দর্পণ ডেস্ক : দিলদার নামটি শুনলেই সিনেমাতে বাড়তি বিনোদনের আহ্বান। গল্পে আর চরিত্রে তিনি দুঃখ ভুলানো মানুষ। ছবি দেখতে দেখতে কষ্ট-বেদনায় মন যখন আচ্ছন্ন হয়ে থাকতো তখনই তিনি হাজির হতেন হাসির সুবাস ছড়িয়ে।
বাস্তবতার দৈনন্দিন ঘানি টানা শেষে ক্লান্ত শরীরে সাধারণ দর্শক যখন তার অভিনয় দেখতেন, তখন তারা মুগ্ধ হতেন, প্রাণ খুলে হাসতেন, ভুলে যেতেন সারা দিনের সব কষ্ট। তার হাঁটা-চলা, বাচন ভঙ্গি, অভিনয়ের সাবলীলতার পরতে পরতে থাকতো আনন্দের ছড়াছড়ি।
শুধু তাই নয়, তার অভিনীত চলচ্চিত্রের কাহিনিতে কিংবা নায়ক-নায়িকার অভিনয় দক্ষতায় ঘাটতি থাকলেও দর্শক সেটি দেখতে এতটুকু বিরক্ত হননি। এমনকি অনেক চলচ্চিত্রের শেষ দৃশ্যে তার সংলাপ দিয়েই কাহিনির শেষ হওয়াটা স্বাভাবিক ব্যাপারে পরিণত হয়েছিল এই ইন্ডাস্ট্রিতে।
তিনি দিলদার। একটা সময় ছিলো যখন, কেউ কাউকে হাসালেই তাকে ‘দিলদার’ উপাধি দেয়া হতো। বলা চলে প্রবাদে পরিণত হয়েছিলেন এই অভিনেতা। আশি-নব্বই দশকের চলচ্চিত্রে দিলদার আর কৌতুক হয়ে ওঠেছিলো সমার্থক।
অনেকদিন হলো তিনি আর বেঁচে নেই। তাকে আর মনেও পড়ে না তেমন করে। নিরবেই চলে যায় এই অভিনেতার জন্ম-মৃত্যুদিন। আজ ১৩ জুলাই দিলদারের ১৬তম মৃত্যুবার্ষিকী। আজও সিনেমাপাড়ায় তেমন কোনো আয়োজন চোখে পড়েনি তাকে নিয়ে।
২০০৩ সালের এই দিনে ৫৮ বছর বয়সে তিনি জীবনের মায়া কাটিয়ে চিরদিনের মতো পৃথিবী ত্যাগ করেন। এতগুলো বছর পেরিয়েও দর্শকের মনে দিলদার থেকে গেছেন অসংখ চলচ্চিত্রে তার দুর্দান্ত অভিনয়ে; কৌতুক অভিনেতার কিংবিদন্তি হয়ে।
১৯৪৫ সালের ১৩ জানুয়ারি চাঁদপুরে জন্মগ্রহণ করেন দিলদার। তিনি এসএসসি পাশ করার পর পড়াশোনার ইতি টানেন।
সেরা কৌতুক অভিনেতা হিসেবে ২০০৩ সালে ‘তুমি শুধু আমার’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের সুবাদে তিনি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারও লাভ করেন। জীবনভর অভিনয় করে যে বছর সেরার স্বীকৃতি পেলেন সে বছরই তিনি দেশ বিদেশে বাংলা ছবির কোটি কোটি দর্শককে শোক সাগরে ভাসিয়ে চলে গেলেন আর না ফেরার দেশে।
তার মৃত্যুর পর আরও অনেক কৌতুক অভিনেতাই এসেছেন, আবার সময়ের স্রোতে হারিয়েও গেছেন। কিন্তু কেউই দিলদারের অভাব পূরণ করতে পারেননি।