দর্পণ ডেস্ক : নারায়ণগঞ্জে মোবাইল চুরির অভিযোগ তুলে এনে দুই সন্তানসহ দরিদ্র নারীকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করেছেন এক ইউপি সদস্য ও তার পরিবার। এ সময় ওই নারীর দুই সন্তানকে গরম খুন্তির ছ্যাঁকা দেয়া হয়েছে বলেও অভিযোগ পাওয়া গেছে।
নির্যাতনের শিকার ওই নারী থানায় ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা না নিয়ে উল্টো তাকে তাড়িয়ে দেয়। শেষমেষ বিচারের জন্য বিভিন্ন দফতরে ঘোরার পর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে শনিবার বন্দর থানায় ইউপি সদস্য খলিলের বিরুদ্ধে মামলা গ্রহণ করে থানা পুলিশ। কিন্তু মামলা হলেও এখন পর্যন্ত গ্রেফতার হননি অভিযুক্ত ইউপি সদস্যসহ তার সহযোগীরা।
শহরের পাইকপাড়া এলাকার ভাড়াটিয়া সালাউদ্দিন রহমান জীবনের স্ত্রী মনি আক্তার গত বুধবার দুই শিশুসন্তান নিয়ে মদনপুর ইউপি সদস্য খলিল মেম্বারের বাড়িতে খাবার খান। এ সময় ওই মেম্বারের একটি মোবাইল ফোন হারিয়ে যায়। এ ঘটনায় মনি আক্তারকে মোবাইল চোর আখ্যা দিয়ে গাছে বেঁধে রেখে দুই শিশুসন্তানকে লাঠি দিয়ে পিটিয়ে আহত করে এবং লোহার খুন্তি গরম করে মেয়ে সুমীর (৬) পায়ে ও হাতে এবং মারুফের (৮) হাতে ছ্যাঁকা দেয়া হয়। ৪ ঘণ্টা আটকে রাখার পর অবস্থা বেগতিক দেখে তাদের ছেড়ে দিলে রাতেই মনি আক্তার থানায় অভিযোগ করেন।
উপজেলার মদনপুর ইউপি সদস্য খলিলের বাড়িতে খাবার খেতে যান তারা। মেম্বারের ঘর থেকে মোবাইল চুরি হলে মনি আক্তারকে দায়ী করে। এ সময় মনি আক্তার কোনো মোবাইল নেননি বললেও কর্ণপাত না করে খলিলসহ তার পরিবারের লোকজন গাছে বেঁধে নির্যাতন করেন এবং লোহার খুন্তি গরম করে তার দুই শিশুসন্তানকে ছ্যাঁকা দেন।
থানায় গিয়ে অভিযোগ করলে পুলিশ মামলা না নিয়ে উল্টো মেম্বারের সঙ্গে আপোষ করার কথা বলে। পুলিশ আরও বলে, ‘মেম্বার অনেক ক্ষমতাশালী, তার সঙ্গে মামলা করলে পারবে? তোমাকে কিছু টাকা নিয়ে দেই আপোষ হয়ে যাও।’
পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নির্দেশে মনি আক্তারকে বন্দর থানা পুলিশ ডেকে এনে ইউপি সদস্য খলিল মেম্বারসহ ৩ সহযোগীর বিরুদ্বে মামলা নেয়। মামলার পর থেকে মেম্বার ও সহযোগীদের হুমকিতে শিশুসন্তানদের নিয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন মনি আক্তার।
পরিদর্শক (তদন্ত) হারুনুর রশিদ বলেন, নির্যাতিতা মনি আক্তারের অভিযোগের ভিত্তিতে মামলা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা অব্যাহত আছে।