অনলাইন ডেস্ক :

কয়লা দুর্নীতিবড়পুকুরিয়া কয়লাখনি দুর্নীতির প্রতিবেদন নিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে বৈঠকে বসেছেন বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগের শীর্ষ ব্যক্তিরা। বুধবার (২৫ জুলাই) বিকেলে খনি দুর্নীতির প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর বিদ্যুৎ ও জ্বালানি বিভাগের প্রতিমন্ত্রীসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে যান। মন্ত্রণালয় সূত্র এই তথ্য নিশ্চিত করেছে।
মন্ত্রণালয় সূত্র জানায়, বৈঠকে বিদ্যুৎ জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ ছাড়াও বিদ্যুৎ সচিব ড. আহমদ কায়কাউস, জ্বালানি সচিব আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম, পিডিবি চেয়ারম্যান প্রকৌশলী খালেদ মাহমুদ ও পেট্রোবালা চেয়ারম্যান আবুল মনসুর মো. ফায়জুল্লাহ এনডিসি উপস্থিত রয়েছেন। একইসঙ্গে বৈঠকটিতে প্রধানমন্ত্রী কার্যালয়ের শীর্ষ ব্যক্তিরা উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে।
এর আগে কয়লা খনিতে দুর্নীতির ঘটনা উদ্ঘাটনের পর সোমবার (২৩ জুলাই) প্রধানমন্ত্রীর জ্বালানি বিষয়ক উপদেষ্টা ড. তৌফিক ই ইলাহী চৌধুরী, বিদ্যুৎ জ্বালানি প্রতিমন্ত্রী ছাড়াও জ্বালানি সচিব এবং পেট্রোবাংলার চেয়ারম্যানের সঙ্গে বৈঠক করেন প্রধানমন্ত্রী। ওই বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী ক্ষোভ প্রকাশ করে দায়ীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার নির্দেশ দেন। বুধবার বিকেলে তিনি আবার একই বিষয়ে বৈঠকে বসলেন।

দুর্নীতির সঙ্গে কয়লাখনির সবাই জড়িত: নসরুল হামিদ

বড়পুকুরিয়া কয়লা খনি দুর্নীতির প্রতিবেদন জমা পড়েছে। বুধবার (২৫ জুলাই) বিকালে পেট্রোবাংলা গঠিত তদন্ত কমিটি প্রতিবেদনটি জমা দিয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজসম্পদ প্রতিমন্ত্রী নসরুল হামিদ সাংবাদিকদের বলেন, ‘তদন্ত প্রতিবেদনে কয়লা খোয়া যাওয়ার বিষয়টি উঠে এসেছে।’ কারা এ ঘটনার সঙ্গে জড়িত জানতে চাইলে প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘যখন কেউই কয়লার হিসাব রাখেনি, তখন সবাই দুর্নীতির সঙ্গে জড়িত।’

বুধবার সচিবালয়ে পেট্রোবাংলার পক্ষ থেকে বড়পুকুরিয়া কয়লা খনির গায়েব কয়লার বিষয়ে তদন্ত প্রতিবেদন হাতে পাওয়ার পর প্রতিমন্ত্রী এসব কথা বলেন। পরে প্রতিমন্ত্রী প্রতিবেদনটি নিয়ে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের উদ্দেশে বের হয়ে যান।

প্রতিমন্ত্রী বলেন, ‘এখনও প্রতিবেদন পুরোটা পড়তে পারিনি।’ পুরোটা দেখে যারা দায়ী, তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলেও তিনি জানান।

এর আগে সকাল থেকেই কয়লার প্রতিবেদন তৈরি নিয়ে কাজ চলছিল। দুপুরে পেট্রোবাংলায় গিয়ে দেখা যায়, কমিটির প্রধান ও সংস্থার পরিচালক (অপারেশন অ্যান্ড মাইন) প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামানের কক্ষে প্রতিবেদন তৈরির কাজ চলছে।

সেসময় দেখা করতে চাইলে প্রকৌশলী কামরুজ্জামানের কক্ষের বাইরে থেকে জানানো হয়, তিনি এখন কারও সঙ্গে দেখা করতে পারবেন না। ভেতরে কয়লা দুর্নীতির প্রতিবেদন তৈরির কাজ চলছে বলে জানানো হয়।

প্রসঙ্গত, ২০০৬ সাল থেকে বড়পুকুরিয়া খনি থেকে কয়লা তুলে কোল ইয়ার্ডে জমা রাখা হচ্ছিল। কিন্তু বিক্রির পর বছরে কতটুকু কয়লা অবশিষ্ট থাকলো, তা কখনও পরিমাপ করা হয়নি। এখন কাগজে-কলমে অবিক্রিত কয়লার পরিমাণ দেখানো হচ্ছে এক লাখ ৪০ হাজার টন । কিন্তু বাস্তবে কয়লা পাওয়া গেছে সর্বোচ্চ ১০ হাজার টন। অর্থাৎ এক লাখ ৩০ হাজার টন কয়লার কোনও হদিস পাওয়া যাচ্ছে না।

বাংলা ট্রিবিউন