অনলাইন ডেস্ক : সিরিয়া অভিযানে যোগ দেওয়ার আগে যুক্তরাজ্যের পার্লামেন্টে আলোচনা ও ভোটাভুটি প্রয়োজন ছিল বলে মনে করেন তিনি।

১৫ বছর আগে যুক্তরাষ্ট্রের নেতৃত্বে যখন ইরাক অভিযান শুরু হয়, তখন যুক্তরাজ্যের টনি ব্লেয়ারের সরকার তাতে সায় দিয়ে সমলোচিত হয়েছিলেন।

টনি ব্লেয়ার ছিলেন করবিনের দল লেবার পার্টিরই নেতা। এখন যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী রক্ষণশীল দলের টেরিজা মে।

অন্যদিকে ২০০৩ সালে ইরাক অভিযানের সময় যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ছিলেন রিপাবলিকান দলের জর্জ বুশ; এখনকার প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পও একই দলের।

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ তার দেশে বিদ্রোহী বাহিনীর উপর রাসায়নিক হামলা চালাচ্ছে অভিযোগ তুলে শনিবার দেশটিতে বিমান হামলার শুরু করে যুক্তরাষ্ট্র ও তার মিত্র দেশ যুক্তরাজ্য ও ফ্রান্স।

হামলার পক্ষে যুক্তি দেখিয়ে টেরিজা মে বলেছেন, রাসায়নিক হামলা বন্ধে সিরিয়া সরকারকে বাধ্য করতে এই অভিযান চালানো হচ্ছে।

তবে প্রধানমন্ত্রীর এই যুক্তি মেনে নিতে পারছেন না যুক্তরাজ্যের বিরোধীদলীয় নেতা করবিন। অভিযান শুরুর পর তিনি একটি চিঠি লিখেছেন টেরিজাকে, যা বিবিসিতে এসেছে।

চিঠিতে তিনি এই অভিযান চালানোর পক্ষে আইনি ভিত্তি প্রধানমন্ত্রীর কাছে জানতে চেয়েছেন লেবার নেতা, যাকে কমিউনিস্ট হিসেবে দেখেন অনেকে।

অভিযানের বিষয়ে টেলিফোনে জানানোর জন্য টেরিজা মেকে ধন্যবাদ জানিয়ে করবিন বলেছেন, “আমি খুশি যে ব্রিটিশ সৈন্যরা নিরাপদে ফিরে আসতে পেরেছে। আমি আশা করছি যে, সিরিয়ায় কোনো বেসামরিক মানুষের প্রাণহানি ঘটেনি।”

অভিযান নিয়ে পার্লামেন্টে আলোচনা ও ভোটাভুটির দরকার ছিল মন্তব্য করে তিনি বলেন, “যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী দেশের পার্লামেন্টের কাছে দায়বদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের হুজুগের কাছে নয়।”

জেরমি করবিন জেরমি করবিন
সিরিয়া অভিযানের আইনি ভিত্তি নিয়ে প্রশ্ন তোলার অবকাশ রয়েছে বলে মনে করেন যুক্তরাজ্যের বিরোধী নেতা।

এক্ষেত্রে জাতিসংঘ মহাসচিব আন্তোনিও গুতেরেসের প্রতিক্রিয়ার বিষয়টি তুল ধরে করবিন বলেন, সব দেশেরই জাতিসংঘের সনদ মেনে চলা উচিৎ।

অভিযানের আগে অ্যাটর্নি জেনালের কাছ থেকে আইনি পরামর্শ নেওয়া হয়েছে বলে করবিনকে জানিয়েছেন টেরিজা মে। ওই পরামর্শ প্রকাশের দাবি জানিয়েছেন লেবার নেতা।

সিরিয়া সরকার যে রাসায়নিক অস্ত্র ব্যবহার করেছে- জাতিসংঘ কিংবা অর্গানাইজেশন ফর প্রোহিবিশন অব কেমিকাল উইপনের (ওপিসিডাব্লিও) এর কোনো তদন্ত না থাকার কথাও বলেন করবিন।

তার দাবি, আগে তদন্ত হোক, তা জাতিসঘ নিরাপত্তা পরিষদে আসুক, তার পর আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া যাবে।

ওপিসিডাব্লিওর তদন্তকারীরা এই মুহূর্তে সিরিয়ায় কাজ করছে। তাদের তদন্ত শেষের আগে সিরিয়ায় আর বিমান হামলা চালানো হবে না বলে আশা করছেন করবিন।
সিরিয়ায় হামলার বিরোধিতা করে ইরানের প্রেসিডেন্ট রুহানি বলেছেন, “এটা তো কোনো সুফল বয়ে আনবেই না, বরং আরও ধ্বংসযজ্ঞ হবে।”

যুক্তরাষ্ট্র মধ্যপ্রাচ্যে তাদের সামরিক উপস্থিতি জায়েজ করতে এই হামলা চালাচ্ছে বলে মন্তব্য করেন তিনি।

রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনও সিরিয়ায় হামলার নিন্দা জানিয়ে নিরাপত্তা পরিষদের জরুরি বৈঠক ডাকার তাগিদ দিয়েছেন।