দর্পণ ডেস্ক : র‌্যাবের ভ্রাম্যমাণ আদালত সাভারের নবীনগর এলাকার মির্জানগরে অবস্থিত গণস্বাস্থ্য সমাজ ভিত্তিক মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল ও গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসে অভিযান চালিয়েছে ।

মঙ্গলবার বিকেল সাড়ে ৪টা থেকে রাত সাড়ে ৮টা পর্যন্ত  তিনজন ম্যাজিস্ট্রেটের সমন্বয়ে এই অভিযান পরিচালিত হয়।

ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী এ প্রতিষ্ঠান দুটির প্রতিষ্ঠাতা ও বর্তমানে ট্রাস্টি বোর্ডের সদস্য বলে জানা গেছে।

গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালের অ্যান্টিবায়োটিক উৎপাদন শাখাটি আলাদা না হওয়ায় ও সেখানকার তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ না করায় ফার্মাসিউটিক্যালটি সিলগালা করে দেয়া হয়। এছাড়াও প্রতিষ্ঠানটিকে ১৫ লাখ টাকা জরিমানা করা হয়েছে।

র‌্যাব হেড কোয়াটার্স, র‌্যাব-৪, সাভার উপজেলা প্রশাসন, স্বাস্থ্য অধিদফতর, ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর ও পুলিশ প্রশাসনের যৌথ উদ্যোগে পরিচালিত অভিযানে র‌্যাব সদর দফতরের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারোয়ার আলমকে সহযোগীতা করেন সাভার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শেখ রাসেল হাসান ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) প্রণব কুমার ঘোষ।

গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসে অভিযানের সময় দেখা যায়, কাঁচামালের গুদামের দেয়াল থেকে চুন খসে পড়ছে। কেমিক্যালের বোতলগুলোতে কোন মেয়াদের তারিখ লেখা নেই। রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহারের কোন রেজিস্ট্রার নেই। এছাড়াও মেয়াদোত্তীর্ণ রাসায়নিক দিয়ে বিভিন্ন ধরনের ঔষধ তৈরি করার নমুনা পাওয়া যায়।

র‌্যাব জানায়, ভ্রাম্যমাণ আদালতের উপস্থিতি বুঝতে পেরে মান নিয়ন্ত্রণ বিভাগের কেমিস্ট শিবুতোষ মালাকার বেশকিছু রাসায়নিকের বোতলের গায়ে থাকা মেয়াদ কলম দিয়ে কেটে সময় বাড়িয়ে দেন। অন্যদিকে প্যাথিডিন উৎপাদন দেখতে যাওয়ার সময় পরিকল্পিতভাবে সেখানকার বিদ্যুৎ লাইন বন্ধ করে রাখাসহ বিভিন্নভাবে ভুল তথ্য সরবরাহের মাধ্যমে ভ্রাম্যমাণ আদালতকে অসহযোগিতা করেন গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসের গবেষণা, উন্নয়ন ও মাননিয়ন্ত্রণ বিভাগের ব্যাবস্থাপক ডা. মোশরেকা খাতুন, উৎপাদন পরিচালক নিতিষ চন্দ্র চৌধুরী, উৎপাদন ব্যবস্থাপক বিনিতা বিলকিস ও কেমিস্ট শিবুতোষ মালাকার।

নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মো. সারোয়ার আলম বলেন, দেশের ৯৫ ভাগ বেসরকারি হাসপাতালে গণস্বাস্থ্য ফার্মাসিউটিক্যালসের প্যাথিডিন ব্যবহার করা হয়। কিন্তু এখানে এসে এত নামী একটি প্রতিষ্ঠানের কার্যক্রম দেখে অত্যন্ত কষ্ট পেয়েছি। তাদের অ্যান্টিবায়োটিক শাখাটিকে পৃথক করার জন্য ৬ মাস আগে ঔষধ প্রশাসন অধিদফতর থেকে নোটিশ দেয়া হলেও তা অমান্য করা হয়েছে। এছাড়াও ওষুধ তৈরির ক্ষেত্রে বিভিন্ন অনিয়ম পাওয়া গেছে। এ থেকে বোঝা যাচ্ছে এসব ওষুধ খেয়ে প্রকৃতপক্ষে রোগীদের কোন উপকার হচ্ছে না।

অভিযানের সময় অন্যান্যের মধ্যে আরও উপস্থিত ছিলেন ওষুধ প্রশাসন অধিদফতরের তত্ত্বাবধায়ক এটিএম গোলাম কিবরিয়া, ওষুধ পরিদর্শক নাহিন আল আলম, তাহমিদ জামিল, র‌্যাব-৪ এর কোম্পানি কমান্ডার মেজর আব্দুল হাকিম, আশুলিয়া থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. জাবেদ মাসুদ প্রমুখ।