প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ নারীবিদ্বেষী। শুধু পুরুষ নয়, নারীর প্রতি নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করেন নারীরাও। নারী-পুরুষ নির্বিশেষে নারীর প্রতি নেতিবাচক মনোভাব প্রকাশ করা মানুষের সংখ্যা নেহায়েত কম নয়। প্রতি ১০০ নারী-পুরুষের মধ্যে ৯০ জনই নারীর প্রতি নেতিবাচক মনোভাব পোষণ করেন।
জাতিসংঘের উন্নয়ন কর্মসূচি (ইউএনডিপি) প্রকাশিত নতুন সূচক বৈশ্বিকভাবে লিঙ্গসমতার প্রতি ‘হতাশার’ চিত্র তুলে ধরেছে। ৮ মার্চ নারী দিবসকে সামনে রেখে বৃহস্পতিবার ‘জেন্ডার সোশ্যাল নর্মস’ সূচক প্রকাশ করে জাতিসংঘ। সেখানেই উঠে এসেছে এমন চিত্র। এতে দেখা যায়, বিশ্বব্যাপী ৫০ শতাংশ পুরুষ মনে করেন, চাকরির ক্ষেত্রে নারীর চেয়ে তাদের অধিকার বেশি। জরিপে অংশ নেওয়া এক-তৃতীয়াংশ মানুষ মনে করেন, পুরুষ তার সঙ্গীকে মারধর করলেও তা গ্রহণযোগ্য।
আদতে বিশ্বের কোনো দেশেই লিঙ্গসমতা নেই বলে জাতিসংঘের প্রতিবেদনটিতে উঠে এসেছে। সবচেয়ে বেশি লিঙ্গবৈষম্যের দেশ জিম্বাবুয়ে। দেশটির ৯৬ শতাংশ মানুষ মনে করে, নারীর প্রতি সহিংসতা গ্রহণযোগ্য এবং তারা নারীর প্রজনন অধিকারকে সমর্থন করেন না। ফিলিপাইনের ৯১ শতাংশ মানুষ এ মনোভাব প্রকাশ করেন। তবে ফ্রান্স ও স্পেনের মাঝে ছোট্ট একটি দেশ অ্যান্ডোরার ৭২ শতাংশ মানুষ এ ধরনের মনোভাব প্রকাশ করেন না। লিঙ্গসমতার ক্ষেত্রে দেশটির অবস্থান প্রথম।
রাজনৈতিক ক্ষেত্রেও নারীর প্রতি বৈষম্যের চিত্র উঠে এসেছে প্রতিবেদনটিতে। বিশ্বের অর্ধেক নারী-পুরুষ মনে করেন, রাজনৈতিক নেতা হিসেবে একজন পুরুষই দক্ষ। চীনের ৫৫ শতাংশ মানুষ পুরুষ নেতৃত্বে আস্থা রাখেন। যুক্তরাষ্ট্রে এ হার ৩৯ শতাংশ। দেশটিতে এখন পর্যন্ত একজন নারী প্রেসিডেন্টও নির্বাচিত হননি। অন্যদিকে নিউজিল্যান্ডের ২৭ শতাংশ মানুষ এমন মনোভাব পোষণ করেন। যদিও দেশটির প্রধানমন্ত্রী একজন নারী।
বিশ্বের ১৯৩টি দেশের মধ্যে মাত্র ১৯টিতে সরকারপ্রধানের দায়িত্ব পালন করছেন নারী। বিশ্বজুড়ে সংসদে নারীদের অবস্থানও খুব সুখকর নয়। লাতিন আমেরিকা ও ক্যারিবিয়ান অঞ্চলের সংসদগুলোর ৩১ শতাংশ সদস্য নারী। বিশ্বে এ সংখ্যা সর্বোচ্চ। সংসদে সবচেয়ে কম নারীর অংশগ্রহণ রয়েছে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোতে। এ সংখ্যা মাত্র ১৭ শতাংশ।
চাকরির ক্ষেত্রেও চিত্রটা একই রকম। বিশ্বের ৪০ শতাংশ মানুষ মনে করেন, নারীর চেয়ে পুরুষরা ভালো ব্যবসায়িক নির্বাহী হতে পারেন। ব্রিটেনের ২৫ শতাংশ মানুষ মনে করেন, নারীর চেয়ে পুরুষের চাকরি করার অধিকার বেশি এবং পুরুষরা ভালো ব্যবসায়িক নির্বাহী। এ মনোভাব পোষণ করেন ভারতের ৬৯ শতাংশ মানুষ।