দর্পণ ডেস্ক :
চট্টগ্রামের স্কুলছাত্রী তাসফিয়া আমিনকে হত্যা নয় বরং সে আত্মহত্যা করেছে বলে উল্লেখ করে আদালতে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিয়েছে নগর গোয়েন্দা পুলিশ।
রোববার আদালত পুলিশের কাছে এ প্রতিবেদন জমা দেয়া হয়েছে। নগর গোয়েন্দা পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আবু বকর সিদ্দিক এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
এর আগে থানা পুলিশের তদন্তেও তাসফিয়াকে হত্যার কোন আলামত মেলেনি। তবে কিভাবে তাসফিয়া নগরের জিইসি মোড় থেকে প্রায় ২০ কিলোমিটার দূরে নেভাল কর্ণফুলীর নদীর তীরে গেছে তার কোন উত্তর খুঁজে পাননি তদন্ত কর্মকর্তারা।
ভিডিও ফুটেজে যে সিএনজি অটোরিকশায় তাকে উঠতে দেখা গেছে, তাও শনাক্ত করতে পারেনি পুলিশ। ঘটনাটি হত্যাকাণ্ড হিসেবে প্রমাণিত না হওয়ায় ছয় আসামিকে অব্যাহতি দেয়ার সুপারিশ করা হয়েছে প্রতিবেদনে।
অতিরিক্ত উপ-কমিশনার আবু বকর সিদ্দিক জানান, পোস্টমর্টেম রিপোর্ট, ফরেনসিক প্রতিবেদন ও ডিএনএ প্রতিবেদনে হত্যাকাণ্ডের কোন আলামত পাওয়া যায়নি। এছাড়া প্রত্যক্ষদর্শীসহ ১৬ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যও নেয়া হয়েছে। সাক্ষীদের মধ্যে কয়েকজন তাসফিয়াকে স্বেচ্ছায় কর্ণফুলী নদীতে ঝাঁপ দিতে দেখেছেন; যারা নৌকায় তার খোঁজ করেছেন। তদন্তেও হত্যার কোন আলামত পাওয়া যায়নি।
তিনি বলেন, নগর গোয়েন্দা পুলিশ ও পতেঙ্গা থানা পুলিশ মিলে চার মাস ধরে এ মামলাটি তদন্ত করেছে। তদন্তে আর কোন অগ্রগতি হবে না মনে হয়েছে তাই ছয় আসামিকে অব্যাহতি দিয়ে চূড়ান্ত প্রতিবেদন দাখিল করা হয়েছে।
মামলাটির এজাহারের বর্ণনা ও সংগঠিত ঘটনার সঙ্গে তথ্যগত ভুল রয়েছে বলে প্রতিবেদনে উল্লেখ করেছেন তদন্ত কর্মকর্তা।
গত ২ মে চট্টগ্রাম নগরীর পতেঙ্গা থানার নেভাল সমুদ্র সৈকতের পাথরে উপুড় অবস্থায় তাসফিয়া আমিনের লাশ উদ্ধার করে পুলিশ। সে সানশাইন গ্রামার স্কুল অ্যান্ড কলেজের নবম শ্রেণীর ছাত্রী ছিল।
এ ঘটনায় তাসফিয়ার বাবা মো. আমিন বাদী হয়ে নগরীর পতেঙ্গা থানায় ছয়জনকে আসামি করে একটি হত্যা মামলা করেন। আসামিরা হলো- মেয়ের বন্ধু আদনান মির্জা, মো. সোহাইল, শওকত মিরাজ, আসিফ মিজান, ইমতিয়াজ সুলতান ইকরাম ও মো. ফিরোজ। এদের মধ্যে দুজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। মো. ফিরোজ আদালতে আত্মসমর্পন করলে তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
পুলিশ সুত্র জানায়, বাংলাদেশ এলিমেন্টারি স্কুলের ছাত্র আদনান মির্জার সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক ছিল তাসফিয়া আমিনের। যেটি তাসফিয়া আমিনের পরিবার পছন্দ করতো না। এজন্য তাকে বাসা থেকে বের হতে দেয়া হতো না।
গত ১ মে কাউকে না বলে বাসা থেকে বের হয়ে যায় তাসফিয়া আমিন। বন্ধু আদনান মির্জার সঙ্গে গোল পাহাড় মোড়ের চায়না গ্রিল রেস্টুরেন্টে যায় সে। সেখান থেকে সন্ধ্যা ৬টা ৩৭ মিনিটে বের হয়ে একা সিএনজি অটোরিকশায় উঠে তাসফিয়া। এরপর থেকে তার আর খোঁজ পাওয়া যায়নি। পরদিন সকালে জিইসি মোড়ের ২০ কিলোমিটার দূরে পতেঙ্গা নেভালে কর্ণফুলী নদীর তীরে তার লাশ পাওয়া যায়।

News Editor : Ganash Chanro Howlader. Office: 38-42/2 Distillery Road, 1st floor, Gandaria, Dhaka-1204.