গোপালগঞ্জ

‘ঘূর্নিঝড় বুলবুলের কবলে পড়ে গাছের গোড়ায় ৭ দিন পানি জমেছিল, তবুও গাছ মরেনি’

গোপালগঞ্জে বাংলাদেশ পরমাণু কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিনা) উদ্ভাবিত মানব দেহের জন্য সহনশীল বিনাখেসারি-১ এর বাম্পার ফলন হয়েছে।

প্রতি হেক্টরে এ জাতের খেসারি ১ হাজার ৬০০ কেজি উৎপাদিত হয়েছে। বিনা গোপালগঞ্জ উপকেন্দ্র আয়োজিত মাঠ দিবস থেকে এ তথ্য জানা গেছে।

বৃহস্পতিবার (১২ মার্চ) গোপালগঞ্জের টুঙ্গিপাড়া উপজেলার পাটগাতী সরদারপাড়া গ্রামে অনুষ্ঠিত মাঠ দিবসে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এ তথ্য দেন গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসারণের উপ-পরিচালক রমেশ চন্দ্র ব্রহ্ম। 

গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মোর্শেদুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত মাঠ দিবসে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের কৃষি বিভাগের সহকারী অধ্যাপক নাজমুল হক শাহিন, জেলা বীজ প্রত্যয়ন কর্মকর্তা হাসান মো. ওয়ারীসুল কবির, টুঙ্গিপাড়া উপজেলা কৃষি অফিসার মো. জামাল উদ্দিন, বিনার ফার্ম ম্যানেজার মো. আলমগীর কবির, কৃষক বাকা শেখ প্রমুখ বক্তব্য দেন। 

মাঠ দিবসের বক্তব্যে কৃষক বাকা শেখ বলেন, ক্ষেতে খেসারি বপণের পর চারা গজায়। তারপর ঘূর্নিঝড় বুলবুলের কবলে পড়ে গাছের গোড়ায় ৭ দিন পানি জমেছিল, তবুও গাছ মরেনি! তাই  কৃষি বিভাগের পরামর্শে সার প্রয়োগ ও ক্ষেতের পরিচর্যা করি। এ অবস্থায় বিনাখেসারি-১ বাম্পার ফলন দিয়েছে। কিন্তু স্থানীয় জাতের খেসারি গাছ বৃষ্টিতে মারা যায়। 

একই গ্রামের কৃষক রহমত আলী বলেন, প্রতিকূলতা সহিষ্ণু বিনাখেসারি-১ ভাল ফলন দিয়েছে। আগামী বছর আমরা এ খেসারি আবাদ করবো।

গোপালগঞ্জ বিনা উপকেন্দ্রের বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা মো. মোর্শেদুল ইসলাম বলেন, এ খোসারিতে মানবদেহের জন্য ক্ষতিকর নিউরোটিক্সক সহনীয় ০.২৩% রয়েছে। তাই এ ডাল খেলে ল্যাথারিজম রোগ হওয়ার আশংকা নেই। এ জাত রোগবালাই প্রতিরোধ  ক্ষমতা সম্পন্ন। জীবনকাল ১১৫ থেকে ১২৫ দিন। স্থানীয় জাতের তুলনায় প্রায় দ্বিগুণ ফলন দেয়। তাই এ ডালের আবাদ করে কৃষক লাভবান হন। এ জাতের আবাদ সম্প্রসারিত হলে দেশে ডালের উৎপাদন বৃদ্ধি পাবে।

গোপালগঞ্জ কৃষি সম্প্রসাণের উপ-পরিচালক রমেশ চন্দ্র ব্রহ্ম বলেন, বিনা উদ্ভাবিত প্রতিটি ফসলের জাত উচ্চ ফলনশীল ও এর বীজ পরবর্তী বছরের চাষাবাদের জন্য রাখা যায়। বিনার ফসলের জাতগুলো প্রতিকূলতা সহিষ্ণু। তাই  গোপালগঞ্জের কৃষক বিনা উদ্ভাবিত ফসল আবাদ করে তাদের আর্থসামাজিক অবস্থার পরিবর্তন ঘটাচ্ছেন।