দর্পণ ডেস্ক : পাকিস্তানের বিপক্ষে হেরে দিয়ে বিশ্বকাপ মিশন শেষ করল বাংলাদেশ।
শাহিন শাহ আফ্রিদির বোলিং তা-বে স্বপ্নের সলিল সমাধি হলো টাইগারদের। বিশ্বকাপের সেমিফাইনালের আশা ভঙ্গের পর গ্রুপ পর্বের শেষ ম্যাচে জিতে পঞ্চম স্থানে থাকতে চেয়েছিল বাংলাদেশ। কিন্তু পাকিস্তানের বিপক্ষে চরম ব্যাটিং বিপর্যয়ের কারণে ৯৮ রানে হেরে বিশ্বকাপ মিশন শেষ করতে হয় মাশরাফি বিন মুর্তজার নেতৃত্বাধীন দলকে।

শুক্রবার ইংল্যান্ডের লর্ডসে বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথমে ব্যাট করে ৯ উইকেটে ৩১৫ রানের পাহাড় গড়ে পাকিস্তান। দলের হয়ে সর্বোচ্চ ১০০ রান করেন ওপেনার ইমাম-উল-হক। ৯৬ রান করেন বাবর আজম। বাংলাদেশ দলের হয়ে সর্বোচ্চ ৫ উইকেট শিকার করেন মোস্তাফিজুর রহমান।

টার্গেট তাড়া করতে নেমে সময়ের ব্যবধানে উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৭৮ রানে ৩ উইকেট পতনেরপর দলকে খেলায় ফেরাতে চেষ্টা করেন সাকিব আল হাসান ও লিটন দাস। চতুর্থ উইকেটে তারা ৫৮ রানের জুটি গড়েন। এরপর ২২ রানের ব্যবধানে নেই লিটন দাস ও সাকিব আল হাসানের উইকেট। ৭৭ বলে ছয়টি বাউন্ডারিতে ৬৪ রান করে ফেরেন সাকিব। ৪০ বলে ৩২ রানে আউট লিটন।

সপ্তম উইকেটে মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের সঙ্গে ৪৩ রান যোগ করেন মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত। এরপর আবারও ব্যাটিং বিপর্যয়। মাত্র ১ রানের ব্যবধানে নেই মোসাদ্দেক, সাইফউদ্দিন ও মাহমুদউল্লাহ রিয়াদের উইকেট।
১৯৮ রানে ৮ ব্যাটসম্যানের বিদায়ের পর ইনিংসের শেষ দিকে ব্যাটিংয়ে নেমে দলের পরাজয়ের ব্যবধান কমাতে চেষ্টা করেন মাশরাফি বিন মুর্তজা। তার ১৫ রানে শেষ পর্যন্ত ৪৪.১ ওভারে ২২১ রান তুলতে সক্ষম হয় বাংলাদেশ। পাকিস্তানের হয়ে ৯.১ ওভারে মাত্র ৩৫ রানে ৬ উইকেট শিকার করেন শাহিন শাহ আফ্রিদি।
শুক্রবার লর্ডসে বাংলাদেশের বিপক্ষে টসে জিতে প্রথমে ব্যাটিং করার সিদ্ধান্ত নেয় পাকিস্তান। ইনিংসের শুরুর ১০ ওভারে বাংলাদেশের বলারদের নিয়ন্ত্রিত বলিংয়ের সামনে খুব একটা সুবিধা করতে না পারলেও পাকিস্তানের বাবর আজমের করা ৯৬ ও ইমাম উল হকের করা ১০০ রান এবং শেষে ইমাদ ওয়াসিমের ২৬ বলে ৪৩ রানের সুবাদে নির্ধারিত ৫০ ওভারে ৯ উইকেটে ৩১৫ রান সংগ্রহ করে পাকিস্তানি ব্যাটসম্যানরা।

প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে টাইগারদের নিয়ন্ত্রিত বলিংয়ের সামনে রিতিমত হিমশিম খেতে থাকে পাকিস্তানি দুই ওপেনার ফখর জামান ও ইমাম-উল হক। প্রথম ১০ ওভারে ১ উইকেট হারিয়ে পাকিস্তান তুলে মাত্র ৩৮ রান। পাকিস্তানের খেলা প্রথম ১০ ওভারের মধ্যে ৪০টি বলই ছিল ডট। এবারের বিশ্বকাপে প্রথম পাওয়ার প্লে’তে এটাই পাকিস্তানের সবচেয়ে কম রান। এর আগে দলীয় ৭ম ওভারে সাইফউদ্দিনের শিকার হন ফখর জামান। ৩১ বলে মাত্র ১৩ রান করে মিরাজের হাত ক্যাচ তুলে দেন তিনি।
এরপর ব্যাটিংয়ে নামা বাবর আজম কে নিয়ে একটি দৃষ্টিনন্দন জুটি গড়েন ওপেনিংয়ে নামা ইমাম। তাদের ১৫৭ রানের জুটি ভাঙ্গেন আবারও সাইফউদ্দিন। বাবর আজম ৯৬ রানে সাইফউদ্দিনের দ্বিতীয় শিকার হয়ে মাঠ ছাড়েন।
মুহাম্মদ হাফিজকে নিয়ে আবারও জুটি গড়তে চেষ্টা চালান ইমাম। কিন্তু তা আর হয়ে উঠেনি। ৭টি চারে সাজানো নিজের করা শতকের পরের বলেই মোস্তাফিজের বলে হিট আউট হন তিনি। মোস্তাফিজের করা বল ব্যাকফুটে খেলতে গিয়ে ইমামের পা লেগে যায় স্ট্যাম্পে। এতে ১০০ বলে ১০০ রান করে মাঠ ছাড়ে ইমাম-উল হক।
বাংলাদেশের পক্ষে মোস্তাফিজ ৭৫ রানে সর্বোচ্চ ৫টি উইকেট নেন। এছাড়া সাইফউদ্দিন ৭৭ রানে ৩টি ও মিরাজ ৩০ রানে ১টি উইকেট নেন।