দর্পণ ডেস্ক :
চরম বেকারত্ব এখনও বিরাজ করছে গ্রিসে । কাঙ্ক্ষিত কর্মসংস্থানের অভাবে ভঙ্গুর অবস্থানে রয়েছে দেশটির পুরো অর্থনৈতিক ব্যবস্থা। যার ফলে দেখা দিয়েছে অধিক জন্ম নিয়ন্ত্রণ প্রবণতা।
ইউরো জোনের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার কর্মসূচিতে সফলতা এলেও কর্মসংস্থান বাড়েনি গ্রিসে। এ অবস্থায়ও গ্রিসের প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাস আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিয়ে বলেছেন, দেশের অর্থনীতি এখন আগের থেকে অনেক ভালো অবস্থানে রয়েছে।
ঋণ সংকটে জর্জরিত গ্রিস দেউলিয়া হওয়া থেকে বাঁচতে ইউরোভুক্ত দেশগুলো থেকে তিন বছর মেয়াদি ঋণ সহযোগিতা নিয়েছিল। ইউরো জোনের অর্থনীতি পুনরুদ্ধার বা বেইল আউট নামে এ কর্মসূচিতে বেশ ভালোভাবেই উতরে যায় দেশটি। পরিশোধও করেছে, ঋণ প্রকল্পের ৬ হাজার ১৯০ কোটি ইউরো।
তবে এখনও স্থিতিশীল অবস্থানে পৌঁছাতে পারেনি গ্রিসের অর্থনীতি। বেকারত্বের সমস্যাই কুড়ে কুড়ে খাচ্ছে অর্থনীতির ভীতগুলোকে।
সম্প্রতি দেশটির পরিসংখ্যান সংস্থা হেলিনিক পরিসংখ্যান কর্তৃপক্ষের এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০ থেকে ৬৪ বছর বয়সী মানুষের মধ্যে বেকারত্বের হার ২১ দশমিক ৪ শতাংশ। ২০১৭ সালের হিসাবে করা এই প্রতিবেদনটি নিয়ে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করেন গ্রিসের সাধারণ মানুষ।
গ্রিসের সাধারণ মানুষ বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ডিগ্রি নিয়ে হোটেলে কাজ করছেন এমন বহু নারী-পুরুষ এ দেশে রয়েছেন। আমি বলছি না তারা ছোট কাজ করছেন। তবে এর মাধ্যমে আপনি আপনার স্বপ্ন থেকে দূরে সরে যাচ্ছেন। আসলে এ দেশে মানুষের কোনো স্বপ্নই পূরণ হয় না। মানুষজন ভালো চাকরির অভাবে রয়েছেন। এতে অর্থনৈতিক টানাপড়েন তৈরি হচ্ছে। সবচেয়ে আশঙ্কার কথা হলো, গ্রিসে এখন অনেক দম্পতিই সন্তান জন্ম দিতে নারাজ।’
২০০৮ পরবর্তী চরম সংকটের সময় গ্রিসে বেকারত্বের হার বেড়ে ২৮ শতাংশ হয়েছিল। তবে বর্তমানে তা খুব একটা হ্রাস করতে পারেনি সরকার। পাশাপাশি অর্থনীতিকে চাঙ্গা করতে না পারায় বিরোধী মহলে প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাসের সমালোচনা জারি আছে। এ অবস্থায় আগাম নির্বাচনের সম্ভাবনা উড়িয়ে দিলেন বামপন্থি এ নেতা। উল্টো জানালেন, গ্রিসের অর্থনীতি এখন আগের চেয়ে অনেক মজবুত অবস্থানে রয়েছে।
গ্রিস প্রধানমন্ত্রী অ্যালেক্সিস সিপ্রাস বলেন, ‘আমার কাছে মনে হয়, দেশে অর্থনীতির চাকা বেশ ভালোভাবেই সচল রয়েছে। এছাড়া রাজনৈতিক স্থিতিশীলতাও আছে। সুতরাং আগাম নির্বাচন নয়, ২০১৯ সালে মেয়াদ শেষেই আমরা নির্বাচন আয়োজন করবো।’
অর্থনীতিবিদরা মনে করেন, আগামী দিনগুলোতে শক্তিশালী প্রবৃদ্ধি অর্জন করাটা গ্রিসের জন্য প্রধান চ্যালেঞ্জ।
২০০৮ সালে বিশ্ব মন্দা চরম আকার ধারণ করলে ইউরোপের এ দেশটিতে তার মারাত্মক প্রভাব পড়ে।