সাইফুল্লাহ নাসির,বরগুনা প্রতিনিধিঃ চাঁদা না পেয়ে ‘জিমি ব্রিকস্’র অফিস ভাংচুর করে সাড়ে বার লাখ টাকা লুটপাটের অভিযোগ করা হয়েছে।এ শুক্রবার বিকেলের এ ঘটনায় ওইদিন রাতে আমতলী থানায় অভিযোগ দাখিল করা হয়েছে।ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে পুলিশ।
জানা গেছে,২০১২ সালে আমতলী উপজেলার সেকান্দারখালী নামক স্থানে আবুল বাশার নয়ন মৃধা ৫ একর ৭৮ শতাংশ জমি ক্রয় করে ইটভাটা নির্মাণ করেন।ইটভাটার নাম দেয়া হয় জিমি ব্রিকস। গত ৬ বছর ভালো ভাবেই চলছিল ব্রিকস ব্যবসা।ওই ব্রিকসে ইট নির্মাণ করার জন্য গত ০১ অক্টোবর থেকে জিমি ব্রিকস’র মালিক আবুল বাশার নয়ন মৃধা কাজ শুরু করেন।কাজের শুরুতেই স্থানীয় সন্ত্রাসী হত্যা ও অস্ত্রসহ একাধিক মামলার আসামী রোমান হাওলাদার ও তার সহযোগী তপন এবং পলাশ ইটভাটার মালিক আবুল বাশার নয়ন মৃধার কাছে ২৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে।ওই টাকা না দিলে ব্রিকস বন্ধ করার হুমকি দেয় সন্ত্রাসীরা।
শুক্রবার ওই ব্রিকসে কাজ করছিল শ্রমিকরা।ওইদিন বিকেল তিনটার দিকে প্রকাশ্যে সন্ত্রাসী রুমেন, রুয়েন,পলাশ,ররিউল,রাদিউল ও মামুনসহ ২০/২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী দল শ্রমিকদের কাজ বন্ধ করে দেয় এবং ব্রিকসের স্থাপনা ও অফিস ঘর ভাংচুর করে।পরে অফিসের আলমিরা ভেঙ্গে ইট বিক্রির সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা লুটপাট করে নেয় এবং সিসি ক্যামেরা ভেঙ্গে ফেলে।খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে।এ ঘটনায় শুক্রবার রাতে ইটভাটার মালিক আবুল বাশার নয়ন মৃধা বাদী হয়ে আমতলী থানায় রুমেন হালাদারকে প্রধান আসামী করে ২০ জনের নামে একটি অভিযোগ দাখিল করেছেন।
সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে দেখা গেছে, ২০/২৫ জনের একটি সন্ত্রাসী দল ইটভাটার অফিসের সিসি ক্যামেরা ও অফিসের তালা ভাঙ্গার চেষ্টা করছে এবং প্রকাশ্যে লাঠিসোটা নিয়ে মহড়া দিচ্ছে।
প্রত্যক্ষদর্শী লিটন ও আবদুল আজিজ সরদার জানান,সন্ত্রাসী রুমেন,রাকিব ও তার ২০/২৫ জন সহযোগী নিয়ে ইটভাটায় ঢুকে অফিস ভাংচুর করে।এ সময় আমরা প্রতিহত করার চেষ্টা করলে আমাদের ধারালো অস্ত্র দিয়ে ধাওয়া করে। আমরা অল্পের জন্য রক্ষা পাই।পরে অফিসের সিসি ক্যামেরা ও আলমিরা ভেঙ্গে টাকা ও কম্পিউটারের যন্ত্রাংশ লুটপাট করে নিয়ে যায়।তারা আরো জানান, সন্ত্রাসীরা যাওয়ার পথে ইটভাটার একটি নতুন ভবন ভেঙ্গে ফেলেছে।
জিমি ব্রিকসের ম্যানেজার মোঃ মোশাররফ সিকদার জানান,সন্ত্রাসীরা অফিসের সিসি ক্যামেরা ও আলমিরা ভেঙ্গে ইট বিক্রির সাড়ে ১২ লক্ষ টাকা লুট করে নিয়ে গেছে।তিনি আরও জানান,সন্ত্রাসী রুমেন ও তার সহযোগীরা যাওয়ার পথে আমাকে মেরে ফেলার হুমকি দিয়েছে।
জিমি ব্রিকসের মালিক মোঃ আবুল বাশার নয়ন মৃধা অভিযোগ করে বলেন,সন্ত্রাসী রোমান হাওলাদার, তপন ও পলাশসহ তার সহযোগীরা আমার কাছে পঁচিশ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবী করে।আমি চাঁদা না দিলে আমার ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেয়।সন্ত্রাসীদের দাবীকৃত চাঁদা না দেয়ায় তারা আমার ভাটার অফিস ও সিসি ক্যামরো ভেঙ্গে সাড়ে বার লক্ষ টাকা ও কম্পিউটারের মনিটর লুট করে নিয়ে গেছে।সন্ত্রাসী রোমেন ও তার সহযোগীরা অফিস ভাংচুর ও টাকা লুটপাত করে নিয়ে যাওয়ার সময় আমার একটি নতুন স্থাপনা গুড়িয়ে দিয়েছে।তিনি আরো বলেন,সন্ত্রাসীরা আমাকে সার্বক্ষনিক জীবন নাশের হুমকি দিচ্ছে।আমি সন্ত্রাসীদের ভয়ে ঠিকমত ব্যবসা করতে পারছি না।আমার জীবন এখন হুমকির মুখে।
এ অভিযোগের বিষয়ে রোমান হাওলাদার মুঠোফোনে বলেন,ব্রিক ফিল্ডের মধ্যে আমাদের জমি রয়েছে। ওই জমি দাবী করায় নয়ন মৃধা আমাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অভিযোগ করছে।কিন্তু সিসি ক্যামেরার ভিডিও ফুটেজে ব্রিকস ফিল্ডের অফিস,সিসি ক্যামেরা ভাংচুর,লাঠিসোটা নিয়ে মহড়া ও লুটপাটের বিষয়ে কোন সদুত্তোর দিতে পারেনি।
আমতলী থানার ওসি মোঃ আলাউদ্দিন মিলন বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছি। এ ঘটনায় অভিযোগ পেয়েছি। তদন্তপূর্বক আইনানুগ ব্যবস্থা নেয়া হবে।