ইস্তাম্বুল

নেপোলিয়ন বোনাপার্ত একবার বলেছিলেন, ‘পুরো পৃথিবীকে যদি একটি রাজ্য ভাবা হয়, ইস্তাম্বুল হবে তার রাজধানী’

তুরস্কের ইস্তাম্বুল একটি শুধু শহরই নয় বরং বলা চলে একটি কিংবদন্তি। এশিয়া ও ইউরোপকে একত্রে বলা হয় ইউরেশিয়া, যার বিভাজন রেখা হলো বসফোরাস, আর এই বরফোরাস প্রণালীর অবস্থান প্রাচীন ইস্তাম্বুল শহরে। শহরটি বিশ্বের অন্যতম সুন্দর একটি শহর। 

ইস্তাম্বুল ইউনেস্কোর তালিকায় ইউরোপের রাজধানী শহরের মর্যাদা পেয়েছিল ২০১০ সালে। এটাই একমাত্র শহর যার ভৌগোলিক অবস্থান দুই মহাদেশে। পরিকল্পিত শহরটি দেখতে স্বপ্নের জগতের মতো। 

ইস্তাম্বুলের ইতিহাসে অসংখ্য সাম্রাজ্যের উত্থান-পতন ঘটেছিল। একসময় এই ইস্তাম্বুল শহরই ছিল তুরস্কের রাজধানী। তবে, প্রথম বিশ্বযুদ্ধের পর শহরটি অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল বলে রাজধানী স্থানান্তরিত করা হয়। তাই বলে প্রাচীন রাজধানী ইস্তাম্বুলের গুরুত্ব কোনো অংশে জনপ্রিয়তায় ভাটা পড়েনি। একসময় ইস্তাম্বুলই ছিল পৃথিবী শাসনকারী বাইজানটাইন ও পরবর্তীতে অটোম্যান সাম্রাজ্যের রাজধানী। 

একবার নেপোলিয়ন বোনাপার্ত বলেছিলেন, “পুরো পৃথিবীকে যদি একটি রাজ্য ভাবা হয়, ইস্তাম্বুল হবে তার রাজধানী।”

ইস্তাম্বুলের গ্র্যান্ডবাজার এশিয়ার একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী বিশাল বাজার। সংগৃহীত

ইস্তাম্বুলের গ্র্যান্ডবাজার এশিয়ার একটি প্রাচীন ও ঐতিহ্যবাহী বিশাল বাজার। এখানে প্রাচীন ঐতিহ্য ও আধুনিক রুচির এক অপরূপ সমন্বয় ঘটেছে। আরবি জীবনধারার সাথে এশীয় জীবন-প্রবাহের এক প্রাণবন্ত মিশ্রণ। মুসলিম সংস্কৃতির সাথে পাশ্চাত্য সংস্কৃতির সেতুবন্ধন এখানে স্পষ্ট অনুভব করা যায়। ছোট ছোট দোকানগুলো পণ্যদ্রব্যে ভরপুর। কী নেই এখানে? সোনা-দানা, মণি-মুক্তা থেকে শুরু করে জামা-কাপড়-কার্পেট, চামড়াজাতীয় জিনিস, হাতের চুড়ি, খোপার কাঁটা সবকিছুই রয়েছে এখানে। এছাড়াও ঐতিহাসিক হিপোড্রোম বা সুলতান আহমদ স্কয়ার ইস্তাম্বুলের এক সুপ্রাচীন ঐতিহ্য।

এছাড়া, ইস্তাম্বুলের ভেতর দিয়ে যে বসফোরাস প্রণালী বয়ে গেছে এর আয়তন ৩২ কিলোমিটার। উত্তরে কৃষ্ণসাগর ও দক্ষিণে মর্মর সাগর। প্রণালীর গভীরতা গড়ে ৫০ মিটারের মতো। প্রশস্ততা কোথাও কম, আবার কোথাও বেশি। ইউরোপ ও ভলকান রাষ্ট্রগুলোর জাহাজ চলে এই প্রণালী দিয়ে।