অনলাইন ডেস্ক : টাঙ্গাইলের মির্জাপুর উপজেলার বাঁশতৈল এলাকায় চাকরি করেন ধর্মপাশা উপজেলার সদর ইউনিয়নের দুধবহর গ্রামের মঞ্জুরুল হকের ছেলে মোজাহিদ। সেখানকার একটি বিদ্যালয়ের ৮ম শ্রেণিতে পড়ূয়া এক কিশোরীকে গত বৃহস্পতিবার নিজ বাড়িতে নিয়ে আসেন তিনি। কিশোরীর খোঁজে তার বাবা ও এক বোন রোববার হাজির হন মোজাহিদের বাড়িতে। কিন্তু কিশোরী তার পরিবারকে জানায়, মোজাহিদের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে তার।
ঘটনাটি জানাজানি হলে বেসরকারি সংস্থা দুস্থ্য স্বাস্থ্য কেন্দ্রের (ডিএসকে) হ্যালো আইএম প্রকল্পের স্থানীয় কিশোরী গ্রুপের কয়েকজন সদস্য প্রকল্পের দায়িত্বশীল ব্যক্তিদের অবগত করেন তা। বাল্যবিয়ে প্রতিরোধে কাজ করছেন তারা।
খবর পেয়ে ওই বেসরকারি সংস্থার ধর্মপাশা শাখার প্রকল্প সহযোগি অনূকুল দাস ও উম্মে কুলসুম রোববার বিকেলে মোজাহিদের বাড়িতে যান। পরে সেখান থেকে কিশোরীর বাবাকে নিয়ে ধর্মপাশায় থানায় যান তারা। ওইদিন রাত আটটার দিকে কিশোরীর বাবা বিষয়টি ধর্মপাশা পুলিশকে জানালে কিশোরীর খোঁজে মোজাহিদের বাড়িতে যান পুলিশ। কিন্তু তাদের উপস্থিতি টের পেয়ে কিশোরীকে দ্রুত লুকিয়ে ফেলা হয় এবং পালিয়ে যায় মোজাহিদ। এসময় সদর ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য রিপন মিয়ার সহায়তায় কিশোরীকে উদ্ধার করে পুলিশ। পরে রাত ৯টার দিকে মোজাহিদের বাবা মা’সহ কিশোরীকে থানায় নিয়ে আসা হয়। ইউপি সদস্য রিপন মিয়া মোজাহিদের বাবা মা’কে ছাড়িয়ে নিতে বিভিন্ন রকম চেষ্টা তদবির চালিয়ে যেতে থাকেন। বিষয়টি টের পেয়ে অনূকুল দাস, উম্মে কুলকুম থানা ভোর রাত পর্যন্ত অবস্থান নেন থানায়।
এনজিও কর্মীদের এমন অনড় অবস্থানের কারণে ইউপি সদস্য রিপন মিয়া গভীর রাত পর্যন্ত থানায় অবস্থান করে ব্যর্থ হয়ে বাড়ি ফিরে যান।ইউসি সদস্য রিপন মিয়া জানান, মোজাহিদ অন্যায় করেছে, কিন্তুু তার বাবা মা কোনো দোষ করেনি।
প্রকল্প সহযোগী অনূকুল দাস জানান, কিশোরী থানা পুলিশকে জানিয়েছে মোজাহিদের সাথে তার বিয়ে হয়েছে। কিন্তু এ সংক্রান্ত কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি সে। যদি বিয়ে হয়েই থাকে তাহলে সেটি বাল্যবিয়ে।
কিশোরীর বাবা জানান, মেয়েকে ফিরিয়ে নিতে ধর্মপাশায় এসেছেন তিনি। মির্জাপুর থানা থেকে পুলিশ আসলে কিছু একটা হতে পারে বলে তিনি জেনেছেন।
মির্জাপুর থানার ওসি একেএম মিজানুল হক জানান, এ ঘটনায় মির্জাপুর থানায় অপহরণ মামলা হয়েছে। কিশোরীকে উদ্ধারের জন্য সোমবার দুপুরে মির্জাপুর থানা থেকে ধর্মপাশা থানায় ফোর্স পাঠানো হয়েছে। তাকে নিয়ে আসার পর জিজ্ঞাসাবাদ শেষে পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হবে।
ধর্মপাশা থানার ওসি (তদন্ত) মো. শফিকুজ্জামান সোমবার বিকেল সাড়ে পাঁচটায় জানান, মির্জাপুর থানায় ওই কিশোরীর এক আত্মীয় লিখিত অভিযোগ করেছেন। মির্জাপুর থানা থেকে পুলিশ আসলে তাদের কাছে কিশোরীকে হস্তান্তর করা হবে।