৎক্ষণিক অবমুক্ত ঘোষণা করা হবে।