দর্পণ ডেস্ক:
জাতীয় দলের ক্রিকেটার মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের বিরুদ্ধে ১০ লাখ টাকা যৌতুক দাবি ও নারী নির্যাতন করার অভিযোগে মামলা করেছেন তার স্ত্রী সামিয়া শারমিন উষা। রোববার দুপুরে ময়মনসিংহের সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেটের ১ নম্বর আমলি আদালতে যৌতুক নিরোধ আইনে এই মামলাটি করা হয়।
মামলার অভিযোগ ও পারিবারিক সূত্রে জানা যায়, ২০১২ সালের ২৮ অক্টোবর মোসাদ্দেক হোসেন সৈকতের সঙ্গে তার খালাত বোন সামিয়া শারমিন উষার বিয়ে হয়। বিয়ের পূর্বে প্রেমের সম্পর্ক থাকলেও দুই পরিবারের সম্মতিতেই পারিবারিকভাবে বিবাহবন্ধনে আবদ্ধ হন তারা। বিয়ের পর ময়মনসিংহের কাঁচিঝুলিতে নিজ বাসায় সামিয়াকে রেখে সৈকত বেশিরভাগ সময় ক্রিকেট খেলার জন্য ঢাকায় অবস্থান করতেন। শারীরিক নির্যাতনে একবার সামিয়ার গর্ভপাত ঘটানোর অভিযোগ রয়েছে সৈকতের বিরুদ্ধে। অভিযোগে আরও বলা হয়, গত ১৫ আগস্ট নিজ বাসায় স্ত্রী সামিয়াকে বাবার বাড়ি থেকে ১০ লাখ টাকা যৌতুক এনে দেয়ার জন্য স্বামী মোসাদ্দেক ও তার মা পারুল বেগম শারীরিক নির্যাতন চালায়। খবর পেয়ে পরিবারের সদস্যরা সামিয়াকে উদ্ধার করেন।
সামিয়ার বড় ভাই মোজাম্মেল কবির জানান, খালাতো ভাই সৈকত পারিবারিকভাবে মেলামেশার সুযোগে ছোট বোন সামিয়া শারমিনের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়ে। পরবর্তীতে দুই পরিবারের সম্মতিতে বিয়ে হয়। সৈকত জাতীয় দলে নিয়মিতভাবে সুযোগ পাওয়ার পর থেকেই তার অবস্থার পরিবর্তন হয়। তার অভিযোগ, সৈকত ঘরে বসেই বন্ধুদের নিয়ে মদ্যপ অবস্থায় নানা কুরুচিপূর্ণ মন্তব্য করতেন। এক পর্যায়ে পর নারীতে আকৃষ্ট হয়ে নানা অসামাজিক কার্যক্রমে লিপ্ত হয় সৈকত। সামিয়া প্রতিবাদ করলেই সৈকত ক্ষিপ্ত হয়ে উঠতেন।
সামিয়া শারমিন উষা জানান, সৈকত তার কাছে ব্যবসা করার জন্য গত ১৫ আগস্ট ১০ লাখ টাকা দাবি করেন। ওই টাকা দিতে অপারগতা প্রকাশ করলে সৈকত দ্বিতীয় বিয়ে করবে বলে জানায় এবং তাকে মারধর করে।
সৈকত বলেন, আমাদের বিয়ে হয়েছে ২০১২-এর শেষে। বলতে গেলে ৬ বছর হয়ে গেছে। গেল তিন বছর ধরেই আমার সঙ্গে স্ত্রীর কোনো বনিবনা হচ্ছিল না। বলতে পারেন মতের অমিল। যে কারণে বেশ কিছুদিন থেকেই আমরা দুজন আলাদা আছি। যেহেতু আমাদের মিল হচ্ছিল না তাই সিদ্ধান্ত নিয়েছি ডিভোর্সের। এরই মধ্যে সেটি হয়েও গেছে।
এদিকে সৈকতের ছোট ভাই মোসাব্বের হোসেন জানান, ৬ বছর আগে সৈকতের সঙ্গে উষার বিয়ে হলেও বনিবনা না হওয়ায় গত ১৫ আগস্ট সৈকত ডিভোর্স লেটার পাঠায় সামিয়াকে। কিন্তু সামিয়া বিয়ের কাবিননামার চেয়ে অতিরিক্ত অর্থ ভাইয়ের কাছে দাবি করে। সৈকত সেই টাকা না দেয়ায় মিথ্যা ও বিভ্রান্তিকর তথ্য দিয়ে ওই মামলাটি দায়ের করা হয় বলে দাবি তার।