অনলাইন ডেস্ক : রাজধানীর বনানী কবরস্থানে বাবার কবরেই চিরনিদ্রায় শায়িত হলেন ছোট পর্দার জনপ্রিয় অভিনেত্রী তাজিন আহমেদ। বুধবার পৌনে তিনটার দিকে তার দাফন সম্পন্ন হয়। সেখানে তার সহকর্মী ও শোবিজ অঙ্গনের অনেকেই উপস্থিত ছিলেন।

এর আগে বুধবার বাদ জোহর গুলশানের আজাদ মসজিদে তাজিন আহমেদের জানাজা অনুষ্ঠিত হয়। গুলশানের আজাদ মসজিদে। জানাজায় উপস্থিত ছিলেন সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব রামেন্দ্র মজুমদার, শিল্পী সংঘের সভাপতি শহিদুল ইসলাম সাচ্চু, সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব নাসিম, নির্মাতা বদরুল আলম সৌদ, অভিনেতা সিদ্দিকুর রহমান, এস এ হক অলিক, উপস্থাপক আনজাম মাসুদ, প্রযোজক সৈয়দ ইরফান উল্লাহ প্রমুখ।

বুধবার সকাল সাড়ে ১০টায় উত্তরার আনন্দ বাড়ি শুটিং স্পটে রাখা হয় তাজিন আহমেদের মরদেহ। সেখানে তার সহকর্মী, বন্ধু ও শুভাকাঙ্খীরা তাকে শেষ বারের মতো দেখতে আসেন। দুপুর ১২টা পর্যন্ত মরদেহ ওখানে রাখা হয়েছিল।

মঙ্গলবার বিকেল সোয়া ৩টার দিকে অচেতন অবস্থায় তাকে উত্তরার রিজেন্ট হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। অবস্থা গুরুতর বলে তখনই তাকে নেওয়া হয় লাইফ সাপোর্টে। বিকেল ৪টা ২০ মিনিট নাগাদ কর্তব্যরত চিকিৎসক নূর হোসেন তাজিন আহমেদকে মৃত ঘোষণা করেন। চিকিৎসকরা জানান, তিনি হৃদরোগে আক্রান্ত হয়েছিলেন।

১৯৭৫ সালের ৩০ জুলাই নোয়াখালীতে জন্ম নেন ক্ষণজন্মা এই অভিনেত্রী। জন্ম নোয়াখালীতে হলেও তার শৈশব ও কৈশোর কেটেছে পাবনা জেলায়। ১৯৯৬ সালে দিলারা জলি রচিত ও শেখ নিয়ামত আলী পরিচালিত ‘শেষ দেখা শেষ নয়’ নাটকের মধ্য দিয়ে তার অভিনয় জীবনের শুরু। নাটকটি বিটিভিতে প্রচার হয়। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগে পড়াশোনা করেছিলেন এই অভিনেত্রী।

তাজিন আহমেদ ভোরের কাগজ, প্রথম আলোসহ বিভিন্ন পত্রিকায় সাংবাদিকতা করেছেন। আনন্দ ভুবন ম্যাগাজিনের কলামিস্টও ছিলেন তিনি। পরে মার্কেন্টাইল ব্যাংকে পাবলিক রিলেশন অফিসার হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ‘নাট্যজন’ নাটকদলের হয়ে তিনি মঞ্চে কাজ করেছেন। পরে ২০০০ সালে ‘আরণ্যক’ নাট্যদলে যোগ দিয়েছিলেন এই অভিনেত্রী। গত বছরের অক্টোবরে আরণ্যকের ‘পস্প ও মঙ্গল’ নাট্যোৎসবে ‘ময়ূর সিংহাসন’ নাটকে বলাকা চরিত্রে অভিনয় করেন।

তবে টিভি নাটকে অভিনয় করে দর্শকের কাছে প্রিয় হয়ে ওঠেন তিনি। তার সর্বশেষ ধারাবাহিক নাটক ‘বিদেশি পড়ি’।

তাজিন রেডিও এবং টেলিভিশনে উপস্থাপনাও করেছেন। তিনি লেখালেখিও করতেন। তার লেখা ও পরিচালনায় নির্মিত হয়েছিল ‘যাতক’ ও ‘যোগফল’ নামে দুটি নাটক। তার লেখা উল্লেখযোগ্য নাটকগুলো হচ্ছে ‘বৃদ্ধাশ্রম’, ‘অনুর একদিন’, ‘এক আকাশের তারা’, ‘হুম’, ‘সম্পর্ক’ প্রভৃতি।

রাজনীতিতেও যোগ দিয়েছিলেন তাজিন। ববি হাজ্জাজের রাজনৈতিক সংগঠন ‘বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক আন্দোলনে’ (এনডিএম) যোগ দিয়েছিলেন তিনি। দলটির কেন্দ্রীয় কমিটির বিভাগীয় সম্পাদক (সাংস্কৃতিক) পদে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি।