মোঃশাহাগির মৃধা, সরাইল(ব্রাহ্মণবাড়িয়া): ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইলে গ্রাহকদের বীমা দাবির ডিজঅনার চেক গোপনে নগদ টাকার বিনিময়ে নিতে এসে ভূক্তভোগী গ্রাহকদের নানা চাপে বেকায়দায় পড়ে যান ডায়মন্ড লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানির প্রধান কার্যালয় থেকে আসা তিন কর্মকর্তা। এ সময় উত্তেজিত লোকজন কোম্পানির এমডি পিপলু বিশ্বাসের চেক প্রতারণার বিচার দাবি করেন।
ভূক্তভোগীদের তোপের মুখে পড়া কর্মকর্তারা হলেন, কোম্পানিটির সিএফও মোঃ মামুন খাঁন, সেক্রেটারী ও মোঃ রফিকুজ্জামান রিপু ও ডিএমডি (উন্নয়ন) মোঃ হুমায়ন কবির স্বপন। ভূক্তভোগী গ্রাহকেরা উত্তেজনা দেখালে কোম্পানির এ তিন কর্মকর্তা একপর্যায়ে বেকায়দায় পড়ে যান।
১২ নভেম্বর সোমবার কোম্পানিটির ব্রাহ্মণবাড়িয়ার সরাইল অফিসে এ ঘটনা হয়। পরে আগামি ১৫ দিনের মধ্যে গ্রাহকের বৈধ সকল দাবি পরিশোধের আশ্বাস দিলে উত্তেজিত গ্রাহকেরা নমনীয় হন।
ভূক্তভোগী গ্রাহক মোছাঃ শারমিন বেগম, শহিদুল ইসলাম, কোকিলা বেগম সহ কয়েকজন অভিযোগ আকারে জানান, ডায়মন্ড লাইফের এখানকার শত শত বীমা গ্রাহক দেড় বছর ধরে বীমা দলিল ও পাস বই পাচ্ছে না। ১৪ মাসে গ্রাহকের মৃত্যুদাবির কূলকিনারা হচ্ছে না। কমপক্ষে ৭৫ জন গ্রাহক বছর পেরিয়ে গেলেও এস.বি (বোনাস) পাচ্ছে না।
এ কোম্পানির দেয়া গ্রাহকদের দাবির চেক ডিজঅনার হচ্ছে।
কোম্পানির ব্যাংক হিসাবে টাকা নাই। গ্রাহকের লক্ষ লক্ষ টাকা এমডি পিপলু বিশ্বাস কৌশলে লুটে পুটে খাচ্ছে।
এর আগে পিপলু বিশ্বাস প্রগ্রেসিভ লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানির ডিএমডি ছিলেন। সেই কোম্পানি থেকে তিনি কোটি কোটি টাকা কৌশলে বাগিয়ে নেন। সেই কোম্পানিটি ইতিমধ্যে তার বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট দফতরগুলোতে চিঠিও দিয়েছে। এখন তিনি ডায়মন্ড লাইফ কোম্পানিকে ধ্বংস করার উদ্যোগ নিয়েছেন। গ্রাহকের মাত্র ১০ হাজার টাকার চেক ডিজঅনার হয়। মফস্বলের একটি অফিসের ভাড়ার ১১৪০/টাকার একটি চেকও ডিজঅনার হয়েছে বহু আগে।
ডায়মন্ড লাইফ ইনসিওরেন্স কোম্পানির প্রধান হিসাব কর্মকর্তা (সিএফও) মোঃ মামুন খাঁন গ্রাহকদের চেক ডিজঅনার হওয়ার কথা স্বীকার করে বলেন, মাঝে মধ্যে কোম্পানির ব্যাংক একাউন্টে অর্থ সংকট থাকে। তবে যেইসব গ্রাহক আমাদের সাথে যোগাযোগ করে, তাদের চেক আমরা পাশ করার ব্যবস্থা করি। তিনি বলেন, বীমা আইনে নেই, তবুও পরিস্থিতির কারনে গ্রাহকের দাবির টাকা ব্যাংকের পরিবর্তে ক্যাশে প্রদান করতে হচ্ছে। তবে কোম্পানির এ অবস্থা থাকবে না, অচিরেই এসবের সমাধান হয়ে যাবে।
কোম্পানিটির সেক্রেটারী মোঃ রফিকুজ্জামান রিপু বলেন, বীমা আইনে ৯০ দিনের মধ্যে মৃত্যুদাবি নিস্পত্তির বিধান আছে। কোম্পানিতে ওই বিভাগে কয়েকদফা লোক পরিবর্তনের কারনে এখানকার মৃত বীমা গ্রাহক আহাদা খাতুনের মৃত্যুদাবিটির তদন্তে দীর্ঘ কয়েকমাস দেরি হয়েছে। তবে সরাইলের গ্রাহকদের সকল সমস্যা আগামি ১৫ দিনের মধ্যে সমাধান করা হবে।
এ কোম্পানির ডিএমডি (উন্নয়ন) মোঃ হুমায়ন কবির স্বপন বলেন, এখানকার সমস্যার কথা ইতিমধ্যে কোম্পানির মালিকপক্ষ জেনেছেন। এসব সমস্যা দ্রুত সমাধান করতে তাঁরা নিদের্শও দিয়েছেন।