মা-মেয়ে উভয়েই একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকেন। এ সময় আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয় আখাউড়া স্থলবন্দরের শূণ্য রেখায়
হারিয়ে যাওয়ার প্রায় ৫ বছর পর ব্রাহ্মণবাড়িয়ার আখাউড়া স্থল বন্দর দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে ফিরে এসেছেন আমেনা বেগম (৫৫) নামের এক নারী। তিনি ঢাকার তেজগাঁও রেলগেইট এলাকার মৌলভী মোখলেছুর রহমানের স্ত্রী।
বুধবার (১১ মার্চ) ভারতের ত্রিপুরার আগরতলাস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনের সহযোগিতায় দেশে ফিরে আসেন আমেনা বেগম। দেশে ফেরার পর স্থলবন্দরের নো-ম্যানসল্যান্ডে আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টিহয়। মাকে পাঁচ বছর পর ফিরে পেয়ে আবেগাপ্লুত হয়ে পড়েন মা-মেয়ে। তারা উভয়েই একে অপরকে জড়িয়ে ধরে কাঁদতে থাকেন। এ সময় আবেগঘন পরিবেশের সৃষ্টি হয় আখাউড়া স্থলবন্দরের শূণ্য রেখায়।
ঘটনায় সময় আগরতলার বাংলাদেশ হাই কমিশনের কর্মকর্তা মো. জাকির হোসেন, আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিনা আক্তার রেইনা প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন। পরে তারা আমেনা বেগমকে স্বজনদের জিম্মায় দেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, ২০১৫ সালের আগস্ট মাসে ঢাকা থেকে হারিয়ে যান মানসিক প্রতিবন্ধী আমেনা বেগম। তাকে উদ্ধার করে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের বিশালঘর থানা পুলিশ। ২০১৫ সালের ২৪ আগস্ট সেখানকার নরসিংগর মডার্ণ সাইকিয়াট্রিক হাসপাতালে ভর্তি করা হয় তাকে। সেখানে চিকিৎসা পেয়ে ধীরে ধীরে সুস্থ হতে থাকেন তিনি। এক পর্যায়ে নিজের নাম ঠিকানা বলতে শুরু করেন আমেনা। পরে কর্তৃপক্ষ বাংলাদেশ হাইকমিশনের সঙ্গে যোগাযোগ করে এবং বুধবার দুপুরে দুই দেশের সরকারের সহযোগিতায় আখাউড়া স্থলবন্দর দিয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্য থেকে দেশে ফিরে আসেন আমেনা বেগম।
মাকে নিতে আসা আমেনার বড় মেয়ে মোমেনা আক্তার জানান, ২০১৫ সালে মাকে হারিয়েছি। অনেক খোঁজাখুজি করেছি। কোথাও পাইনি। মা কিভাবে সেখানে (ভারত) গেলেন সেটাও আমরা জানতে পারিনি।
এ ব্যাপারে আখাউড়া দক্ষিণ ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য মো. আব্দুল হান্নান জানান, গত বছর ওই হাসপাতাল থেকেই বাংলাদেশের আরও এক বাকপ্রতিবন্ধী নিখোঁজ নারীকে দেশে আনা হয়েছিল।
আখাউড়া উপজেলা নির্বাহী অফিসার তাহমিনা আক্তার রেইনা বলেন, “কোনো দেশের নাগরিক হারিয়ে গেলে বা প্রতিবেশি দেশে পাওয়া গেলে তাকে ফিরিয়ে আনার জন্যে রাষ্ট্রের কিছু নিয়ম-কানুন আছে। সেই নিয়ম-কানুন অনুসরণ করে সরকারিভাবে তাকে (আমেনা) নিজ দেশে ফিরিয়ে আনা হয়েছে।”