দর্পণ প্রতিদিন
পৃথিবীর মায়া ত্যাগ করে পরপারে পাড়ি জমিয়েছেন ভারতের সাবেক প্রধানমন্ত্রী অটল বিহারী বাজপেয়ী। গতকাল তিনি নয়াদিল্লির একটি হাসপাতালে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন। বর্ষীয়ান এই রাজনীতিবিদ দীর্ঘদিন ধরেই বিভিন্ন শারীরিক জটিলতায় ভুগছিলেন । একটি কিডনি অচল হয়ে পড়ার পাশাপাশি সম্প্রতি তার স্মৃতিশক্তিও অনেকটা লোপ পায়। একসময় রাজনৈতিক সম্মেলনে অসাধারণ বক্তৃতা দিয়ে লাখো মানুষের মন জয় করলেও গত কয়েক বছর ধরে কথা বলতে পারতেন না তিনি। মূত্রনালীতেও সংক্রমণ দেখা দেয়।
শারীরিক অবস্থার ক্রমশ অবনতিতে গত ১১ জুন তাকে নয়াদিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিকেল সায়েন্সেস হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। গতকাল এই হাসপাতালেই তিনি শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যমের খবর, বুধবার দুপুর থেকেই অটল বিহারী বাজপেয়ীর শারীরিক অবস্থার গুরুতর অবনতি হতে শুরু করে। এদিন দুপুরে তাকে দেখতে হাসপাতালে যান প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কেন্দ্রীয় বস্ত্রমন্ত্রী স্মৃতি ইরানি ও কেন্দ্রীয় রেলমন্ত্রী পীযূষ গয়াল। গত কয়েক মাসে তার শারীরিক অবস্থার খোঁজ নিতে দেশের গণ্যমান্য ব্যক্তিদের নিয়মিত ভিড় লেগে থাকতো হাসপাতালে। বিজেপি সভাপতি অমিত শাহ, কংগ্রেস সভাপতি রাহুল গান্ধীসহ অনেকেই গত কয়েক দিন ধরে নিয়মিত খোঁজখবর নিচ্ছিলেন তার শারীরিক অবস্থার।
শানিত যুক্তি এবং অসামান্য কথনের জন্য দলমত নির্বিশেষে প্রশংসিত ছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী। কিন্তু ২০০৯ সালে স্ট্রোক হওয়ার পর থেকে তার স্মৃতিশক্তি লোপ পেতে শুরু করে। সেই থেকেই কথা বলার শক্তিও হারাতে থাকেন বাজপেয়ী। গত তিন দিনে তার শারীরিক অবস্থার দ্রুত অবনতি হচ্ছিল। ভেন্টিলেশনে রাখা হয়েছিল তাকে। কিন্তু সুস্থ জীবনে ফেরানোর সকল প্রচেষ্টা ব্যর্থ করে দিয়ে অবশেষে না ফেরার দেশে চলে গেলেন সাবেক এই প্রধানমন্ত্রী।
১৯৯৬, ১৯৯৮, ১৯৯৯ তিনবার প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শপথ নিয়েছিলেন অটল বিহারী বাজপেয়ী। প্রথম দফায় ১৩ দিন, দ্বিতীয় দফায় ১ মাস আর তৃতীয় দফায় পূর্ণ সময়ের জন্য প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন তিনি। ২০১৪ সালে মোদির সরকার ক্ষমতায় আসার পরে বাজপেয়ীকে ভারত রত্ন দেয়া হয়।