দর্পণ ডেস্ক :
দক্ষিণ কলকাতার তারাতলা-ডায়মন্ড হারবার সড়কের মাঝেরহাট সেতুর একাংশ মঙ্গলবার স্থানীয় সময় বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে ভেঙে পড়েছে। এ সময় সেতুতে অনেক গাড়ি চলাচল করছিল।
এ ঘটনায় অনেকের হতাহতের আশঙ্কা করা হচ্ছে। রাজ্য সরকার তাৎক্ষণিকভাবে পাঁচজনের মৃত্যুর কথা জানিয়েছে। গুরুতর আহত হয়েছেন ৯ জন। তবে কর্তৃপক্ষ আশঙ্কা করছে, অনেকে বিচ্ছিন্নভাবে কিংবা গাড়ির মধ্যে সেতুর ভাঙা অংশের নিচে আটকে রয়েছে।
দুর্ঘটনার পরই সেখানে পৌঁছেন রেলের কর্মকর্তারা। তাদের তৎপরতায় শুরু হয় উদ্ধার কাজ।
পশ্চিমবঙ্গের সরকারি সূত্র জানায়, মাঝেরহাট সেতুটির একাংশ বিকেলে ভেঙে পড়ার সময় সেতুর ওপর ছাড়াও তার নিচ দিয়ে গাড়ি চলাচল করছিল। তাই এ দুর্ঘটনায় বড় ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করা হচ্ছে। এ সেতুর নিচেই রয়েছে বজবজ শাখার ট্রেন লাইন। ঘটনার পরেই শিয়ালদহ ডিভিশনের ওই লাইনে সব ট্রেন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়েছে। অন্যদিকে সেতুর পাশেই রয়েছে মাঝেরহাট স্টেশন।
উদ্ধারকর্মী ও প্রত্যক্ষদর্শী সূত্রে আরও জানা যায়, দুর্ঘটনার সময় সেতুর নিচে বহু মানুষ অবস্থান করছিল। অসংখ্য শ্রমিকও ছিলেন। শ্রমিকদের অনেকেই বাস করেন সেতুর নিচে। একটি খালও রয়েছে সেখানে।
পুলিশ বলেছে, দুর্ঘটনার পর কিছু রক্তাক্ত দেহ এবং ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা কিছু গাড়ি তারা দেখতে পেয়েছে। এরই মধ্যে আহত ১১ জনকে কলকাতার পিজি হাসপাতাল ও সিএমআরআই হাসপাতালে নেয়া হয়েছে। আর বিধ্বস্ত সেতুর ধ্বংসাবশেষ না সরানো পর্যন্ত কত মানুষ তার নিচে চাপা পড়ে আছে, তা বলা যাচ্ছে না।
দুর্ঘটনার পর পুলিশ, সেনাবাহিনী, সিআইএসএফ, দমকল বাহিনী, বিপর্যয় মোকাবেলা কমিটির সদস্যরা উদ্ধার কাজে অংশ নেন। দুর্ঘটনার খবর শুনে সেখানে যান পশ্চিমবঙ্গের পৌরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, কলকাতার পুলিশ কমিশনার রাজীব কুমারসহ দমকলমন্ত্রী।
ঘটনার প্রত্যক্ষদর্শী রবীন্দ্রনাথ প্রামাণিক বলেন, চোখের সামনেই সেতুটাকে ভেঙে পড়তে দেখলাম। প্রতিদিনের মতোই যাচ্ছিলাম নিউ আলিপুরে। আমি মহেশতলার বাসিন্দা। আকরা থেকে ট্রেনে করে যাই নিউ আলিপুর। এই দিন মাঝেরহাট স্টেশনে দাঁড়ানো ছিল আপ বজবজ শিয়ালদহ লোকাল ট্রেন। হঠাৎ শুনতে পেলাম বিকট একটা শব্দ। ট্রেনের দরজা থেকে বাইরে দেখি ভেঙে পড়েছে নীল-সাদা রঙ করা সেতুটি।
পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, একটা দুর্ঘটনা ঘটে গেছে। দুর্ঘটনা তো কেউই চায় না। কেন ঘটল, কীভাবে ঘটল, সেসব নিয়ে পরে আলোচনা হবে। নিশ্চয়ই সব খতিয়ে দেখা হবে। কিন্তু তার আগে জরুরি সেখানে আটকে পড়া মানুষকে উদ্ধার করা। তাদের নিরাপদ আশ্রয়ে নিয়ে যাওয়া এবং চিকিৎসার ব্যবস্থা করা। এমন জরুরি পরিস্থিতিতে সবাইকে সব রকম ব্যবস্থা নেয়ার কথা বলেন তিনি।
৫-৯ টুটুল