দর্পণ ডেস্ক : বাণিজ্যমন্ত্রী তোফায়েল আহমেদ বলেছেন, ২৮ জানুয়ারি বর্তমান সরকারের মেয়াদ শেষ হবে সংবিধান অনুসারে। তার আগের ৯০ দিনের মধ্যে যে কোনো দিন নির্বাচন কমিশন নির্বাচনের তারিখ ঘোষণা করবে। পরে সে অনুযায়ী নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। সেই নির্বাচনকালীন সরকারে থাকবে বর্তমান প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নেতৃত্বাধীন সরকার।
শনিবার বিকেলে ভোলা বাংলা স্কুল মাঠে সাবেক ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোফাজ্জল হোসেন শাহীন-এর স্মরণসভা ও দোয়া মাহফিল অনুষ্ঠানের আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।
বাণিজ্যমন্ত্রী বিএনপির সমালোচনা করে বলেন, ওনারা আবদার করেছে আমাদের পদত্যাগ করতে হবে। পার্লামেন্ট বাতিল করতে হবে, ওনাদেরকে ক্ষমতায় বসাতে হবে। তাদের দেশের মানুষের প্রতি আস্থা নেই। তাই বিদেশিদের কাছে ধরনা ধরছে। তাই আমি একটি বক্তব্যে বলেছিলাম, মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প, যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী থেরেসা মে ও ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি তাদের কোনো কাজ নেই তারা বাংলাদেশের নির্বাচন নিয়ে মাথা ঘামাবে। কেউ আসবে না। ওরা গিয়েছিল জাতিসংঘে সেখানে মহাসচিব দেখা করেননি, একজন ছোটো কর্মকর্তার সাথে দেখা করেছেন। আজকে বিশ্বের প্রতিটি নেতা চায় আবার শেখ হাসিনা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী হোক।
তিনি আরো বলেন, আমাকে সাতবার মিথ্যা মামলা দিয়ে বিরোধীদল আটক করেছে। তবুও নীতির সাথে আপস করিনি। সে দিনগুলোতে মোফাজ্জল হোসেন শাহীন আমাদের সাথে ছিলেন। আমরা সে সময় যে রাজনীতি করতাম সে সময়গুলো আজ হারিয়ে গেছে।
তিনি বলেন, স্বাধীনতাবিরোধী যারা মাকে পুত্রহারা বোনকে স্বামীহারা করেছে, মা-বোনের ইজ্জত লুট করেছে তাদেরকে জিয়াউর রহমান ক্ষমতায় এসে ক্ষমতার আসনে বসিয়েছেন। এমন কোনো ভোলার আওয়ামী লীগের নেতাকর্মী নেই যাদেরকে বিএনপির আমলে নির্যাতনের শিকার হতে হয়নি। হাফিজ ইব্রাহিমের নেতৃত্বে দৌলতখান ও বোরহানউদ্দিনে দিনের পর দিন তাণ্ডব চালানো হয়েছিল। আমার গাড়িতেও গুলি করা হয়েছিল। যারা ভোলার বাবুল মোল্লাকে হত্যা করেছে তারা ভালোভাবে মৃত্যুবরণ করতে পারেননি। আজকে বাংলাদেশের রাজনীতি আপনাদেরকে মূল্যায়ন করতে হবে।
মন্ত্রী আরো বলেন, যারা ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলা করে শেখ হাসিনাকে হত্যা করার চেষ্টা করেছিল আজকে তাদের ফাঁসির হুকুম হয়েছে। তারেক রহমানসহ ১৯ জনের কারাদণ্ড হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া এতিমের টাকা আত্মসাতের দায়ে আজকে জেলে আছেন। যারা বাংলা ভাই, সাইদ ভাই নামে আমাদের আ’লীগের লোককে হত্যা করেছিল তাদের সাথে আজ জোট হয়েছে। এ জোট যদি ক্ষমতায় আসে তাহলে আপনারা ভালোভাবে বাড়িতে থাকতে পারবেন না। তাদের প্রতিনিধি হিসেবে এখানে আসবে যারা তাদের অনেককেই চিনেন। তারা আগে আপনাদের কাছে আসেনি, এখন আসবে।
তিনি বলেন, ২০১৪ সালে বিএনপি নির্বাচন করেনি, সেই নির্বাচন থেমে থাকেনি। সেই নির্বাচন আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃতি পেয়েছে। মওদুদ আহমেদকে আমরা চিনি, কামাল হোসেনকেও আমরা চিনি। তিনি সরাসরি কোনো দিন ভোটে জিতেন নাই, বঙ্গবন্ধুর ছেড়ে দেয়া আসনে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় জিতেছেন। তিনি দায়িত্ব নিয়েছেন এ খুনি বিএনপির দলকে রক্ষা করার।
কেউই বিএনপিকে রক্ষা করতে পারবে না উল্লেখ করে তিনি বলেন, আগামী নির্বাচনে তারা যেহেতু ঐক্যবদ্ধ হয়েছে তাহলে নির্বাচনে আসুক। তারা যে ৭ দফা দিয়েছে তার প্রতিটিই সংবিধান পরিপন্থী।
ভোলা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মোমিন টুলুর সভাপতিত্বে প্রধান অতিথির বক্তব্যে বাণিজ্যমন্ত্রী আরো বলেন, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা যদি আরো পাঁচ বছর ক্ষমতায় থাকে তাহলে বাংলাদেশ হবে বিশ্বের মধ্যে একটি শুধু উন্নয়নশীল দেশই নয়, গর্বিত একটি দেশ। এ সময় বাণিজ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নৌকা মার্কায় ভোট দিয়ে আবার ক্ষমতায় আনার আহ্বান জানান।
এ সময় বিশেষ অতিথির বক্তব্য রাখেন সংরক্ষিত মহিলা আসনে সংসদ অ্যাডভোকেট মমতাজ বেগম, সদর উপজেলা চেয়ারম্যান মোশারেফ হোসেন, সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট জুলফিকার আহমেদ, ভোলা সরকারি কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ রুহুল আমিন জাহাঙ্গীর, মরহুম শাহীন মিয়ার বড় ছেলে আশফাক হোসেন শুভসহ প্রমুখ।
এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক জহিরুল ইসলাম নকিব, এনামুল হক আরজু ও সাংগঠনিক সম্পাদক মইনুল হোসেন বিপ্লব।
আমিনুর