দর্পণ ডেস্ক : স্থায়ী ঠিকানা যাদবপুর, কলকাতা। বর্তমান ঠিকানা মুম্বাই। তিনি নয়না গঙ্গোপাধ্যায়। শনিবার (২৯ সেপ্টেম্বর) থেকে ‘হইচই’ প্ল্যাটফর্মে দেবালয় ভট্টাচার্য পরিচালিত ওয়েব সিরিজ ‘চরিত্রহীন’-এর স্ট্রিমিং শুরু। সেখানে সকলকে চমকে দিয়েছেন নয়না।
সম্প্রতি ভারতীয় আনন্দবাজার পত্রিকাকে একটি সাক্ষাতকার দিয়েছেন তিনি। দর্পণ প্রতিদিন পাঠকদের জন্য সাক্ষাতকারটি তুলে ধরা হলো-
আপনার অভিনয়ের শুরু কীভাবে?
রামগোপাল বর্মার হাউজ থেকে প্রথম আমি তেলুগু ছবি করি। ‘বঙ্গা বেটি’। অডিশন নিয়ে আমাকে ব্রেক দিয়েছিলেন রামগোপাল স্যর।
তার পর?
ওই কাজটা ভালো লাগার পর আমাকে ‘মেরি বেটি সানি লিওন বাননা চাহতি হ্যায়’ নামের একটা শর্ট ফিল্মে সুযোগ দেন। সেটা করেছিলাম মকরান্দ (দেশপাণ্ডে) স্যরের সঙ্গে। তারপর আর একটা ওয়েব সিরিজ ‘গণশন থাইস’। খুব হিট হয়েছিল সেটা। রামগোপাল স্যরেরই একটা লভ স্টোরি কমপ্লিট করেছি। নভেম্বরে রিলিজ হবে। বলিউডে। বিগ প্রজেক্ট। নামটা এখনই বলতে পারছি না। সরি…।
‘চরিত্রহীন’ কি বাংলায় আপনার প্রথম কাজ?
হ্যাঁ, এটাই বাংলাতে প্রথম।
কীভাবে সুযোগ পেলেন?
মুম্বাইতে কাস্টিং ডিরেক্টররা আমাকে প্রথম এমন একটা প্রজেক্টের কথা বলেছিলেন। দেবালয় (পরিচালক) স্যারের সঙ্গে তার পর কথা হয়। উনি ‘মেরি বেটি…’ দেখেছিলেন। সেখানে আমার চোখ ভালো লেগেছিল। এক্সপ্রেশন ভালো লেগেছিল। দেবালয় স্যারের কাছেই ফোনে স্টোরিটা প্রথম শুনেছিলাম। খুব ভালো লেগেছিল। আমার এই ধরনের গল্প ভালো লাগে বরাবরই। অভিনয়ের সুযোগ থাকে। বলিউডে তো লভ স্টোরিই বেশি হয়।
‘চরিত্রহীন’ এর ট্রেলার নিয়ে বেশ আলোচনা হচ্ছে, জানেন?
হ্যাঁ, আমি শুনেছি। খুব হিট হয়েছে।
হিট, নাকি খোলামেলা দৃশ্য নিয়ে আলোচনা?
দেখুন, আমি যাদের সঙ্গে কাজ করেছি প্রত্যেকেই কলকাতায় জনপ্রিয়। আমার কাছে নতুন ছিল ঠিকই। তবে সবাই খুব হেল্প করেছে।
আর এই খোলামেলা দৃশ্যে অভিনয় করতে সমস্যা হয়নি? আপনার কাছে তো সকলেই নতুন ছিলেন…
আমার একটা প্রজেক্টেও এখনও পর্যন্ত এই ধরনের সিন হয়নি। এখানে স্টোরিতে এমন সিনের ডিমান্ড ছিল। প্রথমে পারছিলাম না। এটা স্বীকার করব। যদিও শুটিং চলছিল যখন সবাইকে বের করে দেওয়া হয়েছিল।
তারপর?
সৌরভ (দাস) ছিল। ও খুব ইয়ার্কি করে। কমফর্ট দেয়। আমাকে বলেছিল, আরে টেনশন করিস না হয়ে যাবে। সৌরভ বা গৌরব (চট্টোপাধ্যায়), কাউকেই চিনতাম না। প্রথমে একটু অস্বস্তি ছিল। তবে আমি যেহেতু আর্টিস্ট, এটা আমার কাজ, করে ফেলেছি। আর দেবালয় স্যার ছাড়া প্রজেক্টটা করতে পারতাম না। প্রত্যেকটা সিনে আমাকে বুঝিয়েছে। কেমন এক্সপ্রেশন দেব বুঝিয়ে দিয়েছিল। ‘কিরণময়ী’র চরিত্রটা আমার জন্য কিন্তু কঠিন ছিল।
প্রথম বাংলা প্রজেক্টেই আপনি বেশ সাহসী, কিন্তু চরিত্রের প্রয়োজনে ক্যামেরার সামনে কতটা সাহসী হতে পারবেন?
দেখুন, যখন কোনও অফার আসে, তখনই আমি জেনে নিই কী করতে হবে। আমার একটা লিমিট আছে। সেটা ক্রস করব না। আমি যতটা কমফর্টেবল ততটাই অনস্ক্রিন শরীর দেখাব।
সেটা কতটা? ন্যুড সিন ক্যারেক্টার ডিমান্ড করলে করবেন?
না! (হেসে) ন্যুড সিন করব না। ডিমান্ড থাকলেও না। কারণ আমার ফ্যামিলি আছে, সেটা মনে রাখতে হবে।
আপনি কি ছোট থেকেই অভিনয় করতে চেয়েছিলেন?
না না। ছোট থেকে অভিনয়ের কোনও ইচ্ছে ছিল না। এখন করছি। ছোটবেলায় স্পোর্টস ভালো লাগতো। স্কুলে স্পোর্টসে ফার্স্ট হতাম। তবে এখন তেলুগু, তামিল, বলিউড সব জায়গা থেকে অফার আসছে। আমি সব ইন্ডাস্ট্রি কভারও করতে চাইছি। একটা তামিল প্রজেক্ট শুরু করছি ৩ অক্টোবর থেকে। তামিলের এক বড় স্টারের ছেলের সঙ্গে। তামিলে ওটাই আমার প্রথম প্রজেক্ট।
প্রায় সব রকম ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করছেন, কাস্টিং কাউচ ফেস করেছেন কখনও?
না, কখনও কাস্টিং কাউচ ফেস করিনি। আমি ১০০ শতাংশ দিয়ে কাজ করি। আর কাজে প্রমাণ না করতে পারলে এত অফার আসতো না। কাস্টিং কাউচের মাধ্যমে এগোলে অফার সব সময় তো আসে না। আমি কাজেই ফোকাস করেছি। সব ইন্ডাস্ট্রিতে কাজ করতে চাই। ভাষা জানি না হয়তো, কিন্তু শিখে নেওয়ার চেষ্টা করি। মুম্বাইতে বাঙালিদের মেধাকে খুব শ্রদ্ধা করা হয় আমি দেখেছি। আমিও অভিনয় দিয়ে মুম্বাইতে নিজের জায়গাটা তৈরি করতে চাই।