অনলাইন ডেস্ক :

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে ইইউর নতুন রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তিরিঙ্ক-

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ইউরোপিয়ান ইউনিয়নের (ইইউ) নতুন রাষ্ট্রদূতকে বলেছেন, চলতি বছরের শেষের দিকে বাংলাদেশে অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তিনি বলেন, রাষ্ট্রক্ষমতা ক্যান্টনমেন্টে অবরুদ্ধ থাকার সময় আওয়ামী লীগকে জনগণের গণতান্ত্রিক অধিকারের সুরক্ষায় আন্দোলন করতে হয়েছে।

ইইউর নতুন রাষ্ট্রদূত রেন্সজে তিরিঙ্ক বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর তেজগাঁও কার্যালয়ে তার সঙ্গে সাক্ষাৎকালে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। খবর বাসসের

বৈঠক শেষে প্রধানমন্ত্রীর প্রেস সচিব ইহসানুল করিম বলেন, স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানে ইইউ প্রতিনিধির আশাবাদের প্রেক্ষাপটে প্রধানমন্ত্রী এই আশ্বাস দেন।

বৈঠকে বিদ্যমান পারস্পরিক হৃদ্যতাপূর্ণ সম্পর্কে সন্তোষ প্রকাশ করা হয়। শেখ হাসিনা নির্বাচন কমিশন এবং স্বচ্ছ ব্যালট বাক্সের ব্যবস্থা ও ছবিসহ ভোটার তালিকা তৈরি করতে সহায়তার জন্য ইইউকে ধন্যবাদ জানান।

প্রধানমন্ত্রী তার সরকারের উন্নয়ন পরিকল্পনার কথা উল্লেখ করে বলেন, সরকার আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে বিশেষ পরিকল্পনা নিয়ে কাজ করছে এবং পূর্ব নির্ধারিত লক্ষ্যেই সব উন্নয়ন কর্মকাণ্ড বাস্তবায়িত হচ্ছে।

তার প্রথম মেয়াদে ইইউ সদর দপ্তর পরিদর্শনের কথা স্মরণ করে বাংলাদেশকে ইইউর অব্যাহত সমর্থনের প্রশংসা করেন প্রধানমন্ত্রী।

রোহিঙ্গা ইস্যু নিয়ে আলোচনায় প্রধানমন্ত্রী বলেন, রোহিঙ্গারা বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বিরাট বোঝার সৃাষ্টি করছে। তাদের নিরাপদ আশ্রয়, খাদ্য ও স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে প্রশাসন, পুলিশ ও সেনাবাহিনী, বিজিবিসহ অন্যান্য সংস্থাগুলো নিষ্ঠার সঙ্গে কাজ করছে। তিনি বলেন, বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গা স্থানীয় জনসাধারণের চাষের জমি দখল করেছে। এতে স্থানীয়দের অর্থনৈতিক সমস্যার সৃষ্টি হয়েছে।

প্রধানমন্ত্রী শরণার্থী ইস্যুতে ইইউর ভূমিকার ভূয়সী প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, এই সমস্যা সমাধানে বাংলাদেশ প্রতিবেশী মিয়ানমার ও মিয়ানমারের অন্যান্য সীমান্তবর্তী দেশের সঙ্গে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে।

বর্তমান সরকারে আমলে গার্মেন্ট শিল্পের শ্রমিকদের ন্যায্য মজুরি প্রদানের কথা উল্লেখ করে শেখ হাসিনা বলেন, গার্মেন্ট শ্রমিকদের মজুরি বৃদ্ধির জন্য তিনি (প্রধানমন্ত্রী) নিজে মালিকদের সঙ্গে আলোচনা করেছেন।

তিনি বলেন, মিল-কারখানায় সংকট তৈরিতে বাইরের অপেশাদার কায়েমী স্বার্থান্বেষী মহলের অপতৎপরতা সত্ত্বেও এ খাতের উন্নয়নে গার্মেন্ট শ্রমিকরা সুন্দরভাবে কাজ করে যাচ্ছে।

শেখ হাসিনা গার্মেন্টস পণ্যে মূল্য নির্ধারণে বায়ারদের ভূমিকার ওপর গুরুত্বারোপ করেন। এতে ইইউ রাষ্ট্রদূতও সম্মতি জানান।

ইইউ দূত অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও এলডিসি থেকে উন্নয়নশীল দেশে উত্তরণসহ বিভিন্ন খাতে বাংলাদেশের বিশাল অর্জনের প্রশংসা করেন।

তিনি বলেন, বিদ্যুৎ উৎপাদন ৩ হাজার মেগাওয়াট থেকে ১৮ হাজার মেগাওয়াটে উন্নীত হওয়ায় একটি অসাধারণ সাফল্য।

রাষ্ট্রদূত রোহিঙ্গাদের জন্য সহায়তা বৃদ্ধি ও অতিরিক্ত সহায়তা হিসেবে ৩০ মিলিয়ন ইউরো প্রদান এবং রোহিঙ্গাদের ওপর নিষ্ঠুর অভিযান পরিচালনার দায়ে মিয়ানমারের ৭ জন জেনারেলের ওপর ব্যবস্থা গ্রহণের কথা উল্লেখ করেন।

তিরিঙ্কস আশা প্রকাশ করেন, জাতিসংঘ মহাসচিবের সফর রোহিঙ্গাদের প্রতি আরো জোরালো আন্তর্জাতিক সমর্থনে সহায়তা করবে। তিনি বাংলাদেশের আর্থ-সামাজিক উন্নয়নে অব্যাহত সহযোগিতার আশ্বাস দেন।

প্রধানমন্ত্রীর মুখ্য সচিব মো. নজিবুর রহমান ও সামরিক সচিব মেজর জেনারেল মিয়া মুহাম্মাদ জয়নুল আবেদিন অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।