অনলাইন ডেস্ক : কারাগারে পোকামাকড়ের দংশনে খালেদা জিয়া গুরুতর অসুস্থ হয়ে পড়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী। আজ বুধবার দুপুরে রাজধানীর নয়াপল্টনে বিএনপির কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ অভিযোগ করেন তিনি।
রিজভী বলেন, ‘গতকাল খালেদা জিয়ার সঙ্গে সাক্ষাতের জন্য নিকটাত্মীয়রা পুরান ঢাকার কেন্দ্রীয় কারাগারে গিয়েছিলেন। স্যাঁতস্যাঁতে, জ্বরাজীর্ণ ভবন দীর্ঘদিন পরিত্যাক্ত থাকলে যা হয় এখন সেইরকমই আবাসযোগ্য ও নানা অসুখ-বিসুখ আক্রমণের কেন্দ্রস্থলে পরিণত হয়েছে খালেদা জিয়ার কক্ষটি। অসংখ্য পোকামাকড়ে আর্কীণ কক্ষটিতে থাকা যেন নরকবাস। তার ঘাড়ে প্রচণ্ড ব্যথা ও বাম হাতটা অবিরাম ব্যথার কারণে শক্ত হয়ে উঠেছে। দুই পায়ে ক্রমাগত ব্যথা হচ্ছে এবং সেগুলো ভারি ও ফুলে উঠছে।’

খালেদা জিয়ার শারীরিক অবস্থা সম্পর্কে তিনি আরও বলেন, ‘মাত্র কিছুদিন আগে চোখে অস্ত্রোপচার হওয়ার কারণে তার দুই চোখই সারাক্ষণ জ্বালাপোড়া করতে থাকে। এর সঙ্গে বহুপ্রাচীন দেয়ালগুলো থেকে ঝরেপড়া সিমেন্ট ও বালি চোখ দুটোর অবস্থা আরও গুরুতর অবনতির দিকে ঠেলে দিচ্ছে।’
সংবাদ সম্মেলনে বিএনপির এ নেতা বলেন, ‘রাজক্রোধে খালেদা জিয়াকে বন্দী করে রাখা হয়েছে। বিএনপিকে ধ্বংস করাই যেন প্রধানমন্ত্রীর এ সময়ের প্রধান এজেন্ডা। আর এই এজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে গিয়েই প্রতিহিংসা চরিতার্থ করা হচ্ছে খালেদা জিয়াকে অবৈধ ক্ষমতার জোরে বন্দী করে রেখে ধুঁকেধুঁকে তাঁকে কষ্ট দিতে।’
খালেদা জিয়ার চিকিৎসা প্রসঙ্গে রিজভী বলেন, ‘সরকারের নির্দেশিত চিকিৎসকদেরও পরামর্শ জেল কর্তৃপক্ষ কানে তোলেননি। কারণ কর্তৃপক্ষের পেছনে দাঁড়িয়ে আছে সরকারি হুংকার। এই কারণে এখন পর্যন্ত তাঁকে অর্থপেডিক্স বেড দেওয়া হয়নি। তার চিকিৎসা নিয়ে আর ছিনিমিনি খেলতে দেওয়া হবে না। অত্যাচারীর দুঃশাসনের অবসান করতে জনগণের প্রতিজ্ঞা কখনোই নিস্ফল হয়নি।’
তিনি আরও বলেন, ‘ভোটারবিহীন আওয়ামী সরকার দম্ভে ও গর্বে আত্মস্ফীত হওয়ার কারণেই নিজেরাই বেআইনি অপরাধ করতে কুণ্ঠিত হচ্ছে না। দেশব্যাপী মাদক নির্মূলের অভিযানে মানুষ হত্যার আতিশয্যে এক বিকারগ্রস্ত পন্থা চারদিকে দৃশ্যমান হচ্ছে।’
দেশে চলমান মাদকবিরোধী অভিযানের বিষয়টি উল্লেখ করে রিজভী বলেন, ‘মাদকের পশ্চাদভূমি বন্ধ না করে, গডফাদারদের না ধরে শুধু ক্রসফায়ারের হিড়িক অব্যাহত রাখলেই মাদক নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না। সারা দেশে মাদকের নেটওয়ার্ক গড়ে উঠেছে এই ক্ষমতাসীনদের আমলে, ক্ষমতাবানদের পৃষ্ঠপোষকতায়। এই সকল ঘটনার মধ্য দিয়ে তারা দেশকে রক্তাক্ত নির্বাচনের দিকে নিয়ে যায় কিনা সেটি নিয়েও এখন মানুষ ভাবছে।’