বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন প্রায়শই বলে থাকেন, ‘অধিনায়ক মাশরাফির বিকল্প নেই।’ জিম্বাবুযের বিপক্ষে প্রথম ওয়ানডের ইনিংস বিরতিতে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে যে সংক্ষিপ্ত সংবাদ সংম্মেলন করলেন তিনি, সেখানেও পুনরাবৃত্তি করেছিলেন- ‘অধিনায়ক মাশরাফি অপরিহার্য’। জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজ জেতার পর মাশরাফির ওপর আস্থা আরও বাড়ার কথা।

বোর্ড পরিচালকরাও ভাবতে শুরু করে দিয়েছেন মাশরাফিকে নেতৃত্বে রেখে দেওয়ার ব্যাপারে। পাকিস্তান সফরে মাশরাফিকে অধিনায়কের ভূমিকায় দেখা যেতে পারে। সূত্রের খবর- সাকিব না ফেরা পর্যন্ত ওয়ানডেতে মাশরাফির অধিনায়কত্বের ওপরেই আস্থা রাখতে পারে বিসিবি। নেতৃত্বে থাকা-না থাকার বিষয়ে মাশরাফি নিজেও ভাবছেন। দুই পক্ষের ভাবনা মিলে একটা ইতিবাচক সিদ্ধান্ত হওয়ার সম্ভাবনা প্রবল। এই সিদ্ধান্ত জানতে অপেক্ষা করতে হবে ৮ মার্চের বোর্ড সভা পর্যন্ত। বিসিবি সভাপতি পাপন সে বার্তা আগেই দিয়ে রেখেছেন।

জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে খেলা ওয়ানডে দুটিতে বোলিং খারাপ করেননি মাশরাফি। প্রথম ম্যাচে ৬.১ ওভার করে চিভাভা ও মুতুমবুজির উইকেট নিয়েছেন তিনি। ৫.৬৭ ইকোনমি রেখে ৩৫ রান দিয়েছেন ৩৬ বছর বয়সী এ পেসার। মুস্তাফিজুর রহমান ও মোহাম্মদ সাইফুদ্দিনের বোলিং অবশ্য আরও ভালো ছিল। তবে সিরিজ নির্ধারণী দ্বিতীয় ওয়ানডেতে পেস ইউনিটের সেরা মাশরাফি। ১০ ওভারে ৫২ রান দিয়ে একটি উইকেট শিকার তার। ইকোনমি ৫.২০। পেস বিভাগে এটিই ম্যাচের সেরা।

অন্য দুই পেসারের মধ্যে এক উইকেট পাওয়া শফিউল ইসলাম দিয়েছেন ৭৬ রান, আল আমিন ৮৫ রান। লম্বা সময় পর ম্যাচ খেললেও অধিনায়কের বোলিংয়ের ধারও ছিল যথেষ্ট। প্রথম ওয়ানডের পর দ্বিতীয় ওয়ানডেতে উন্নতিও ছিল স্পষ্ট। এই দুই ম্যাচে তার পারফরম্যান্স বোর্ড কর্মকর্তাদের ইতিবাচক ভাবনার খোরাক জোগাচ্ছে। বিসিবি মিডিয়া কমিটির চেয়ারম্যান জালাল ইউনুসের কাছে অধিনায়কের প্রসঙ্গ তোলা হলে তিনি বলেন,’মাশরাফি তো ভালোই করছে।’

ক্রিকেট পরিচালনা বিভাগের চেয়ারম্যান আকরাম খানেরও আস্থা মাশরাফির ওপর। দেশের সফল ওয়ানডে অধিনায়ককে আরও কিছুদিন ধরে রাখার ব্যাপারে তার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন,’মাশরাফি অধিনায়ক থাকতে পারে। আমার তাই মনে হয়।’

অধিনায়ক নির্বাচনের বিষয়টি পুরোপুরি দেখেন বিসিবি সভাপতি নাজমুল হাসান পাপন। বোর্ড পরিচালকদের মতামত নিয়ে সেটা ঠিক করেন তিনি। পরিচালকদের একটা বড় অংশের সমর্থন মাশরাফির পক্ষে যেতে পারে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন পরিচালক তো বলেই দিলেন, ‘যে কয়জন পেসার খেলছে সেখানে দেখছি মাশরাফি সবচেয়ে ভালো। আমার ব্যক্তিগত মত, সাকিব ফিরে না আসা পর্যন্ত মাশরাফিকে অধিনায়ক হিসেবে রেখে দিলে ভালো হবে।’

তবে মাশরাফিরও বোর্ডের সঙ্গে কথা বলার ব্যাপার থাকছে। অধিনায়ক থাকার ব্যাপারে নড়াইল এক্সপ্রেসের কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেছেন, ‘বিষয়টি ভেবে দেখব। ভাবছিও বলতে পারেন।’ জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে সিরিজের পর বাংলাদেশ দলের পরের ওয়ানডে ১ এপ্রিল করাচিতে। সবকিছু ইতিবাচক থাকলে মাশরাফিকে দেখা যেতেও পারে ওই ম্যাচের নেতৃত্বে। তবে মাশরাফি নিজে থেকে এই সিরিজের পর সরে গেলে কারও কিছু করার নেই।