দর্পণ ডেস্ক :
আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপি অংশ না নিলে তাদের অবস্থা হবে ভাসানীর ন্যাপের মতো। বাটি চালান দিয়েও বিএনপির অস্তিত্ব খুঁজে পাওয়া যাবে না। আর কোনো রাজনৈতিক দল নির্বাচন বানচালের চেষ্টা করলে সরকার কঠোর ব্যবস্থা নেবে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ।
মঙ্গলবার ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই আয়োজিত ‘বাংলাদেশের রাজনৈতিক অর্থনীতি ১৯৫২ থেকে ২০৪১’ শীর্ষক আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী এসব কথা বলেন। জাতীয় শোক দিবস ১৫ আগস্ট উপলক্ষে রাজধানীর মতিঝিলে ফেডারেশন ভবনে এ আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়।
মন্ত্রী বলেন, নির্বাচন কমিশন ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহে জাতীয় সংসদ নির্বাচনের প্রস্তুতি নিচ্ছে। এদিকে শোনা যাচ্ছে কিছু রাজনৈতিক দল ঐক্য বা ফ্রন্ট গঠন করছে। রাজনীতিতে ঐক্য হতে পারে। অনেক সময় তা দরকারও। তবে সেই ঐক্য যদিও জাতীয় স্বার্থে না হয়ে নির্বাচন বানচালের জন্য হয়, তাহলে সরকার তা সহ্য করবে না। ২০১৩, ২০১৪ ও ২০১৫ সালের মতো কোনো ধরনের জ্বালাও-পোড়াও করা হলে কঠোরভাবে দমন করা হবে। সরকার স্বাভাবিক পরিস্থিতি বজায় রাখতে যা যা প্রয়োজন করবে। নির্বাচন সংবিধান অনুযায়ী বর্তমান সরকারের অধীনে হবে উল্লেখ করে বাণিজ্যমন্ত্রী সব দলকে নির্বাচনে অংশ নেয়ার আহ্বান জানান।
তিনি বলেন, মওলানা ভাসানী শ্রদ্ধেয় নেতা। অনেক জনপ্রিয় ছিলেন। কিন্তু দেশের স্বাধীনতার আগে তিনি নির্বাচনে অংশ না নিয়ে বলেছিলেন ‘ভোটের বাপে লাথি মারো, বাংলাদেশ স্বাধীন করো।’ সে বছর বঙ্গবন্ধু নিজে নির্বাচনে অংশ না নিলেও নিজের দলকে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করান। পরে বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে দেশ স্বাধীন হয়। এখন কিন্তু ন্যাপকে বাটি চালান দিয়েও খুঁজে পাওয়া যায় না। বিএনপি আগামী নির্বাচনে অংশ না নিলে তাদেরও বাটি চালান দিয়ে খুঁজে পাওয়া যাবে না।
অনুষ্ঠানে তোফায়েল আহমেদ ১৯৫২ সাল থেকে ১৯৭৫ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ গঠনে বঙ্গবন্ধুর অবদান নিয়ে বিভিন্ন সময়ের স্মৃতিচারণ করেন।
অনুষ্ঠানের প্যানেল আলোচক বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক গভর্নর আতিউর রহমান রহমান বলেন, বাংলাদেশ ইতিমধ্যে অনেক এগিয়েছে। এখন সোনার বাংলা গড়তে বেশ কিছু পদক্ষেপ ও তার ধারাবাহিকতা দরকার। মেগা প্রকল্পগুলো সময়মতো বাস্তবায়ন করতে হবে। নবায়নযোগ্য জ্বালানি ব্যবস্থা ও সবুজ কারখানা বাড়াতে হবে। কৃষি উৎপাদন বাড়ানো, শৃঙ্খল নগরায়ণ, ক্ষুদ্র উদ্যোক্তাদের সুযোগ সৃষ্টি করে দিলেই বাংলাদেশের অগ্রগতি কেউ আটকাতে পারবে না।
মূল প্রবন্ধে বাংলাদেশ বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আবদুল মান্নান বলেন, এতদিনে বাংলাদেশের অর্জন আকাশচুম্বী না হলেও আকাশের কাছাকাছি। একটু চেষ্টা করলেই আকাশ ছোঁয়া যাবে। তবে এজন্য দরকার নীতির ধারাবাহিকতা।
স্বাগত বক্তব্যে এফবিসিসিআই সভাপতি সফিউল ইসলাম মহিউদ্দিন বলেন, বেসরকারি খাতের নেতৃত্বে দেশের অর্থনীতি এগিয়ে যাচ্ছে। সরকার যেসব দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা নিয়েছে তা অর্জনে শত শত কোটি ডলার বিনিয়োগ দরকার। এ বিনিয়োগ বেসরকারি খাতই করবে। তবে এজন্য দরকার সরকারি সহযোগিতা। পণ্য বহুমুখীকরণ করতে হবে। ওয়ানস্টপ সার্ভিস আইন সঠিকভাবে বাস্তবায়ন করতে হবে। গবেষণায় ব্যয় বাড়াতে হবে। এগুলো ঠিকমতো করা হলে বঙ্গবন্ধুর ক্ষুধা ও দারিদ্র্যমুক্ত সোনার বাংলা এখন সময়ের ব্যাপার মাত্র।
এফবিসিসিআইর সিনিয়র সহ-সভাপতি শেখ ফজলে ফাহিমের পরিচালনায় অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখেন সংগঠনটির সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন, কাজী আকরাম উদ্দিন আহমদ, সাবেক রাষ্ট্রদূত আব্দুল হান্নান, ৭১ টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোজাম্মেল বাবু।

News Editor : Ganash Chanro Howlader. Office: 38-42/2 Distillery Road, 1st floor, Gandaria, Dhaka-1204.