লিটন হোসেন লিমন, নাটোর প্রতিনিধি :
নাটোরের বড়াইগ্রাম উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসারের বিরুদ্ধে ঘুষ-দুর্নীতি, শিক্ষকদের সঙ্গে দুর্ব্যবহার, অফিস চলাকালীন কাজকর্ম ও ঘরের দরজা বন্ধ রেখে বিশ্রাম নেয়া, অফিসে প্রকাশ্যে ধুমপানসহ নানা ধরণের অভিযোগ উঠেছে। এসব অভিযোগে উপজেলা শিক্ষক সমিতির মিটিংয়ে তীব্র নিন্দা প্রকাশসহ অবিলম্বে তাকে অন্যত্র বদলীর দাবী জানানো হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আব্দুর রউফ প্রায় এক বছর আগে এ উপজেলায় যোগদান করেন। এরপর থেকেই তিনি বিএডসহ বিভিন্ন স্কেল পরিবর্তন, শিক্ষক এমপিওসহ বিভিন্ন কাজে উৎকোচ বাণিজ্য শুরু করেন। বর্তমানে এমপিও ভূক্ত শিক্ষকদের এমপিও শিটে নাম ও জন্ম তারিখ সংশোধনীর কাজ চলছে।
এক্ষেত্রে শিক্ষকদের ভুল সংশোধনে কোন প্রকার ফি নেয়ার নিয়ম না থাকলেও অফিস সহকারী আব্দুল কুদ্দুসের মাধ্যমে তিনি শিক্ষক প্রতি দুই হাজার টাকা করে আদায় করছেন। যারা ভুল সংশোধনী করতে অফিসে যাচ্ছে, তাদের কাছ থেকে প্রকাশ্যেই এ টাকা নেয়া হচ্ছে। সম্প্রতি এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমান এ টাকা নেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে শিক্ষা কর্মকর্তা তার সঙ্গে দুর্ব্যবহার করেন। পরে খবর পেয়ে আরো শিক্ষকেরা এসে প্রতিবাদ করলে তিনি শিক্ষক প্রধান শিক্ষক মাহবুবুর রহমানের সাথে থাকা রামেশ^রপুর উচ্চ বিদ্যালয়ের দুজন শিক্ষকের কাছ থেকে নেয়া টাকা ফেরৎ দিলেও পরবর্তীতে অন্যান্য শিক্ষকদের কাছ থেকে আগের মতই টাকা আদায় করছেন বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক প্রতিষ্ঠান প্রধান জানান, তিনি এ উপজেলায় আসার পর থেকে বিএডসহ যেকোন স্কেল পরিবর্তনে ১০-১৫ হাজার টাকা, শিক্ষক এমপিওতে ২০-৫০ হাজার টাকা পর্যন্ত হাতিয়ে নিচ্ছেন। টাকা না দিলে কাগজপত্রে অযথাই ভুল ধরাসহ নানা ভাবে হয়রানী করেন। উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষক-কর্মচারী কল্যাণ সমিতির সভাপতি প্রধান শিক্ষক ওয়াসেক আলী সোনার বলেন, গত বৃহস্পতিবার শিক্ষক সমিতির মিটিংয়ে শিক্ষা কর্মকর্তার নানা অনিয়ম-দুর্নীতির প্রতিবাদ জানানোসহ তাকে এ উপজেলা থেকে বদলীর দাবীতে রেজুলেশন করেছি।
স্থানীয় সংসদ সদস্যসহ বিভিন্ন দপ্তরে আমরা আবেদনসহ রেজুলেশনের কপি পাঠাবো। উপজেলা শিক্ষা অফিসার আব্দুর রউফের কাছে জানতে চাইলে তিনি এসব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, শিক্ষকদের নাম সংশোধনীর জন্য অফিসের দু-একজন কিছু টাকা নিয়েছিল। পরে জানতে পেরে সেটা ফেরৎ দেয়া হয়েছে। তবে স্কেল পরিবর্তন বা এমপিওভূক্তির কাজে কেন টাকা নেন জানতে চাইলে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।