সাইফুল্লাহ নাসির,বরগুনা প্রতিনিধিঃ বরগুনার তালতলী উপজেলার খোট্টারচর এলাকায় ৩৫০ মেগাওয়াট কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জমি নিয়ে বিরোধের জের ধরে প্রান্তিক চাষীদের বিরুদ্ধে ৩০ লক্ষ টাকার হাস্যকর চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করা হয়েছে।গ্রেফতার আতংকে ঘর ছাড়ছেন কৃষকরা।কৃষকদের পালিয়ে থাকার সুবাদে বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের কাজ তড়িৎ গতিতে এগিয়ে যাচ্ছে।

সংশ্লিষ্ট পক্ষগুলোর সঙ্গে কথা বলে এবং এলাকায় খোঁজ নিয়ে জানা গেছে,বরগুনার তালতলী উপজেলার ৪১নং ছোট নিশানবাড়িয়া মৌজার খোট্টারচর এলাকায় বেসরকারি প্রতিষ্ঠান আইসোটেক ইলেক্ট্রিফিকেশন লিমিটেড ও বরিশাল ইলেক্ট্রিক পাওয়ার কোম্পানি লিমিটেড চার হাজার কোটি টাকা ব্যয়ে ৩৫০ মেগাওয়াট কয়লা ভিত্তিক তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণের জন্য ইতোমধ্যে জমি ক্রয় শুরু করেছে।তাপ বিদ্যুৎ কেন্দ্র নির্মাণাধীনে অন্তত ২৩০ একর জমি ক্রয় করার কথা থাকলেও জমি ক্রয়ের ক্ষেত্রে একটি সংঘবদ্ধ দালাল চক্রের মাধ্যমে ব্যক্তিমালিকানা জমি,ভূমিহীনদের নামে দেওয়া বন্দোবস্তকৃত কৃষি খাসজমিসহ সরকারি সম্পত্তি নামে-বেনামে ভুয়া কাগজ পত্র বানিয়ে জাল দলিল করে জোর-জবরে দখলের অভিযোগ উঠেছে।এসব অভিযোগ থাকা সত্বেও গত ২৫ জুন আনুষ্ঠানিকভাবে কাজ শুরু করেছে কোম্পানি দুটি।

মালিকরা জমির ন্যায্য মুল্য না পাওয়ায় এবং তাদের জমিতে জোর জবরে মাটি কেটে জমি বিদ্যুৎ কেন্দ্রের দখলে নেয়ায় স্থানীয়রা বাঁধা দেয়।ইতোমধ্যে দালালচক্রসহ কোম্পানির লোকজন ও স্থানীয়দের মুখোমুখী হলে তালতলী থানা পুলিশ নির্মানকাজ বন্ধ করে উভয় পক্ষকে প্রয়োজনীয় কাগজপত্র নিয়ে থানায় আসতে বলে। কিন্তু বেসরকারি বিদ্যুৎ নির্মাতা প্রতিষ্ঠান আইসোটেক ইলেকট্রিফিকেশন লিমিটেড কাগজ পত্র না নিয়ে উল্টো এলাকার নিরিহ প্রান্তিকচাষীদের ঘর ছাড়া করার জন্য মহিলা পুরুষসহ ১৮জনকে আসামী করে থানায় ৩০লক্ষ টাকার চাঁদাবাজী মামলা দায়ের করা হয়েছে।

মামলার ১নং আসামি সুলতান সিকদার জানান, মামাচিন নামের এক রাখাইনের কাছ থেকে জমি ক্রয় করে বছরের পর বছর ভোগদখল করে আসছি। কোম্পানির লোকজন আমার জমিতে জোর জবরে মাটি কাটলে আমি তাতে বাঁধাদেই।এ ঘটনায় উল্টো তারা আমাদের নামে মিথ্যা চাঁদাবাজি মামলা দায়ের করে।এ মামলার অপর এক আসামী মোসাঃ ফাতেমা বেগম বলেন,তাঁদের জমির ন্যায্য মুল্য না দেয়া পর্যন্ত এ মাটিতেই থাকবে।প্রয়োজনে এ মাটিতেই প্রাণ যাবে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য রফিক জোমাদ্দার বলেন, এলাকার নিরীহ প্রান্তিকচাষীদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা হাস্যকর। তিনি আরও বলেন, কোম্পানির লোকজন স্থানীয় সেলিম, মুসা, তৈয়ব, সোহরাব জোমাদ্দারসহ একাধিক দালালের মাধ্যমে একই দাতার কাছ থেকে অন্যায়ভাবে জমি দলিল করে নিয়েছে।

মামলার বাদী আইসোটেক ইলেক্ট্রিফিকেশন কোম্পানির সাইড ইঞ্জিনিয়ার মোঃ মুরাদ বলেন,আমি তা বুজতে পেরেছি,মামলাটা করা ঠিক হয়নি।অফিসের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলচনা করে মামলা উঠানোর ব্যবস্থা করব।এ ছাড়াও তিনি আরও বলেন,মামলার তদন্তকারী অফিসারকে আসামি না ধরার জন্য অনুরোধ করবো।

তালতলী থানার ওসি (তদন্ত) শহিদুল ইসলাম বলেন,বিদ্যুৎ কেন্দ্রের পক্ষ থেকে চাঁদাবাজী মামলা করা হয়েছে,তবে কাউকে হয়রানি করা হয়নি।তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা নেয়া হবে।