দর্পণ ডেস্ক : ইউরোপীয় ইউনিয়ন (ইইউ) ত্যাগে তথা ব্রেক্সিট ইস্যুতে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী টেরেসা মের মন্ত্রিসভায় পদত্যাগের হিড়িক পড়েছে। বৃহস্পতিবার এক ঘণ্টার মধ্যে দুজন মন্ত্রী পদত্যাগ করেছেন। উভয় মন্ত্রী মের ব্রেক্সিট নীতির বিরোধিতা করে মন্ত্রিত্ব ছাড়েন।
বৃহস্পতিবার প্রথমে পদত্যাগ করেন উত্তর আয়ারল্যান্ড বিষয়ক জুনিয়র মন্ত্রী শেইলেশ ভারা। এর এক ঘণ্টার মধ্যে পদত্যাগ করেন ব্রেক্সিট বিষয়ক মন্ত্রী ডমিনিক রাব। অথচ এর আগের দিন বুধবার মন্ত্রিসভার সঙ্গে পাঁচ ঘণ্টার বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রী মে জানিয়েছেন, ব্রেক্সিট চুক্তির ব্যাপারে মন্ত্রিসভার সার্বিক সমর্থন তিনি নিশ্চিত করেছেন।
ব্রেক্সিট বিতর্কে ব্রিটিশ মন্ত্রীর পদত্যাগের ঘটনা এটাই প্রথম নয়। এর আগে গত জুলাইয়ে ব্রেক্সিট বিষয়ক মন্ত্রী ডেভিড ডেভিস ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী বরিস জনসন প্রধানমন্ত্রী মের সঙ্গে মতানৈক্যের জেরে মন্ত্রিত্ব থেকে সরে দাঁড়ান।
এছাড়া পদত্যাগকারী রাব স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তিনি প্রধানমন্ত্রীর প্রস্তাবিত ব্রেক্সিট চুক্তিতে সমর্থন দেবেন না। প্রধানমন্ত্রীর উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘প্রস্তাবিত চুক্তিতে যেসব শর্তের কথা বলা হয়েছে এবং আমাদের ইশতেহারে আমরা দেশের প্রতি যে অঙ্গীকার করেছি, এ দুয়ের মধ্যে আমি সমন্বয় ঘটাতে পারব না। আপনি যে বিশ্বাস নিয়ে এ চুক্তির পেছনে ছুটছেন, তাতে আপনি এমন একজন ব্রেক্সিটমন্ত্রী পাওয়ার অধিকার রাখেন, যিনি এ চুক্তির পক্ষে কাজ করতে পারবেন। আমার অবশ্যই পদত্যাগ করা উচিত।’ প্রস্তাবিত চুক্তিতে উত্তর আয়ারল্যান্ডের বিষয়ে নিজের আপত্তির কারণ ব্যাখ্যায় তিনি জানান, উত্তর আয়ারল্যান্ডের জন্য যে জবাবদিহিমূলক শাসন ব্যবস্থার কথা চুক্তিতে বলা হয়েছে, তা গোটা যুক্তরাজ্যের ঐক্যের জন্য ‘সত্যিকার অর্থে মারাত্মক হুমকি’।
প্রধানমন্ত্রী মের কাছে ব্রেক্সিট চুক্তির মানে হলো নিজেদের অর্থ, আইন ও সীমন্তের ওপর নিয়ন্ত্রণ ফিরে পাওয়া, ব্রিটেনে মানুষের অবাধ যাতায়াতের ইতি ঘটা, সেই সঙ্গে কর্মসংস্থান, নিরাপত্তা ও ‘আমাদের ঐক্যের’ সুরক্ষা। তবে ব্রেক্সিট ইস্যুতে ‘সামনে কঠিন দিন আসছে’, সেটা তিনি স্বীকার করে নিয়ে মন্ত্রীদের সহানুভূতি আদায়ের চেষ্টা করেছেন।
বেলজিয়ামের রাজধানী ব্রাসেলসে ইউরোপীয় কাউন্সিলের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড টাস্ক জানিয়েছেন, প্রস্তাবিত ব্রেক্সিট চুক্তি পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে নিজেদের মধ্যে ঐকমত্যে পৌঁছানো এবং ঘোষণা দেয়ার জন্য ইইউর সদস্য দেশগুলো আগামী মঙ্গলবার পর্যন্ত সময় পাবে। এ প্রক্রিয়া সম্পন্ন হলে আগামী ২৫ নভেম্বর চুক্তি স্বাক্ষরের উদ্দেশ্যে ইইউর সম্মেলন শুরুর প্রস্তুতি নেয়া হবে। সূত্র : এএফপি।