দর্পণ ডেস্ক : ২০১৫ সালের অক্টোবরে যুক্তরাষ্ট্র সফরে গিয়েছিলেন পাকিস্তানের সাবেক প্রধানমন্ত্রী নওয়াজ শরিফ। এর চার বছর পর মার্কিন ভূখণ্ডে পা রাখলেন পাকিস্তানের বর্তমান প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। অথচ ট্রাম্প প্রশাসনের ন্যূনতম সম্মানটুকু পেলেন না তিনি। বিমানবন্দরে তাকে অভ্যর্থনা জানাতে যাননি যুক্তরাষ্ট্র সরকারের কোনো কর্মকর্তা। এর আগে আর কোনো রাষ্ট্রনেতার সঙ্গে এমন আচরণ করা হয়নি বলে দাবি কূটনীতিকদের।

তিনদিনের বিদেশ সফরে শনিবার মার্কিন মুলুকে পা রাখেন ইমরান। ক্ষমতায় আসার পর থেকে সন্ত্রাস দমনে ব্যর্থ পাকিস্তানকে একাধিক বার তুলোধনা করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি জঙ্গিদের মদদ দেয়ার অভিযোগে কাটছাঁট করা হয়েছে অনুদানের অংকে। এই তিক্ততা কাটিয়ে উঠতেই তিনদিনের মার্কিন সফরে গেছেন ইমরান।

খরচ বাঁচাতে হোটেলে না উঠে পাক রাষ্ট্রদূত আসাদ মজিদ খানের বাড়িতে থাকবেন আগেই জানিয়েছিলেন পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী। নেননি চার্টার্ড বিমানও। বরং কাতার এয়ারওয়েজের সাধারণ যাত্রীবাহী বিমানে চড়েই আমেরিকা পৌঁছান।

কিন্তু বিমানবন্দরে তাকে অভিবাদন জানানোর জন্য হাজির হননি ট্রাম্প প্রশাসনের কোনো প্রতিনিধি। অন্য দেশের রাষ্ট্রনেতারা যুক্তরাষ্ট্রে পা রাখলেই তাদের জন্য কড়া নিরাপত্তার ব্যবস্থা করে সে দেশের জাতীয় নিরাপত্তা সংস্থা (এনএসএ)। অথচ ইমরানের ক্ষেত্রে এর কোনো কিছুই চোখে পড়েনি।

ইমরানের দল পাকিস্তান তেহরিক-ই-ইনসাফ টুইটারে একটি ভিডিও শেয়ার করেছে। ২৫ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায়, বিমান থেকে নামার পর তাকে অভ্যর্থনা জানাচ্ছেন পাক পররাষ্ট্রমন্ত্রী শাহ মেহমুদ কুরেশি এবং যুক্তরাষ্ট্রের পাক দূতাবাসের কিছু কর্মকর্তা। অভ্যর্থনা শেষে মেট্রোয় ওঠেন। পরে সেখান থেকে গন্তব্যে পৌঁছান তিনি।

আজ সোমবার হোয়াইট হাউসে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সঙ্গে বৈঠকে বসবেন ইমরান খান। সেখানে দেশের মাটিতে সন্ত্রাসী সংগঠনগুলোকে জায়গা করে দেয়া নিয়ে ট্রাম্পের পক্ষ থেকে তার ওপর চাপ বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে। আফগানিস্তানে শান্তি ফেরাতে তালিবানের সঙ্গে আলোচনায় মধ্যস্থতা করার প্রস্তাবও দেয়া হতে পারে তাকে।

ওয়াশিংটনে থাকাকালীন আন্তর্জাতিক মুদ্রা তহবিলের (আইএমএফ) ভারপ্রাপ্ত প্রধান ডেভিড লিপ্টন এবং বিশ্বব্যাংকের প্রেসিডেন্ট ডেভিড ম্যালপাসের সঙ্গেও বৈঠক করবেন ইমরান। দেশের অর্থব্যবস্থাকে দাঁড় করাতে আইএমএফের কাছে মোটা অংকের সহায়তা চেয়েছে ইসলামাবাদ। তবে ইতোমধ্যেই তাতে বাদ সেধেছেন মার্কিন কংগ্রেসের কিছু প্রভাবশালী নেতা। ওই অর্থে চীনের কাছ থেকে নেয়া বিপুল পরিমাণ ঋণ শোধ করা হতে পারে বলে আশঙ্কা করছেন তারা।